মার্চের স্মৃতি

আগের সংবাদ

দুর্ঘটনারোধে নেই কার্যকর ব্যবস্থা : এসি রুমে বসে দুর্ঘটনা দেখেন কর্মকর্তারা > আলোর মুখ দেখে না তদন্ত প্রতিবেদন

পরের সংবাদ

জাহাজে সুপেয় পানি সংকট, ত্বকে এলার্জি সমস্যা নাবিকদের : জিম্মিদের মুক্তির আলোচনা এগোয়নি

প্রকাশিত: মার্চ ২৭, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৭, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’তে বিমান বিধ্বংসী কামান বসিয়েছে জলদস্যুরা। যদিও বাংলাদেশ সরকার ও জাহাজ মালিকপক্ষ কমান্ডো অপারেশনের বিপক্ষে অবস্থান নেয়ায় ইউরোপ ও ভারতের যুদ্ধজাহাজগুলো নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখছে। ফলে, নাবিকদের ব্রিজে রাখার বিষয়ে নমনীয় হয়েছে দস্যুরা। তবে জিম্মি জাহাজে সুপেয় পানির মজুত কমে আসায় বিভিন্ন কাজে সমুদ্রের পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে নাবিকদের। এতে জাহাজের নাবিকদের অনেকেরই ত্বকে এলার্জির সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলে জানা গেছে। এদিকে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও জিম্মি জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারে এখনো কোনো দিক থেকেই বিশ্বাসযোগ্য কোনো বার্তা আসেনি বলে জানিয়েছে জাহাজের মালিকপক্ষ। সংকট উত্তরণে জলদস্যুদের সঙ্গে তাদের কার্যকর কোনো আলাপ এখনো হয়নি। তবে, নাবিকরা তাদের পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করতে পারছেন বলে জানিয়েছেন জাহাজ মালিক কর্তৃপক্ষ।
জিম্মি হওয়ার পর থেকে নাবিকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছেন সমুদ্রগামী বাণিজ্যিক জাহাজের ক্যাপ্টেন আতিক ইউ এ খান। তিনি জানান, ইউরোপ ও ভারতের যুদ্ধজাহাজগুলো নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখছে। ফলে, নাবিকদের ব্রিজে রাখার বিষয়ে নমনীয় হয়েছে দস্যুরা। তবে সপ্তাহে দুবার করে সুপেয় পানি দেয়া হচ্ছে। তাও সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা করে। জাহাজে বিমান বিধ্বংসী কামান বসানোর সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ও জাহাজ মালিক কমান্ডো অপারেশনের বিপক্ষে অবস্থান নেয়ায় ইউরোপ-ভারতের যুদ্ধজাহাজগুলো আপাতত এমভি আবদুল্লাহ থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখছে। দিনে হয়তো এক-দুইবার হেলিকপ্টার এসে রাউন্ড দিয়ে যায়, এতটুকুই। জাহাজে জলদস্যুরা স¤প্রতি একটা বিমান বিধ্বংসী কামান বসিয়েছে, তথ্যটা ঠিক। নেভি যুদ্ধজাহাজ দূরত্ব বজায় রাখায় নাবিকদের আর ২৪ ঘণ্টা ব্রিজে থাকা বাধ্যতামূলক না। ওদের নির্দেশনা অনুযায়ী একোমোডেশনে যাওয়ার অনুমতি পাচ্ছে। জাহাজে শুধুই জরুরি রুটিন কাজগুলো করার সুযোগ পাচ্ছেন নাবিকরা, বিশেষ করে ইঞ্জিন রুমে। কার্গো হোল্ডের কয়লার পরিবেশ নিরাপদ আছে।’
তিনি বলেন, ‘নাবিকদের খাবার আর পানির রেশনিং চলছে যেন এই মজুতে বেশি দিন যায়। অনেকের ত্বকে এলার্জি দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘স্বাদু পানির লাইন চালু হচ্ছে সপ্তাহে মাত্র দুবার, তাও মাত্র একঘণ্টা করে। এই পুরো সপ্তাহে দুই ঘণ্টার মধ্যেই গোসল আর কাপড় ধুয়ে নিতে হয়। বাকি ১৬৬ ঘণ্টা ম্যানেজ করতে হয় সমুদ্রের নোনা পানির সাপ্লাই দিয়ে। এজন্য অনেকেরই ত্বকের এলার্জি দেখা দিয়েছে।’ তিনি জানান, ‘স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহারে অনুমতি দিচ্ছে জলদস্যুরা। গত শুক্রবার ছিল সেইদিন। জাহাজে আনুমানিক ২৫ জন জলদস্যু আছে। স্থানীয়ভাবে ওদের খাবার সাপ্লাই আসে। কখনো দেরি হলে জাহাজ হতে নেয়া হয়।’
এদিকে, এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাই হওয়ার ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও জাহাজটি এবং এর জিম্মি ২৩ নাবিকের মুক্তির বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। সর্বশেষ ২০ মার্চ জলদস্যুরা যোগাযোগ করেছিল। এরপর আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। জিম্মি নাবিকদের পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া এডভাইজার মিজানুল ইসলাম বলেন, জিম্মি নাবিকদের সঙ্গে তাদের পরিবারের নিয়মিত বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ হচ্ছে। নাবিকেরা সুস্থ ও নিরাপদে আছেন। আমরাও প্রতিদিন নাবিকদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছি। জলদস্যুদের সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত গত ১২ মার্চ সোমালিয়ান জলদস্যুরা বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টার দিকে ভারত মহাসাগরে ‘এমভি আবদুল্লাহ’ নামের ওই কয়লাবাহী জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং ২৩ নাবিককে জিম্মি করে। আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে জাহাজটি জলদস্যুর কবলে পড়ে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়