বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : বাউফলে প্রায় এক যুগ আগে মারা যাওয়া ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে আবেদন করে পল্লী বিদ্যুতের মিটার পরিবর্তন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে অবৈধভাবে মিটার সংযোগ লাগিয়ে ওই ঘর দখল করে নেয়া হয়েছে। এমন ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাউফল জোনাল অফিসের আওতাধীন বাউফল পৌরসভার বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় সড়ক এলাকায়। এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্তৃপক্ষের কাছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা তাদের ঘরে অবৈধভাবে অন্য ব্যক্তির নামে দেয়া মিটারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে পুরনো নামে মিটার স্থাপনের আবেদন করেছেন। কিন্তু বাউফলের পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ দেই-দিচ্ছি বলে এক বছর ধরে হয়রানি করে যাচ্ছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাউফল জোনাল অফিস ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাউফল পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় সড়ক এলাকায় যশোদা দেবনাথের পাকা টিনসেড ঘর রয়েছে। প্রায় ৪০ বছর আগে থেকে ওই ঘরে তার নামে বিদ্যুতের মিটার (হিসাব নম্বর-২৪৫/১৪২০) ছিল। যশোদা দেবনাথ ২০১১ সালের ২৬ জানুয়ারি মারা যান। এরপর থেকে ওই ঘর ভাড়া দিয়ে পরিবারের সদস্যরা পাশের দশমিনা উপজেলার গোপালদি গ্রামে বসবাস করছেন। সেই সুযোগে যশোদা দেবনাথের আত্মীয় শান্তিরঞ্জন দেবনাথ মৃত যশোদা দেবনাথকে জীবিত দেখিয়ে তার নামের মিটারটি হস্তান্তরের জন্য পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বাউফল জোনাল অফিসে আবেদন করেন। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, একই স্থানে ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর শান্তিরঞ্জন দেবনাথের নামে একটি নতুন মিটারের (যার হিসেব নম্বর ২৪৫/১৪৪৫) সংযোগ দেন এবং ঘরটি দখল করে নেন। যশোদা দেবনাথের ছেলে কানাই চন্দ্র দেবনাথ অভিযোগ করে বলেন, বাউফল পৌরসভার হোল্ডিং ট্যাক্স এবং বিদ্যুৎ বিল নিয়মিত পরিশোধ করে আসছেন তিনি। কোনো বকেয়া না থাকলেও তার মৃত বাবাকে জীবিত দেখিয়ে আবেদন করে মিটার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে এবং একই স্থানে অন্য নামে নতুন মিটারের সংযোগ দেয়া হয়েছে। বিষয়টি জানার পর পুনঃসংযোগ দেয়ার জন্য পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাউফল জোনাল অফিসের ডিজিএম বরাবর আবেদন করেন। কিন্তু এক বছর ধরে দেই-দিচ্ছি বলে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ ঘুরাচ্ছে। নিরুপায় হয়ে পরে পল্লী বিদ্যুতের প্রধান কার্যালয়ে চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
কানাই চন্দ্র দেবনাথ আরো বলেন, বাউফল পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতির খেসারত দিচ্ছি। তারা সব কিছু জেনেও অনৈতিক সুযোগ নিয়ে আমাদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। এ বিষয়ে শান্তিরঞ্জন দেবনাথ বলেন, মৃত ব্যক্তির নামে কে বা কারা আবেদন করেছেন সেটা তিনি জানেন না। তবে তিনি তার ঘরেই মিটারস্থাপন করিয়েছেন বলে দাবি করেন।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাউফলের ডিজিএম মো. মুজিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছেন। কোনো অনিয়ম হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।