কাপাসিয়ায় গ্রেপ্তার ৭৬, বিএনপির দাবি শতাধিক

আগের সংবাদ

ভুল চালে ব্যাকফুটে বিএনপি : দিতে হচ্ছে সহিংসতার খেসারত > নতুন করে আন্দোলনে গতি ফেরানো কঠিন হবে

পরের সংবাদ

আজ বিশ্ব স্ট্রোক দিবস : ঝুঁকি এড়াতে নিয়ন্ত্রণ জরুরি…

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ডা. আশরাফুন্নাহার চৈতী

বিশ্বে মোট মৃত্যুর দ্বিতীয় কারণ স্ট্রোক। বিশ্বব্যাপী দেড় কোটি মানুষ প্রতিবছর স্ট্রোকের নানা জটিলতার শিকার হন। এর মধ্যে মারা যায় ৫০ লাখ। এ ছাড়া পঙ্গুত্ব বয়ে বেড়ায় আরও ৫ লাখ মানুষ। রক্ত চলাচল ঠিকমতো না হলে স্ট্রোক হয়। ব্রেন ঠিকমতো রক্ত না পাওয়ায় ব্রেন স্ট্রোক হয়। তবে ব্লাড প্রেশার ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ৮০ ভাগ স্ট্রোক কমে যায়। গবেষণা বলছে, প্রতি ৪০ সেকেন্ডে বিশ্বে একজন মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। হৃদরোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগের চিকিৎসা এখন দেশে মিলছে। জানা যায় ২০১১ সালে হাজারে তিন জন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। আর এখন এই ১২ বছরে স্ট্রোকের রোগী চারগুণ বেড়ে গেছে। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, একবার স্ট্রোকের পর যারা বেঁচে যাচ্ছে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি দ্বিগুণ। এছাড়া এক বছরের মধ্যে আরো একবার স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হতে পারেন তারা। স্ট্রোকের ঝুঁকি বয়স্কদের বেশি আগে এমনটা ধারণা করা হলেও, সেটা এখন ভুল প্রমাণিত হচ্ছে।
সাধারণত স্ট্রোক দুই ধরনের। অধিকাংশ ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে স্ট্রোক হয়, রক্তক্ষরণ হয়েও স্ট্রোক হতে পারে। কারও যদি মাথায় আঘাতজনিত কারণে রক্তক্ষরণ হয়, সেটিকে কিন্তু স্ট্রোক বলা যাবে না। স্ট্রোক হতে যাচ্ছে এটা আমরা কীভাবে বুঝব? অনেক সময় কিছু পূর্ব লক্ষণ থাকে, সেগুলোর একটি হচ্ছে ট্রানজিয়েন্ট ইস্কিমিক অ্যাটাক। এটা সাধারণত ২৪ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হয় না। আমাদের হার্ট থেকে কিংবা গলার অভ্যন্তরীণ রক্তনালি ক্যারোটিড ধমনি থেকে জমাট রক্ত ছুটে গিয়ে মস্তিষ্কের রক্তসঞ্চালন বাধাগ্রস্ত করে। তখনই কিছু উপসর্গ দেখা যায়। তাই এ রোগের নিরাময়ের চেয়ে প্রতিরোধ জরুরি।

স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ার কারণ : ১. উচ্চ রক্তচাপ ২. অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন ৩. ধূমপান ৪. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ৫.শারীরিক পরিশ্রম না করা

বিশ্বজুড়ে মানুষের পঙ্গুত্ব ও অক্ষমতার অন্যতম বড় কারণ হলো স্ট্রোক। এটি এড়াতে প্রথমেই সচেতন হতে হবে এবং অন্যকে সচেতন করতে হবে। দৈনন্দিন জীবনে কিছু পদক্ষেপ নিলে স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব।
১. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে ২.নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে ৩. ধূমপান ছাড়তে হবে ৪. নিজের খেয়াল নিজেকেই রাখতে হবে ৫. নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে ও কর্মক্ষম থাকতে হবে ৬. খাদ্যতালিকা থেকে জাংক ফুড সরিয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার রাখতে হবে ৭. হাসিখুশি থাকতে হবে।

স্ট্রোকের জরুরি সংকেত
১.মুখের এক দিক ঝুলে পড়া বা অবশ হয়ে পড়া।
২. দুই হাতের কোনো একটির বাহু দুর্বল বা অবশ হলে বা একটি হাত ঝুলে পড়ে গেলে।
৩. কথায় জড়তা থাকলে। এগুলোর মধ্যে কোনো একটি দেখা দিলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকের কাছে যান।

বদল আনুন জীবনযাপনে

স্ট্রোক হওয়ার পর বেঁচে গেলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ও সহায়তা নিয়ে চলতে হবে। বদল আনতে হবে জীবনযাপন, পরিধান, খাওয়াদাওয়া, ঘোরাঘুরি, গাড়ি চালানোসহ অনেক কিছুতে। অনেকের খাওয়ার সময় গিলতে সমস্যা হয়। এর জন্য চাই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ। এ ছাড়া স্ট্রোকের রোগীদের ফিজিওথেরাপির দরকার হয়।

সুস্বাস্থ্য
অনিরাপদ খাদ্যের কারণে বাংলাদেশসহ মধ্য ও নি¤œ আয়ের দেশে স্ট্রোকের রোগী আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। অথচ নিরাপদ খাদ্য গ্রহণ ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে উন্নত বিশ্বে কমে আসছে স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
সাধারণত প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের জীবনে কোনো না কোনো সময়ে স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু আমরা অনেকে জানি না যে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব। যাপিতজীবনের কিছু নিয়ম মেনে চললেই এই ঝুঁকি এড়ানো যাবে। এ জন্য স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

তথ্য সূত্র : জাতীয় দৈনিক, মেডিকেল জার্নাল, ইন্টারনেট

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়