জবির নতুন প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন

আগের সংবাদ

শেখ হাসিনার ইউরোপ জয় : মিউনিখ সফর > সরকার প্রধানদের অভিনন্দনে সিক্ত > শেখ হাসিনাকে ঘিরেই সবার আগ্রহ > বক্তব্যে যুদ্ধবিরোধী বার্তা প্রসংশিত

পরের সংবাদ

সরফরাজের বাবার কান্না জয়ের গল্প

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সরফরাজ খান নামটি কিছুদিন ধরেই উচ্চারিত হচ্ছিল ভারতীয় ক্রিকেটে। দীর্ঘদিন ধরে রান করছিলেন ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে। যে সে রান নয়, ৪৫ ম্যাচে তার গড় রান ছিল ৬৯ দশমিক ৮৫! বিশ্ব ঘরোয়া ক্রিকেটে গড়ের দিক থেকে চতুর্থ- যেখানে প্রথমে আছেন স্যার ডন ব্র্যাডম্যান!
তবে দিনের পর দিন রান করলেও খুলছিল না জাতীয় দলের দরজা। ২০১৪ সালে ঘরোয়া ক্রিকেটে অভিষেকের পর জাতীয় দলে ঢোকার জন্য অপেক্ষা করছিলেন ১০ বছর ধরে। খেলেছেন দুটি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ। ম্যাচের পর ম্যাচ রান করেও যখন কিছু হচ্ছিল না তখন নির্বাচকদের প্রতি জানিয়েছিলেন ক্ষোভ। তার হয়ে কথা বলেছিলেন সুনীল গাভাস্কারও।
অবশেষে ইংল্যান্ড সিরিজে সুযোগ আসে জাতীয় দলে খেলার। তবে দ্বিতীয় টেস্টেও তাকে একাদশে না রাখায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা আসে ভক্ত-সমর্থকদের পক্ষ থেকে। তবে বেশি দিন আশাহত হয়ে থাকতে হয়নি ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের। কারণ এর পরের গল্পটা দীর্ঘদিন সংগ্রামের পর সফল হওয়া ছেলে ও তার অশ্রæসিক্ত বাবার।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় টেস্টের সকালে আসে বহুল কাক্সিক্ষত সেই দিন। সরফরাজ খানকে টেস্ট ক্যাপ পরিয়ে দেন কিংবদন্তি অনীল কুম্বলে। সরফরাজ খান পরে সেই ক্যাপ দেন বাবা নওশাদ খানকে। চোখের জলে সেই ক্যাপকে চুমু খান তিনি। যেই দৃশ্য নাড়া দিয়েছে লাখো ক্রিকেট ভক্তকে।
ছেলের অভিষেকের পর বাবার এরকম আবেগতাড়িত হওয়ার পেছনে রয়েছে যথেষ্ট কারণ। বাবা নওশাদ খানই ছিলেন সরফরাজ খানের প্রথম কোচ। ছেলেকে নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে তাকে। মুম্বাইয়ের বস্তি থেকে লড়াইটা শুরু হয় তার। ট্রেনে ট্রেনে বিক্রি করেছেন শসা ও লজেন্স। পরিবারের মুখে খাবার তুলে দেয়ার জন্য বিক্রি করেছেন প্যান্টও। এর ফাঁকে ফাঁকেই ছেলেকে শিখিয়েছেন ক্রিকেট।
রাজকোটে বসে ছেলের ইনিংস দেখার পর নওশাদ বলেছেন, ‘আমরা বস্তি থেকে উঠে এসেছি। বাথরুম করার জন্য লাইনে দাঁড়াতে হত। ওই লাইনে দাঁড়ানোর সময় অনেকবার আমার ছেলেদের চড় খেতে হয়েছে, লোকে ওদের টপকে বাথরুমে ঢুকে গিয়েছে। শূন্য থেকে শুরু করেছিলাম আমরা। আবার সেখানেই ফিরে যাব। একদিন সরফরাজ আমাকে বলেছিল, বাবা ভারতের হয়ে খেলতে না পারলে আক্ষেপ করব না! আবার লোকাল ট্রেনে ট্র্যাক প্যান্ট বিক্রি করব।’
সরফরাজ খানদের কষ্টের দিন শেষ হয়েছে। ভারতের হয়ে ব্যাট করতে নেমে খেলেছেন ৬৬ বলে ৬২ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল তার। তবে রবীন্দ্র জাদেজার ভুল কলে রান আউট হন তিনি। পরে এজন্য সরফরাজের কাছে দুঃখ প্রকাশও করেন জাদেজা।
দ্বিতীয় ইনিংসেও খেলেছেন দুর্দান্ত। এবারো তৈরি হয়েছিল সেঞ্চুরির সম্ভাবনা। ভারত ইনিংস ঘোষণা না করলে হয়তো পেয়েও যেতেন। তবে ৬৮ রানে অপরাজিত থেকেই নিজের অভিষেক টেস্টে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে সরফরাজকে।
:: আবু রুহাব তাহবিব

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়