মনপুরা (ভোলা) প্রতিনিধি : মনপুরায় ২ মৎস্য কর্মকর্তাকে গণধোলাই দিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। অভিযোগ রয়েছে ওই দুই কর্মকর্তা মেঘনা নদীতে অভিযানের নামে চাঁদাবাজি করছিলেন। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় দুই মৎস্য কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে মনপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করায়। এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র মনপুরা থানায় শ্লীলতাহানীর চেষ্টা ও মারধরের অভিযোগ করেছেন এক বিধবা নারী। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নের লঞ্চঘাট সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
জেলেদের অভিযোগ, অনেক দিন ধরে উপজেলা মৎস্য অফিসের মেরিন ফিসারিজ কর্মকর্তা মাহামুদুল হাসান ও ক্ষেত্র সহকারী মনির হোসেন মেঘনায় অভিযানের নামে জেলেদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে আসছিলেন। জেলেরা নিয়মিত চাঁদা দিলেও মাঝেমধ্যে তাদের জাল পুড়িয়ে দিতেন অভিযুক্ত মৎস্য কর্মকর্তারা। এতে দিন-দিন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে জেলেরা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ফের অভিযানে গিয়ে মনপুরা ইউনিয়নের জেলেদের কাছে চাঁদা আদায়ের জন্য ট্রলারযোগে ধাওয়া করেন তারা। ধাওয়া খেয়ে জেলেরা নদীতীরবর্তী এক বিধবা নারীর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন। এ সময় দুই মৎস্য কর্মকর্তা বিধবা নারীর ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকতে চাইলে তিনি বাধা দেন। এরপর ওই কর্মকর্তারা জেলেসহ ওই নারীকে মারধর করেন বলে অভিযোগে জানা গেছে। পরে জেলেদের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এসে ক্ষুব্ধ হয়ে দুই মৎস্য কর্মকর্তাকে গণধোলাই দেয়। পুলিশ খবর পেয়ে আহত দুই কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে মনপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিৎিসা করায়।
উপজেলা মৎস্য অফিসের মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা মো. মাহামুদুল হাসান বলেন, অবরোধকালীন নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। মেঘনা নদীতে পেতে রাখা জালের কাছে গেলে জেলেরা স্পিডবোটযোগে এসে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমি ও আমার সহকর্মী, ক্ষেত্রসহকারী মনির হোসেন গুরুতর আহত হই। পরে থানা থেকে পুলিশ গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এ ব্যাপারে মনপুরা থানায় অভিযোগ করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে বিধবা নারী মনপুরা থানায় দুই মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা ও মারধরের অভিযোগ করেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্তি দায়িত্ব) মারুফ হোসেন মিনার বলেন, অনুমতিসাপেক্ষে আমাদের মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা ও ক্ষেত্রসহকারী অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় জেলেরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে দুজন গুরুতর আহত হয়। এ ব্যাপারে উপর মহলের পরামর্শক্রমে থানায় অভিযোগ দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
মনপুরা থানার ওসি মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নের জেলেদের সঙ্গে মৎস্য কর্মকর্তাদের মারামারি ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক বিধবা নারী থানায় এসে অভিযোগ করেছেন। এছাড়া মৎস্য অফিসের পক্ষ থেকেও অভিযোগের প্রক্রিয়া চলছে। অভিযোগ পর্যালোচনা করে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।