প্রশ্ন বিচারপতির : তারা কি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর চেয়েও ক্ষমতাধর

আগের সংবাদ

এবার তানজিদের লক্ষ্য বিশ্বকাপ জয়

পরের সংবাদ

তিন বছর পর আবারো ‘এল নিনো’

প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : টানা তিন বছর ‘লা নিনা’র দাপটের পর গত মাসে এল নিনোর আবির্ভাবের কথা নিশ্চিত করেছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা। অপর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এল নিনো থাকার আশঙ্কা ৯৫ শতাংশ। এল নিনো হচ্ছে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি একটি জলবায়ুর ধরন, যার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে খাদ্য, সুপেয় পানি এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার ঝুঁকি বৃদ্ধি পাবে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবের সঙ্গে যুক্ত এল নিনোর এই চক্র স্থানীয়ভাবে খরা ও ক্ষুধার পাশাপাশি প্রাণিবাহিত রোগ বাড়াতে পারে, এমন আশঙ্কা রয়েছে।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট অ্যান্ড সোসাইটির বিজ্ঞানী ওয়াল্টার ব্যাথগেন বলেন, এল নিনোর অর্থ এই নয় যে বিশ্বব্যাপী এ বছর অন্য বছরের চেয়ে দুর্যোগ বেশি হবে। এটি বিশ্বের বিভিন্ন অংশে গুরুতর স্থানীয় প্রভাব ফেলতে পারে।
এল নিনো হলো সাউদার্ন অসকিলেশন (ইএনএসও) নামক আবহাওয়ার ধরনের দুটি অংশ- যা ক্রান্তীয় পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের ওপর বাতাসের ধরন এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রার একটি অনিয়মিত কিন্তু পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তন। এল নিনো বলতে ইএনএসওর উষ্ণায়ন পর্যায়কে বোঝায়। অন্যদিকে লা নিনা বোঝায় এর শীতলকরণ পর্যায়কে।
এল নিনোর বছরগুলোতে তাপমাত্রা প্রায় শূন্য দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। লা নিনার সময়ে প্রায় একই পরিমাণে হ্রাস পায়। দুই প্যাটার্নের উঠানামার ঘটনাটি প্রায়ই একটি নিরপেক্ষ পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যায়।
সা¤প্রতিক বছর ও মাসগুলোতে পৃথিবী বারবার রেকর্ড তাপমাত্রায় পৌঁছেছে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) মতে, জুলাই ২০২৩-এর গড় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ রেকর্ড করেছিল, যা ১৯৯১ থেকে ২০২১ সালের জুলাইয়ের গড় তাপমাত্রার তুলনায় শূন্য দশমিক ৭২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। বিশ্বে সবচেয়ে উষ্ণতম বছরগুলো রেকর্ড হয়েছে এল নিনো চলাকালে।
ডব্লিউএমওর জলবায়ু পরিষেবার প্রধান ক্রিস হিউইট বলেন, এল নিনোর প্রভাবে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটার আশঙ্কা বেশি। তিনি বলেন, ‘তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ আমাদের আভাস দিচ্ছে যে প্রাক-শিল্পযুগের তুলনায় বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বেড়ে যাওয়ার ৬৬ শতাংশ আশঙ্কা রয়েছে।’
২০২৪ সালে এল নিনোর প্রভাব সম্পূর্ণরূপে স্পষ্ট হবে। পৃথিবীপরবর্তী অর্ধদশকে তার উষ্ণতম বছরের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে।
ওয়াল্টার ব্যাথগেন আরো বলেন, খরা ও খাদ্যনিরাপত্তার হুমকির মতো সম্ভাব্য প্রভাবের জন্য আরো ভালোভাবে প্রস্তুতি নেয়ার জন্য জলবায়ু বিজ্ঞানীদের জন্য এল নিনোর বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে ধানসহ বিভিন্ন ফসল কাটার ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে এল নিনো। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশ ইতোমধ্যে ফসল মজুত ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ভারত অনেক ধরনের চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে। অন্যদিকে ইন্দোনেশিয়ার কিছু অংশ দ্রুত ফসল কাটার পরিকল্পনা করছে। এ কারণে প্রায়ই দক্ষিণ এশিয়ায় বিপজ্জনক তাপপ্রবাহ হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়