কবিতাসমগ্র

আগের সংবাদ

অন্তর্দ্বন্দ্ব ঠেকাতে কঠোর বার্তা

পরের সংবাদ

ঈদের দুদিনে নিহত ৩ : ২৪৮ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত ১৫৮

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৬, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১৬, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ধকাগজ প্রতিবেদক : ঈদুল ফিতরের টানা ছুটিতে ফাঁকা রাস্তায় মোটরসাইকেল চালকরা ছিলেন বেপরোয়া। ট্রাফিক আইনের তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতো রাস্তায় নেমে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন অনেক তরুণ। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) ও পঙ্গু হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সড়ক দুর্ঘটনার ভয়াবহতার চিত্র।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, ঈদের ছুটিতে বন্ধ থাকায় রাস্তাঘাট এমনিতেই ফাঁকা হয়ে যায়। এই সুযোগে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে তারা এই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন বলে স্বজনদের কাছ থেকে জানা গেছে।
বুধবার রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ১৭২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহতদের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হলে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। ৮২ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। এরই মধ্যে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আরো অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, গুলশান, ডেমরা ও নরসিংদীতে দুর্ঘটনায় নারীসহ ৩ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আহত ৭৬ জন পঙ্গু হাসপাতালে : মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়ে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতাল বা নিটোরে ভর্তি হয়েছেন ৭৬ জন। তাদের মধ্যে অনেকেই স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ঢাকার নবাবগঞ্জ থেকে দুর্ঘটনায় আহত হয়ে নিটোরের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন মো. ফাহাদ (২০) নামে এক তরুণ। এ সময় তার মা জিলোয়ারা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ছেলে সকালে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়েছিল। পরে শুনতে পারি সে এক্সিডেন্ট করেছে। তার এক পা ভেঙে গেছে।
হাসপাতালের ইমার্জেন্সি ও ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার সুজিত কুমার বৈদ্য বলেন, ঈদের দিন নিটোরে ২৫৬ জন চিকিৎসা নিতে এসেছেন। এদের মধ্যে ৭৬ জনই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার। যাদের বেশির ভাগের বয়স ১৫ থেকে ৩০ এর মধ্যে। তিনি বলেন, শুক্রবার দুপুর ২টা পর্যন্ত প্রায় দেড়শ রোগী এসেছেন। তাদের বড় একটি সংখ্যা মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার। গুরুতর আহত বেশ কয়েকজনের হাত, পা কেটে ফেলে দিতে হয়েছে। ডা. সুজিত আরো বলেন, আহত রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, তারা ঈদের সময় ফাঁকা সড়কে অতিরিক্ত গতিতে মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে আহত হয়েছেন।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, ঈদের ছুটিতে হাসপাতালের বহির্বিভাগ ছাড়া সব বিভাগ খোলা ছিল। এ সময় হাসপাতালে দুর্ঘটনায় আহত রোগী বেশি আসে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ২৫০ জনের বেশি রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। শুক্রবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সময়ে প্রায় ২শ রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতদের বড় একটা সংখ্যা হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগী।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি ও ক্যাজুয়ালিটি সার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, প্রতি বছর ঈদের ছুটিতে হাসপাতালে আসা রোগীদের মধ্যে দুর্ঘটনায় শিকারের সংখ্যা বেশি থাকে। আর এদের বেশিরভাগ তরুণ। চিকিৎসক হিসেবে আমরা সর্বোচ্চটা দেয়ার চেষ্টা করি। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, তরুণদের হাতে অভিভাবকরা কেন মোটরসাইকেল তুলে দেন? এরা মাথায় ঠিকমতো হেলমেট পর্যন্ত পরে না।
ঈদের ছুটিতে ঢাকার রাস্তায় দায়িত্বপালনকারী একাধিক ট্রাফিক পুলিশ সার্জেন্ট বলেন, ফাঁকা সড়কে অল্প বয়সি তরুণরা কোনো ধরনের আইন-কানুন মানতে চান না। হেলমেট ছাড়া বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে তারা আহত হন। পরে তাদের বাঁচাতে হাসপাতালে পাঠাতে হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়