বেড়ানোর বাহানায় ইয়াবা পাচার, গ্রেপ্তার দুই

আগের সংবাদ

মহাসড়ক যেন মরণফাঁদ

পরের সংবাদ

বন্দরনগরীতে গরমে অতীষ্ঠ জনজীবন

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১৭, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : গ্রীষ্মকাল শুরু হতে না হতেই প্রখর রোদের তাপ ও গরমে অতীষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। আর এই গরমের সঙ্গে নগরজীবনে প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক লোডশেডিংয়ের কারণে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ। বাইরেতো বটেই ঘরে টেকাও দায় হয়ে পড়েছে। অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকেই, বিশেষ করে শিশু ও বয়ষ্করা। শ্রমজীবী মানুষ পড়েছে চরম বেকায়দায়। কাজ না করলে পেট চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে এই তীব্র গরমে বৃষ্টির কোনো সুখবর আপাতত দিতে পারছে না আবহাওয়া অফিস।
গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু বাতাসে অতিরিক্ত আদ্রতা থাকায় এ গরম আরো বেশি অনুভূত হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলেও অধিকাংশ পুকুর ও জলাশয়ের পানি শুকিয়ে গেছে। সাধারণ টিউবওয়েলে পানি উঠছে না অনেক জায়গাতেই। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে- ভূগর্ভস্থ পানির অত্যধিক ব্যবহারের ফলে পনির স্তর নিচে নেমে গেছে। অনেক ক্ষেত্রেই গভীর নলকূপের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থা শুধু যে গ্রামাঞ্চলে তা কিন্তু নয়। নগরীতেও এই সংকট আরো তীব্র। ওয়াসা নগরবাসীর চাহিদা অনুযায়ী সুপেয় পানি সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে নগরীর বেশ কিছু জায়গায় অনেকে বাধ্য হয়ে গভীর নলকূপ ব্যবহার করছে। কিন্তু তাতেও আয়রণসহ নোনা পানি পাওয়া যাচ্ছে বিশেষ করে কর্ণফুলী নদী তীরবর্তী ও বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী অঞ্চলে।
বিশেষ করে বস্তিবাসীর জন্য আরো বেশি সংকট দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ-পানির। যাদের সামর্থ্য আছে তারা ঘরে-অফিসে আইপিএস ব্যবহার করছেন ঠিকই, কিন্তু ঘন ঘন লোডশেডিং ও দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ না থাকায় সেই আইপিএসও আর বেশিক্ষণ বিদ্যুতের যোগান দিতে পারছে না। এ অবস্থায় বৃষ্টির জন্য হাসফাস করছে মানুষ।
রিকশা চালিয়ে জীবন নির্বাহ করা মতিন বললেন, সেই সকালে বের হয়ে প্রখর রৌদ্রের তাপে বেশিক্ষণ আর রিকশা চালাতে পারি না। বৃষ্টিটা যদি হতো একটু তাহলে হয়তো কমতো কিছুটা এই গরম। ঈদ-পহেলা বৈশাখের ছুটি কাটিয়ে নগরে ফেরা মানুষজন আবারো নাগরিক জীবনে এসে তীব্র গরমে অতীষ্ঠ হয়ে উঠছেন।
এই তীব্র গরমে ঘেমে অনেকেরই আবার নানা ধরনের সর্দি-কাশি-জ্বর-শ্বাসকষ্ট দেখা দিচ্ছে। আবার ডায়রিয়াসহ নানা ধরনের পেটের পীড়ায় ভুগছে মানুষ। চিকিৎসকরা এ অবস্থায় ওরস্যালাইন খাওয়াসহ ঘন ঘন বিশুদ্ধ পানি পান করার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে অতিরিক্ত গরমে ঠাণ্ডা পানি পান না করারও পরামর্শ তাদের।
শুধু যে মানুষেরই কষ্ট বাড়ছে তা কিন্তু নয়, অতিরিক্ত তাপমাত্রায় প্রাণ ওষ্ঠাগত চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার প্রাণিকূলের। খাঁচার ভেতরে থাকা জলাধারে শরীর ডুবিয়ে কিংবা মুখ ডুবিয়ে গরম থেকে রেহাই পাওয়ার চেষ্টা করছে প্রাণিগুলো।
চিড়িয়াখানার কর্মচারীরা জানান, অতিরিক্ত গরমে মাংসাশী ও নানা প্রজাতির পাখির বেশি সমস্যা হয়। এ জন্য সবসময় দেখভাল করা হচ্ছে। নিয়মিতভাবে চিকিৎসাও দেয়া হচ্ছে ভেটেরিনারি চিকিৎসকের মাধ্যমে। পানির সঙ্গে খাবার স্যালাইনও দেয়া হচ্ছে। এদিকে তীব্র গরমে রাস্তার পাশে শরবতের পসরা নিয়ে বসেছে অনেকে। তীব্র গরমে তৃষ্ণা মেটাতে ঠাণ্ডা শরবত পান করছেন অনেক পথচারী।
এদিকে, পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এমন তীব্র গরম আরো দুয়েক দিন থাকবে। এরপর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির পরিমাণ বাড়লে তাপমাত্রা কমে যাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়