খাগড়াছড়িতে পাহাড় ধসে যান চলাচল ব্যাহত

আগের সংবাদ

ব্রিকসের সদস্যপদ পাওয়ার চিন্তা ছিল না, চেষ্টাও করিনি : সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

পরের সংবাদ

হয়রানির উদ্দেশ্যে কোনো অভিযান চালায় না ডিবি : অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ

প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) সত্যিকার অর্থে অস্ত্রধারী ও অস্ত্র ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে। এটা চলমান থাকবে। হয়রানির উদ্দেশ্যে কখনো কোনো অভিযান চালায় না ডিবি। তাছাড়া অস্ত্রধারীরা কোনো দলের হতে পারে না। অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় বরং ছাত্রদলের ৭ কেন্দ্রীয় নেতাকে দলীয়ভাবে বহিষ্কার করা উচিত। গতকাল সোমবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
স¤প্রতি বিএনপির সহযোগী ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের সাত কেন্দ্রীয় নেতাকে ৪টি অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার করেছে ডিবি। এরপর থেকেই এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে মন্তব্য করা হচ্ছে যে রাজনৈতিক উদ্দেশে, হয়রানি করার জন্য তাদের অস্ত্র-গুলি দিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ছাত্রদলের নেতাদের অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারকে ‘দুর্বল স্ক্রিপ্টের নাটক’ বলে অভিহিত করেছে বিএনপি। সংগঠনটি বলেছে, ছাত্রদল কলমের রাজনীতি করে, অস্ত্রের রাজনীতি করে না।
এ বিষয়ে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, আমাদের ডিবি পুলিশের অস্ত্র উদ্ধারে আলাদা টিম রয়েছে। স¤প্রতি অস্ত্র উদ্ধারে একটা অভিযান পরিচালনা করে ছয়জনকে অস্ত্র গোলাবারুদসহ গ্রেপ্তার করে গুলশান গোয়েন্দা বিভাগ। এরই ধারাবাহিকতায় কলাবাগান থানা এলাকা থেকে অস্ত্র-গুলিসহ ছাত্রদলের সহসভাপতি আবুল হাচান চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে চারটি অস্ত্র উদ্ধার ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে ছাত্রদলের সাত কেন্দ্রীয় নেতাকে। তিনি আরো বলেন, তারা ফেসবুকে অস্ত্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, কথোপকথন করেছে, তার ছবি আমাদের কাছে রয়েছে। কোন কোন অস্ত্র কোথায় তারা ব্যবহার করবেন সে তথ্যও রয়েছে। মাসুম নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একজন ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম জিসানকে বলেছে, ঢাবির এফ রহমান হল দখলে নিয়ে ব্যবহার করবেন বলেন কথোপকথনে উঠে এসেছে। কোনো দলের নেতা বা কর্মীকে গ্রেপ্তার করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। তবে যারা চোরাকারবারী, সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসা, অস্ত্র ব্যবসা করবে তাদের বিরুদ্ধেই আমাদের অভিযান। যদিও অনেকেই বলার চেষ্টা করছেন, ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের হয়রানি করার উদ্দেশ্যে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এটা রাজনৈতিক কথাবার্তা। আমরা আমাদের আইনগত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অভিযান পরিচালনা করেছি। তিনি দাবি করেন, ছাত্রদলের গ্রেপ্তার নেতারা যে ১১টি অস্ত্র কেনার জন্য অস্ত্র ব্যবসায়ীদের কাছে অর্ডার করেছে, সেটি প্রমাণিত।
হারুন দাবি করে বলেন, স¤প্রতি গ্রেপ্তারকৃতরা হয়তো ছাত্রদলের নেতাকর্মী। কিন্তু এর আগেও তো শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকেও আমরা অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছি। তখন তো কেউ প্রশ্ন তোলেনি? স¤প্রতি যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন তারা ছাত্রদলের বলে কেন তবে প্রশ্ন উঠছে? আমাদের উদ্দেশ্যটা রাজনৈতিক নয়। কে ছাত্রলীগ বা ছাত্রদলের সেটি আমাদের মুখ্য বিষয় নয়। মুখ্য বিষয় হচ্ছে, সে অস্ত্র ব্যবসায়ী, চোরাকারবারী, অস্ত্র ভাড়া করে মানুষের জীবনকে শেষ করার কাজ করছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিন্তে আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় আমরা করব।
হারুন বলেন, গ্রেপ্তার ছাত্রদলের ৭ নেতাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করে জেনেছি তারা ১১টি অস্ত্র অর্ডার করেছে। এর মধ্যে আমরা মাত্র চারটি উদ্ধার করতে পেরেছি। আরো ৭টি অস্ত্র এখনো উদ্ধার বাকি রয়েছে। সেগুলো উদ্ধার করে সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। জিজ্ঞাসাবাদে আমরা অনেকের নাম পেয়েছি। তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। বাকি অস্ত্রগুলো কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোথায় ও কী কাজে তারা ব্যবহার করবে, সেগুলো আমরা জেনেছি। তবে তা আমরা এখনই বলছি না। আগে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। কক্সবাজার টেকনাফের নাম জেনেছি। এসব যাচাই করা হচ্ছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সহিংসতার উদ্দেশ্যে অস্ত্র কেনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে হারুন বলেন, এটা তো পরিষ্কার। নির্বাচনের ডামাডোল বাজতে আর এক মাস বাকি। মানুষ ও রাজনৈতিক দল তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে। এ সময়ে ছাত্রদলের গ্রেপ্তার নেতারা ১১টি অস্ত্র সংগ্রহ করলেন বোমা বারুদ সংগ্রহ করলেন, মোবাইল ফোনে কথোপকথনে তারা হল দখলের কথা বললেন। কে ব্যবহার করবে সেটাও বললেন, বণ্টন করলেন? এটা কীসের আলামত? তবে কেউ যদি অস্ত্র ব্যবসায়ীকে ধরার পরে পুলিশকে হুমকি দেয়, তাদের মনে রাখা উচিত, কারো হুমকিতে ডিবি পুলিশ ভয় পায় না। বরং আমরা যাদের নাম পেয়েছি তাদের প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। অস্ত্রধারী কেউ দলের না। ১১টা অস্ত্রই আমরা উদ্ধার করব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়