গ্রেপ্তার ৩ : মাদকের টাকা যোগাড় করতে চুরি

আগের সংবাদ

সাহারার সেকাল একাল

পরের সংবাদ

‘ঘুড্ডি’ নির্মাতার প্রয়াণে আসাদ-সুবর্ণার স্মৃতিচারণ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বিনোদন প্রতিবেদক :
গত সোমবার রাত ১১টা ৫৩ মিনিটে মারা গেছেন ‘ঘুড্ডি’ খ্যাত নির্মাতা সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী। এদিন আচমকাই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হলেও তাকে বাঁচানো যায়নি। গুণী এই নির্মাতার প্রয়াণে শোকাচ্ছন্ন ‘ঘুড্ডি’ সিনেমার জুটি অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা ও অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ। ‘ঘুড্ডি’ সিনেমার নায়িকা তার ফেসবুক প্রোফাইলে লিখেছেন, ‘১৩ তারিখ রাতেও কথা হলো। বুঝিনি এটাই শেষবার! ক্ষমা করে দিয়েন জাকী ভাই, কিছুই করা হয়নি আপনার জন্য। আমি কেবল গ্রহণই করেছি আপনার আদর, আপনার ভালোবাসা, শিক্ষা। আবার অভিভাবক শূন্য হলাম আমরা। অনেক ভালোবাসি আপনাকে। শান্তিতে ঘুমান আপনি। পরম শ্রদ্ধা।’
১৯৮০ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ঘুড্ডি’ সিনেমাটি সময়ের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিল। তখন হয়তো উন্নত প্রযুক্তি ছিল না, কিন্তু সিনেমাটির গল্প ও নির্মাণশৈলী অত্যন্ত আধুনিক ছিল। সেই সুবাদে এটি কালের সীমানা জয় করে নেয়। একই পরিচালকের ‘আয়না বিবির পালা’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ।
স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। পরিচয়ও মুক্তিযুদ্ধের সময়টায়। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ সাল থেকে আমরা একসঙ্গে, ঢাকা থিয়েটারের হয়ে বছরের পর বছর পার করেছি। ঢাকা থিয়েটার করতে গিয়ে তাকে চিনেছি, বুঝেছি, তার কাছ থেকে শিখেছি।’
‘ঢাকা থিয়েটার করার আগে নাট্যচক্র, ড্রামা সার্কেলে জাকী ভাইয়ের সঙ্গে অনেক স্মৃতি আছে। সবকিছু আজ চোখের সামনে ভাসছে। সবচেয়ে বেশি স্মৃতি ঢাকা থিয়েটারে। সেসব কি ভোলা যায়?,’ বলেন তিনি। ‘তার অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র ঘুড্ডি, যা একটি অনন্য চলচ্চিত্র। ঘুড্ডিতে আমি ও সুবর্ণা মুস্তাফা একসঙ্গে অভিনয় করি। সিনেমাটি সুপার হিট করে। কিন্তু অভিনয় ছাড়াও আমি তার সঙ্গে সহকারী হিসেবে কাজ করেছি অনেকদিন। অভিনয় না করলেও তার সহকারী হিসেবে থাকা হতো। আমার তো অভিনয়ই করার কথা ছিল না। সবকিছু সম্ভব হয়েছে জাকী ভাইয়ের জন্য। তিনি আমাকে দিয়ে অভিনয় করিয়ে নিয়েছেন। তার জন্যই আমাকে অভিনয় করতে হয়েছে। সেজন্য মাঝে মাঝে ভাবি, জাকী ভাই না থাকলে আমার হয়তো অভিনয়ই করা হতো না,’ বলেন তিনি। রাইসুল ইসলাম আসাদ আরো বলেন, ‘আমার অভিনেতা হওয়ার জন্য যাদের অবদান বেশি, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন জাকী ভাই। তার কথা ভুলব কেমন করে? এজন্য তার চিরবিদায়ের খবরটি শোনার পর থেকে মনটা পাথর হয়ে আছে।’ সালাহউদ্দিন জাকী খুব বেশি সিনেমা নির্মাণ করেননি। তবে তার মেধা-মনন দেশের চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতি অঙ্গনে দারুণ প্রভাব ফেলেছিল। কাজ করেছিলেন বিটিভির মহাপরিচালক হিসেবেও। শেষ জীবনে দুটি সিনেমা নির্মাণ করে গেছেন সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী। ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত সিনেমা দুটির নাম ‘অপরাজেয় একা’ ও ‘ক্রান্তিকাল’। ‘ঘুড্ডি’ সিনেমার জন্য শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী। এছাড়া ২০২১ সালে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন। সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকীকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে। জোহরের নামাজের পর তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদে। জানাজ শেষে তাকে চ্যানেল আইতে নিয়ে যাওয়া হবে। চ্যানেল আইয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে আজিমপুর কবরস্থানে সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকীকে দাফন করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়