রাজপথে সহিংসতা ও প্রাণহানিতে মর্মাহত ইইউ

আগের সংবাদ

খুনিদের সঙ্গে সংলাপ নয় : সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

পরের সংবাদ

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদই ভরসা

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের ক্রিকেটের পঞ্চপাণ্ডবদের একজন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ক্যারিয়ারজুড়ে বিতর্ক থেকে গা বাঁচিয়ে চলা রিয়াদ নীরবে-নিভৃতে পারফর্ম করেছেন। চলমান ভারত বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল রিয়াদ। তবে ফিটনেস ইস্যু দেখিয়ে এই রিয়াদকে প্রায় বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছিল। শেষ মুহূর্তে¡ বিশ্বকাপ দলে ঢোকা রিয়াদকে যদি দলে নেয়া না হতো তাহলে কি পরিমাণ ভুগত বাংলাদেশ! সেটিই প্রতি ম্যাচে নিজের পারফর্ম্যান্সে প্রমাণ করছেন তিনি।
২০২৩ ভারত বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ৫ ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান। মাহমুদউল্লাহ খেলেছেন ৪ ম্যাচ, এর মধ্যে ব্যাটিং করেছেন ৩ ইনিংস। ৯৯ গড় ও ১০১ দশমিক ২ স্ট্রাইক রেটে তার রান ১৯৮। দলের কম্বিনেশনের কথা চিন্তা করে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাদ দেয়া হয় রিয়াদকে। তবে পরের ম্যাচে এসেই বাংলাদেশের মান বাঁচান সাইলেন্ট কিলার। দক্ষিণ আফ্রিকার বিশাল রান পাহাড়ে চাপা পড়ে বাকি টাইগার ব্যাটাররা উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসছিলেন। সে সময় এক প্রান্ত আগলে রেখে বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় শতক হাঁকান রিয়াদ। এতে বাংলাদেশ জয় না পেলেও হারের ব্যবধান অনেক কমে যায়।
ক্যারিয়ারজুড়েই দলের জন্য টপঅর্ডার, মিডল অর্ডার ও লোয়ার মিডল অর্ডারে খেলেছেন তিনি। দলের প্রয়োজনে অনেক সময়ই ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন তিনি। বিশ্বকাপে এ নিয়ে তিনটি সেঞ্চুরি পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। আর একটি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। এ বিষয়ে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘দেশের হয়ে অনেকদিন ধরেই খেলছি আমি। ২০০৭ সালে আমার অভিষেক হয় বাংলাদেশের জার্সিতে। এরপর অনেক সময় হয়ে গেল আমি খেলছি, আইসিসি ইভেন্টে ৪টি সেঞ্চুরি করতে পারায় আসলে আমি নিজেকে ভাগ্যবানই মনে করি।’
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মূলত মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান এবং অকেশনাল অফ স্পিন বোলার। ১৯৮৬ সালে জন্ম নেয়া এ ক্রিকেটার ২০০৭ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ দলের শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য বাংলাদেশ দলে ডাক পান। ওই সফরের তৃতীয় ওডিআই ম্যাচে তার অভিষেক হয়। অভিষেকের পর থেকেই জাতীয় দলে নির্ভরযোগ্য ব্যাটারের দায়িত্ব পালন করছেন রিয়াদ। এবারের বিশ্বকাপে রিয়াদকে খেলানো হচ্ছে ছয় বা সাত নম্বরে। এ নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে হারার পর টাইগার টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে রিয়াদকে উপরে খেলানোর অনুরোধ করেন পাকিস্তানের সাবেক কিংবদন্তি বোলার ওয়াসিম আকরাম। তিনি বলেন, ‘দয়া করে মাহমুদউল্লাহকে ওপরে খেলান। যখন আপনার মিডল অর্ডার ব্যর্থ হচ্ছে, তখন প্রধান ব্যাটসম্যানকে চারে অথবা পাঁচে খেলান। জানি না টিম ম্যানেজমেন্ট কী ভাবছে। কেন মাহমুদউল্লাহ ৭ নম্বরে। আশা করি, কেউ এর কারণটা আমাকে ব্যাখ্যা করবে। যদি ৩ উইকেট চলে যায়, মাহমুদউল্লাহকে পাঠাও, এক প্রান্ত আটকে দেবে।’ পাকিস্তানের আরেক সাবেক অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হক মনে করেন, ছয়-সাত নাম্বার পজিশনে ব্যাট করার কারণে মাহমুদউল্লাহর সামর্থ্যরে পুরোটা ব্যবহার করতে পারছে না বাংলাদেশ দল। স¤প্রতি আইসিসি প্রকাশিত এক ভিডিওতে নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেছেন মাহমুদউল্লাহ। এ ভিডিওতে ভক্তদের জন্য খারাপ খবরই দিয়েছেন রিয়াদ। ভিডিওতে বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘সত্যি বলতে, আমি আমার শেষ বিশ্বকাপ খেলছি। আমি বাংলাদেশ দলের পক্ষে আর কতদিন খেলব তা নির্ভর করছে আমার পারফর্ম্যান্স ও শারীরিক ফিটনেসের ওপর। হয়তো কয়দিন পরে বা দ্রুতই আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাব।’
মাহমুদউল্লাহর ক্যারিয়ারে প্রচারের আলো তাকে সহজে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি সব সময় আড়াল খুঁজে দলের জন্য নিজের কাজ করে গেছেন।
উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত ওয়ানডে ফরম্যাটে ১৯৫ ইনিংসে ব্যাট করে ৫২১৮ রান করার পাশাপাশি ১৫১ ইনিংসে বল করে ৮২ উইকেট শিকার করেছেন রিয়াদ।

শেখ মাহমুদুল হাসান নকীব

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়