গ্রামীণ ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা : অর্থ আত্মসাৎ

আগের সংবাদ

মন্ত্রী-এমপির হস্তক্ষেপে লাগাম

পরের সংবাদ

চকরিয়ায় মেম্বার প্রার্থীসহ দুই ব্যক্তিকে হত্যা : এলাকায় উত্তেজনা, কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মিজবাউল হক, চকরিয়া (কক্সবাজার) থেকে : চকরিয়ায় ইউপি নির্বাচনের বিরোধকে কেন্দ্র করে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে মেম্বার প্রার্থী মোহাম্মদ সেলিমকে (৩৮) গুলি ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। হত্যার ঘটনার এক দিন পার হলেও গতকাল বুধবার সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, অপরাধীদের এখনো গ্রেপ্তার না করায় এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতে দেখে ফুঁসছে এলাকাবাসী। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। প্রকাশ্যে দুজন মানুষকে হত্যা করার ঘটনা মেনে নিতে পারছেন না কেউ। যত দ্রুত সম্ভব হত্যাকাণ্ডের মূলহোতাদের পুলিশ গ্রেপ্তার করবে বলে এলাকাবাসী আশা করছেন।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, হত্যাকাণ্ড ঘটার পর পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এখন দুজনের মৃত্যুর ঘটনায় খুনিদের ধরার জন্য পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। আমরা আশা করছি যতদূর সম্ভব অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের মানিকপুর উত্তরপাড়া স্টেশনে হামলায় দুজন মারা যান। নিহত মোহাম্মদ সেলিম সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে এবং শফিউল আলম একই এলাকার মৃত আবু ছালাম সওদাগরের ছেলে। সেলিমের বৃদ্ধ বাবা নুর মোহাম্মদ (৭৫) জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে চৌকিদার শফিউল আলম কথা আছে বলে বাড়ি থেকে আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে যায়। এ সময় তারা উত্তরপাড়া স্টেশনে একটি চায়ের দোকানে বসে গল্প করছিল। সে সময় একাধিক মামলার আসামি জাহেদুল ইসলাম সিকদার ওরফে জাহেদ মেম্বার অতর্কিত আমার ছেলেকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় আমার ছেলের। ঘটনার সময় কুপিয়ে জখম করা হয় সেলিমের পাশে বসা চৌকিদার শফিউল আলমকেও। নিহত শফিউল আলমের ছোট ভাই নুরুল আলম জানান, সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের উত্তরপাড়া স্টেশনে রাত ৮টার দিকে তার ভাই শফিউল আলম ও মোহাম্মদ সেলিম একটি চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন। তখন অতর্কিত স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহেদ সিকদার ও তার ভাগিনা বাবুর নেতৃত্বে ৭-৮ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী দোকানে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। সেলিম ঘটনাস্থলে মারা যান। গুরুতর আহত তার ভাই শফিউল আলমকে চকরিয়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান তিনি। নিহত সেলিমের স্ত্রী শফিকা খানম জানান, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মানিকপুর ১ নম্বর ওয়ার্ডে তার স্বামী সেলিম ও বর্তমান মেম্বার জাহেদ সিকদার প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচনে তার স্বামী অল্প ভোটে পরাজিত হলেও সে সময় থেকেই প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিলেন জাহেদ সিকদার। হুমকি দেয়ায় খুব একটা বাড়ি থেকে বের হতেন না তার স্বামী। শফি চৌকিদার মোবাইলে কল দিয়ে ডেকে নিয়ে যান। এরপর কুপিয়ে হত্যা করে। গুলি চালিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন বলেও জানান তিনি। এদিকে আলোচিত জোড়া হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টা পর পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। হত্যার মূলহোতা ইউপি সদস্য জাহেদ সিকদার ও তার ভাগিনা বাবুকে গ্রেপ্তারে পুলিশের তৎপরতাও দেখা যাচ্ছে না। পুলিশের তৎপরতা নিয়েও দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। প্রকাশ্যে মানুষের সামনে ইউপি সদস্য জাহেদ সিকদারের নেতৃত্বে দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করলেও তাকে গ্রেপ্তার না করায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিহতদের পরিবারের মধ্যেও দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। সুরাজপুর-মানিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক জানান, তার ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে দুজনকে জখম করেছে। ঘটনাস্থলে মোহাম্মদ সেলিম মারা যান, অপরজন শফিউল আলম প্রকাশ শফি চৌকিদারকে আহত অবস্থায় চমেকে নেয়ার পথে মারা যান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়