রাজধানীতে ছাদ থেকে নিচে পড়ে নারীর মৃত্যু

আগের সংবাদ

গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন

পরের সংবাদ

ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাচন : ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনী প্রচারণায় বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে ৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সেখানে এক উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি ও ত্রিমুখী সংঘর্ষ ঘটার আশঙ্কা দেখা দেয়। এ খবর পেয়ে ক্ষেতলাল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। গত বুধবার রাতে উপজেলার পাঠানপাড়া বাজারে এমন ঘটনার সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, আগামী ৮ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দুলাল মিয়া সরদার উপজেলার পাঠানপাড়া বাজারে নির্বাচনী ক্যাম্প উদ্বোধন করতে যান। এ সময় ক্যাম্প উদ্বোধন শেষে চেয়ারম্যান প্রার্থী দুলাল মিয়া সরদারের পক্ষে মামুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীম বক্তব্য রাখেন। বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তাকিম মণ্ডলের কর্মী আব্দুল বারিক মণ্ডল ও তার সমর্থকদের চিটার বাটপার বলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে মোস্তাকিম মণ্ডলের সমর্থক উপজেলার হোপ গ্রামের বাবলু এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যান প্রার্থী দুলাল মিয়া সরদারের সমর্থকেরা মারধর শুরু করেন বলে বাবলু জানান। এছাড়া এ সময় উপস্থিত অন্য চেয়ারম্যান প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তাইফুল ইসলাম তালুকদারের এক সমর্থক আব্দুল কুদ্দুসও মশিউর রহমান শামীমের বক্তব্যের সমালোচনা করলে তাকেও মারধর করা হয় বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। ফলে বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তাকিম মণ্ডল ও চেয়ারম্যান প্রার্থী তাইফুল ইসলাম তালুকদারের শতশত কর্মী-সমর্থক পাঠানপাড়া বাজারে জমা হতে থাকে। একপর্যায়ে তারা চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীমের ওপর হামলা করার চেষ্টা করে। এতে পাঠানপাড়া বাজারে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং ত্রিমুখী সংঘর্ষ ঘটার আশঙ্কা দেখা দেয়। তবে খবর পেয়ে ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন ও তদন্ত অফিসার পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে মামুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীমসহ ও দুলাল মিয়া সরদারের কর্মী-সমর্থক দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। খবর পেয়ে চেয়ারম্যান মোস্তাকিম মণ্ডল ও তাইফুল ইসলাম তালুকদার ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
মারধরের শিকার বাবলু বলেন, দুলাল হাজীর অফিস উদ্বোধনের সময় বক্তব্যে মশিউর চেয়ারম্যান বারিক চেয়ারম্যানকে চিটার বাটপার বলেন। তখন আমি বলি যে, তুমি কি ভোটের ডিলার হয়েছো? এ নিয়ে দুলালের লোকেরা আমাকে পাঞ্জা করে ধরে মেরেছে। মারধরের শিকার তাইফুল ইসলাম তালুকদারের সমর্থক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আমরা দোকানে বসে আছি একজন বলল তোর ভাইকে ধরেছে। আমি এসে শুধু বলেছি রাজনীতির বিষয়ে যে যাই বলুক, বাবলুক ধরা লাগবে কেন? এটা বলা মাত্রই আমাক মারতে শুরু করে। যারা মেরেছে তারা দুলাল হাজির লোক। চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান তাইফুল ইসলাম তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, সন্ত্রাসীর মতো তারা নির্বাচন করছে। এটা প্রশাসন না দেখলে তো ভীষণ সমস্যা।
প্রশাসনকে তো অবশ্যই দেখতে হবে। আমার ছেলেপেলেদের মারছে। ভুল হোক আর যেটাই হোক, তারা টেনে নিয়ে মেরেছে। সেটা বলাতেই অপরাধ হয়েছে। তাহলে আমার ছেলেপেলে থাকবে কীভাবে? আমি ওসি সাহেবের সঙ্গে বসব, দেখি তিনি কী করেন।
এ বিষয়ে মামুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীম মোবাইল ফোনে ভোরের কাগজকে বলেন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এক ভোট পেলেও পাশ করবে, এমন কথার পরিপ্রেক্ষিতে বক্তব্যে বলেছি, এক ভোট পেলেই পাস কিনা তা ৮ তারিখে বুঝতে পারবে। এই সময় এক ব্যক্তি উল্টোপাল্টা কথা বললে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। কাউকে মারধর করা হয়নি বা মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী দুলাল মিয়া সরদার জানান, আমরা মিটিং করছিলাম। মিটিং চলাকালীন ওরা মিটিংয়ের মধ্যে এসে বলে এই তোরা কি ভোটের এজেন্ট হয়েছ? তাহলে আমার লোকজন যদি ওখানে ক্ষেপে গিয়ে মারামারি করত তাহলে কী হতো? আমি তখন তো সব লোকজনকে ডেকে নিয়ে বলেছি এইদিকে এসো, ওই লোক যা বলেছে বলুক। কিন্তু বলাতো যাবে না। আমি আজকে বক্তব্য দিয়ে আসলাম। কাল আরেকজন দিবে। কিন্তু কাউন্টারতো দেয়া যাবে না।
ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, সেখানে হাতাহাতি বা কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি। মামুদপুর ইউপি চেয়রাম্যান মশিউর রহমান শামীম মোস্তাকিম চেয়ারম্যানের লোকজনকে কটাক্ষ করে কথা বলে। এ নিয়ে মোস্তাকিম চেয়ারম্যানের লোকজন উত্তেজিত হয়। খবর পেয়ে আমি তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়