পাবনায় মানববন্ধন : শিক্ষকের ওপর হামলার বিচার দাবি

আগের সংবাদ

বর্ষণে বিপর্যস্ত পাঁচ জেলা : চট্টগ্রামের সঙ্গে বান্দরবান ও কক্সবাজারের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, চট্টগ্রাম ও বান্দরবানে সেনা মোতায়েন

পরের সংবাদ

লঙ্কা মাতাচ্ছেন তাওহিদ হৃদয়

প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আসন্ন এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সদস্যরা। আরেকদিকে বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে আলো ছড়াচ্ছেন সাকিব-লিটন-হৃদয়রা। টাইগার শিবিরের তরুণ ব্যাটার তাওহিদ হৃদয় খেলছেন লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগের (এলপিএল) দল জাফনা কিংসের হয়ে। দলটির চার ম্যাচের তিনটিতেই দুর্দান্ত ছিলেন হৃদয়। চতুর্থ ম্যাচে তিনি খুব একটা ভালো করতে না পারলেও তার পারফরম্যান্স খারাপের কাতারে রাখা কঠিন।
গত মাসের শেষ দিনে বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে অভিষেক হয় হৃদয়ের। জাফনা কিংসের হয়ে সেদিন তিনি কলম্বো স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে খেলতে নামেন। সেই ম্যাচের শুরুতেই ধাক্কা খায় জাফনা কিংস। ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও নিশান মাদুশকা বিদায় নেয়ার পর চারে নামেন হৃদয়। চারিথ আসালাঙ্কাকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল শক্ত হাতেই ধরেন তিনি। তবে চারিথ তাকে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি। এক প্রান্তে ধারাবাহিকভাবে উইকেট হারালেও আরেক প্রান্তে থিতু হয়ে দলকে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে নেন বাংলাদেশ দলের অন্যতম ভরসাযোগ্য ব্যাটার। ৩৯ বল মোকাবিলা করে সেদিন তিনি ৪টি বাউন্ডারি এবং ১টি ছক্কায় সাজানো ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন। এলপিএলই কোনো বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ, যেখানে হৃদয় খেলছেন। অভিষেক ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে প্রথম ম্যাচেই অর্ধশত রান করে আলোচিত হন হৃদয়। প্রথম ম্যাচে চারে নামার পর তার পারফরম্যান্সের কারণে দ্বিতীয় ম্যাচে নামানো হয় তিনে। সেই ম্যাচে ডাম্বুলা অরার বিপক্ষে ফের ব্যর্থ হন গুরবাজ। সেদিন তিনে নেমে ২০ বলে ২৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন হৃদয়। ইনিংস বড় করতে না পারলেও সেদিন তার স্ট্রাইক রেট ছিল ১২০। হৃদয়ের ইনিংসটি সাজানো ছিল দুটি চারের সমন্বয়ে।
এলপিএলে গত শুক্রবার রাতের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল সাকিবের গল টাইটান্স এবং হৃদয়ের জাফনা কিংস। আগের ম্যাচগুলোতে আলো ছড়াতে পারলেও সেই ম্যাচটিতে বিবর্ণই ছিল বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট দলের অধিনায়কের পারফরম্যান্স। দলের ক্রান্তিলগ্নে ব্যাট হাতে ক্রিজে এলেও তাকে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ৯ বলে ৬ রান নিয়ে। ব্যাট হাতে খারাপ করলেও সেটা বল হাতে পুষিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন সাকিব। শিকার করেছেন ২টি উইকেটও। তবে তা দলের জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। আরেকদিকে একই ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে দলকে জয় উপহার দিয়েছেন হৃদয়। ২৩ বলে ৪৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে তিনি দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন। দুর্দান্ত এই ইনিংসটি ২ চার ও ৪ ছক্কায় সাজান হৃদয়। জাতীয় দলের সতীর্থ সাকিব আল হাসানকেও যেন তিনি ছাড় দিতে নারাজ ছিলেন। সাকিবের বলেই মেরেছেন একের পর এক চার-ছক্কা।
তিনে নেমে পঞ্চম ওভারে সাকিবের মুখোমুখি হয়ে প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান হৃদয়। পরের বলও বাউন্ডারি ছাড়া করেন এই তরুণ ব্যাটার। এরপর ১১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সাকিবের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান গুরবাজ। তিনি ৩ চার ও ৫ ছক্কায় ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন। এরপর ড্যাভিড মিলারকে সঙ্গে নিয়ে দলকে জয়ের দিকে এগোতে থাকেন হৃদয়। ১৩তম ওভারে টানা দুটি ছক্কা মেরে তিনি জাফনা কিংসকে জয়ের বন্দরে পৌঁছান।
নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে বি লাভ ক্যান্ডির বিপক্ষে খেলতে নামে জাফনা কিংস। সেই ম্যাচে হৃদয় ভালো স্ট্রাইক রেটেও ব্যাট করতে পারেননি, আর বড় ইনিংসও খেলতে পারেননি।
সেদিন ২২ বল খেলা হৃদয়ের ব্যাট থেকে ১৯ রান যোগ হয়েছিল জাফনার স্কোরবোর্ডে। ইনিংসটিতে চার ছিল তিনটি। এটি ছিল সেদিন জাফনার হয়ে খেলা চতুর্থ সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।
জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে হৃদয়ের যাত্রা শুরু হয় চলতি বছরের ১৮ মার্চ, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। আন্তর্জাতিক ম্যাচে জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক ম্যাচেই রেকর্ড গড়েন হৃদয়। তিনি সেদিন ৯২ রানের একটি ইনিংস খেলেন, যা অভিষেকে কোনো বাংলাদেশি ব্যাটারের সর্বোচ্চ রান। এই ইনিংসটি যদি তিনি সেঞ্চুরি পর্যন্ত টিকিয়ে রাখতে পারতেন, তাহলে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অভিষেক ম্যাচে সেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়তে পারতেন। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচেও হৃদয়ের পারফরম্যান্স ছিল অনবদ্য। আইরিশদের বিপক্ষে তিনি সেদিন ৪৯ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন। তৃতীয় ম্যাচে তিনি একাদশে থাকলেও ব্যাট হাতে উইকেটে আসার সুযোগ পাননি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে হৃদয়ের ম্যাচ সংখ্যা মাত্র ৯টি। এই ক্ষুদ্র ক্যারিয়ারেই তার মোট রান ৩৩৮। যার মধ্যে অর্ধশত রানই আছে তিনটি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে হৃদয়ের যাত্রা শুরু হয় গত মার্চের ৯ তারিখ, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে তিনি ২৪ রানের ইনিংস খেলেন। বিশ ওভারের ক্রিকেটে এই পর্যন্ত ৮টি ম্যাচ খেলেছেন হৃদয়, যেখানে তার মোট রান ১৫৬। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এখনো ফিফটির দেখা পাননি এই তরুণ ব্যাটার। তবে ৪৭ রানের একটি অপরাজিত ইনিংস আছে তার। সেই ম্যাচে যদি বাংলাদেশ জয়ের বন্দরে পা না রাখত, তাহলে হয়তো ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটির দেখা পেতেও পারতেন হৃদয়।

:: শাহাদাত হোসেন কিফাত

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়