সাবের হোসেন চৌধুরী : বনের জমি দখলে সরকারি প্রতিষ্ঠানকেও ছাড় নয়, বন কর্মকর্তার খুনিদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে

আগের সংবাদ

সর্বাত্মক অভিযানে যৌথবাহিনী

পরের সংবাদ

প্রতিদিন গণইফতারের আয়োজন : প্রশংসায় ভাসছেন সিলেটের মাহি সেলিম

প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৫, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

খালেদ আহমদ, সিলেট থেকে : সিলেট নগরীর রিকাবীবাজারস্থ জেলা স্টেডিয়ামের মোহাম্মদ আলী জিমনেসিয়াম। এখানে রমজান মাস শুরুর দিন থেকেই সন্ধ্যা হলে ইফতারের জন্য ঢল নামে হাজারো মানুষের। প্রথম দিকে মাইকিং করে এসব মানুষকে জড়ো করা হলেও এখন জানা হয়ে গেছে সবার। তাই ইফতারের আগেভাগেই পুরো জিমনেসিয়াম লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। শ্রমজীবী, পথিক, নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য পুরো রমজান মাসজুড়েই ইফতারের এমন আয়োজন করে যাচ্ছেন সিলেটের স্বনামধন্য ব্যবসায়ী ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম।
গত বছর থেকে কর্মজীবী মানুষের জন্য এমন মানবিক কাজ শুরু হলেও এবার এখানে ইফতার করতে আসছেন ধনী-গরিব সবাই। সরকারের উচ্চ মহল থেকে শুরু করে, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতাকর্মী, সাংবাদিক- সবাই শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে গণইফতারে শরিক হচ্ছেন। এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন সিলেটের মানুষ। প্রশংসায় ভাসছেন ইফতারের আয়োজক সিলেটের বিশিষ্ট ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম। ‘মাহা’ নামে মাহি উদ্দিন আহমদের একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আছে। সেখানে কাপড়, প্রসাধনসামগ্রী ও সুগন্ধি বিক্রি হয়। কাতারেও তার সুগন্ধির তিনটি প্রতিষ্ঠান আছে। সিলেটের সেরা রেমিট্যান্সধারী হিসেবে তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে ২০২১ সালে সিআইপির (বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) মর্যাদা পান। তিনি প্রতি মাসে শিক্ষাবৃত্তি ও খেলাধুলার আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতাসহ অসহায়দের আর্থিক সহযোগিতাও দেন।
সিলেটে এই গণইফতারে ব্যাপক সাড়াও পড়েছে। গণইফতারে প্রতিদিনই বাড়ছে শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা। প্রতিদিন সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের মোহাম্মদ আলী জিমনেসিয়ামে এক সঙ্গে ইফতার সারেন প্রায় সহ¯্রাধিক রোজাদার। পুরো রমজান মাসজুড়েই এ ইফতার কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন মাহি উদ্দিন সেলিম। এ আয়োজনে প্রতিদিন ধনী-গরিব এক কাতারে বসে ইফতার করেন। গরুর গোশতের আখনির সঙ্গে থাকে বিশুদ্ধ পানি, পেঁয়াজু, ছোলা ও খেজুর। জিমনেশিয়ামের ভেতর বিশাল জায়গাজুড়ে পাতলা মাদুরের ওপর বসেই ইফতার করেন রোজাদাররা। গণইফতারে অংশ নেয়া কলেজছাত্র রুমান জানান, তিনি আরেক দিন এখানে এসেছিলেন। ইফতারের মান যথেষ্ট ভালো। মাঝেমধ্যেই আসেন। একাধিক পথচারী ও রিকশাচালক জানান, তারা মাইকে ডাক শুনে ইফতার করতে এসেছেন। স্থানীয় অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকেও গণইফতারে অংশ নিতে দেখা গেছে। রোজায় প্রতিদিনের এ আয়োজনে রান্নার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন পাঁচ ব্যক্তি। ইফতার শুরুর এক ঘণ্টা আগে প্যাকেট করার কাজ শুরু হয়। মাদুরের ওপর সারিবদ্ধভাবে বসা লোকজনের হাতে ইফতারি তুলে দেন তারা। আজানের আগেই কাজটি শেষ করতে হয়। এত বিশাল আয়োজনে নেই কোনো আনুষ্ঠানিকতা। যারা আসছেন, তারাই ইফতার করছেন। শুধু কি ইফতার! অসচ্ছল ও নি¤œ আয়ের মানুষের মধ্যে নিত্যপণ্যের বিশেষ স্লিপও বিতরণ করেন মাহি উদ্দিন। ১৬ হাজার ৪ টাকা ও ৯ হাজার ৯০ টাকা মূল্যের দুই ধরনের স্লিপ আছে। এসব স্লিপ দেখিয়ে সিলেট নগরের নির্দিষ্ট কিছু দোকান থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সংগ্রহ করতে পারেন তারা।
ইফতার কর্মসূচিতে শরিক হওয়া সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দিকী এনডিসি এমন উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক শ্রমজীবী মানুষ পেটপুরে ইফতার সারতে পারছে- এটা দেখে খুবই ভালো লাগছে। এমন উদ্যোগ নেয়ায় তিনি মাহি উদ্দিন সেলিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম বলেন, মুসলিম দেশগুলোতে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে বড় পরিসরে আয়োজন করা হয় ইফতারের। এ থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে গত বছর থেকে তিনি গণইফতার কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমি আজীবন মানুষের সেবা করে যেতে চাই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়