এম. রমজান আলী রাউজান (চট্টগ্রাম) থেকে : দক্ষিণ রাউজানের প্রাণকেন্দ্র নোয়াপাড়া পথেরহাট এলাকায় মার্কেটের ট্যাংকের মলমুত্র পড়ছে পুকুরের পানিতে আর এই মলযুক্ত পানি ব্যবহার হচ্ছে হোটেল রেস্তোরাঁয়। এতে হুমকিতে পড়েছে জনস্বাস্থ্য।
জানা নোয়াপাড়া পথেরহাটে একাধিক মার্কেটের পরিকল্পিত কোনো ডাস্টবিন না থাকায় মানুষ যত্রতত্র ময়লা-আর্বজনা ফেলছে। অপরদিকে ড্রেন ব্যবস্থা না থাকায় পুকুরে পড়ছে মলমুত্র। এসব বর্জ্য ও ময়লা ফেলায় পানির দুর্গন্ধে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দক্ষিণ রাউজানের প্রাণকেন্দ্র নোয়াপাড়া পথেরহাট এলাকায় রয়েছে কয়েকটি মার্কেট। এর মধ্যে একাধিক মার্কেটে নির্দিষ্ট কোনো ডাস্টবিন নেই, যার ফলে মার্কেটের আবর্জনা, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, বিভিন্ন দোকান ও বাসা বাড়ির বর্জ্য যত্রতত্র ফেলা হয়। এছাড়া মার্কেটের টয়লেটের মলমুত্র গিয়ে পড়ছে পুকুরে। এই মলযুক্ত পানি অবাধে ব্যবহার হচ্ছে হোটেল রেস্তোরাঁয়। এতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা হাজার হাজার মানুষ এসব হোটেলের অস্থাস্থ্যকর খাবার খেয়ে অ্যালার্জি ও শ্বাসকষ্টসহ নানা ধরনের মরণব্যাধি আক্রান্ত হচ্ছে। এসব পুকুরে মশা বংশ বিস্তার করছে। আর দুর্গন্ধ তো আছেই।
সরজমিন পরিদর্শন দেখা যায়, পথেরহাট বাজারে তিন পাশে তিনটি পুকুরের চারপাশে আছে স্কুল, হাসপাতাল মার্কেটসহ কয়েকটি মসজিদ। মুসল্লিরা এই পুকুরের পানি দিয়েই অজু করেন এবং পথেরহাট বাজারের বড় বড় রেস্টুরেন্টগুলো ওই পানিই ব্যবহার করে। নোয়াপাড়া পথেরহাট বাজারের একাধিক মার্কেটের পায়খানার মলমুত্র মার্কেটের পেছনের পুকুরে গড়িয়ে পড়ছে। এছাড়া একাধিক মার্কেটের ময়লা আবর্জনা ফেলে ডাস্টবিনে পরিণত করা হয়েছে পুকুরগুলোকে। এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ দেখে নোয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পথেরহাটে এতবড় বাজারে নির্দিষ্ট কোনো ডাস্টবিন নেই। ডাস্টবিন না থাকায় পুকুরসহ বিভিন্ন স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়। অনেকে তাদের গোসলখানা ও টয়লেটের নোংরা পানি পাইপলাইনের মাধ্যমে পুকুরে ফেলছে। তবে এখানকার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন নিরুপায় পড়ে এ পানি ব্যবহার করে চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়াও প্রতিদিন দূরদুরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার মানুষ এই মলযুক্ত পানি ব্যবহার করা হোটেল রেস্তোরাঁর খাবার খাচ্ছে।
নোয়াপাড়া পথেরহাট ভূমি অফিসসংলগ্ন জানাত হোটেলের পেছনে মার্কেটের পায়খানার মলমুত্রযুক্ত পুকুরের পানি পাইপ দিয়ে তোলা হচ্ছে। এই হোটেলের কর্মচারী কামাল উদ্দিন বলেন, খাবার পানি টিউবওয়েলের আর পুকুরের পানি দিয়ে থালাবাসন ধোয়া ও ব্যবহার হচ্ছে। এই হোটেল ছাড়াও অন্যগুলোতেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। অথচ এসব দেখভালের যেন কেউ নেই। বছরের পর বছর ধরে দক্ষিণ রাউজানের প্রাণকেন্দ্র নোয়াপাড়া পথেরহাট এলাকায় এ অবস্থা বিরাজ করলেও প্রশাসন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় অস্বাস্থ্যকর অবস্থা বিরাজ করছে।
জানতে চাইলে রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা বলেন, পুকুরের দূষিত পানি ব্যবহারে চর্ম রোগে ও দূষিত পানি পেটে গেলে আমাশয়, জন্ডিস, ডেঙ্গুসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে আমাদের চারপাশের ময়লা অর্বজনা যাতে পরিবেশ দূষিত না করে সেই দিকে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন জরুরি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।