কাগজ প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি প্রকাশ্যে উপজেলা নির্বাচনের বিরোধিতা করলেও আমাদের জানামতে তাদের অনেকেই অংশ নেবেন। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির আন্দোলনের কৌশল পরিবর্তন, নির্বাচনী মাঠে এমপি-মন্ত্রীদের হস্তক্ষেপ না করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও গাজায় ইসরায়েলের হামলা নিয়েও কথা বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, বিএনপি আন্দোলন থেকে গণঅভ্যুত্থানে গেল, গণঅভ্যুত্থান থেকে লিফলেট বিতরণে এলো, তাদের এ গণআন্দোলন অন্তঃসারশূন্য।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ৮ মে প্রথম দফার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব বিস্তার না করতে। নির্বাচন যেন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে হয় সেজন্য কেউ কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। নির্বাচন কমিশন নির্বিঘেœ ভোট দানের ব্যবস্থা করেছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ‘হিটলারের চেয়েও ভয়ংকর রূপে আবির্ভূত হয়েছে’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজ সারা বিশ্বই রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। মনে হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারের যে দাম্ভিকতা, যুদ্ধংদেহী মনোভাব ছিল সেটা আবারো নতুন করে বিশ্ব রাজনীতিতে দেখতে পাচ্ছি। হিটলার যে হলোকাস্ট ঘটিয়েছিল ৬০ লাখ ইহুদি হত্যা করে, আজ সেই একইরূপে আবির্ভূত হয়েছে গাজায় গণহত্যার নায়ক ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। এই নেতানিয়াহু জাতিসংঘকে মানে না, হোয়াইট হাউসকে তোয়াক্কা করে না। আমেরিকান প্রেসিডেন্টের কথা শোনে না। সে হিটলারের চেয়েও ভয়ংকর রূপে আবির্ভূত হয়েছে। ১৪ হাজার শিশুকে গাজায় এরই মধ্যে হত্যা করে ফেলছে।
তিনি বলেন, ইরানের আক্রমণের পর যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলো ইসরায়েলকে শান্ত থাকার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু নেতানিয়াহু আবারো ইরানে আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে মনে হয় বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে শক্তিধর ব্যক্তি হচ্ছেন নেতানিয়াহু। আপন ইচ্ছায় চলেন, যা খুশি করেন। যাকে ইচ্ছা তাকে মারেনও। ভাতে মারেন, পানিতে মারেন, এয়ার স্ট্রাইক করে মারেন। এটা পৃথিবীর ভয়ংকর চিত্র। তার দাপট মনে হয় হিটলারকেও ছাড়িয়ে যাবে।
বাংলাদেশ গণতন্ত্র সূচকে পিছিয়েছে বলে সম্প্রতি দাবি করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি রাষ্ট্রদূতকে বলব, আপনার দেশ গণতন্ত্র সূচকে কত ধাপ পিছিয়েছে?

পণ্যের দাম সহনীয় অবস্থায় রাখতে প্রধানমন্ত্রী ‘বিরল এফোর্ট’ দিয়েছেন মন্তব্য করে কাদের বলেন, ঈদে অর্থপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ার কারণে আমাদের অর্থনীতি কিছুটা চাঙা হয়েছে। অর্থ লেনদেনের যে গতিময়তা, তা আমাদের অর্থনীতিতে একটা গতিশীলতা নিয়ে এসেছে। সেই সুফল পাচ্ছে দেশের মানুষ। ব্যাংকিং খাতে লেনদেন বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রীর যে প্রয়াস তা বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগ পার্টি হিসেবে আমরা তার নির্দেশনা মেনে চলব। এবার ঈদ পালন শেষে মোটামুটি স্বস্তিতে মানুষ কর্মস্থলে ফিরতে পারছেন বলেও জানান তিনি।