রাজধানীতে নারীসহ ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার

আগের সংবাদ

ঐক্যের প্রতিশ্রুতি তৃণমূলের : আ.লীগের বর্ধিত সভায় স্থানীয় কোন্দল নিরসনের তাগিদসহ নানা আবদার তুলে ধরেন নেতারা

পরের সংবাদ

অনুসঙ্গ, ট্রেন্ডি কর্সেট

প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

প্রাচীন ফ্যাশনেবল পোশাকের মধ্যে কর্সেট অন্যতম। শরীরের প্রতিটি ভাঁজকে স্পষ্ট করে তোলে এই কর্সেটের আদলে ডিজাইন করা পোশাকগুলো। পোশাকটি পরলে দেখতে বেশ রোগা লাগে। কোমর সরু এবং ফিগার একদম পারফেক্ট বলে মনে হয়। আর সবচেয়ে বড় কথা, কর্সেট ডিজাইনের পরা যায় যে কোনও পোশাকের সঙ্গী হিসেবে।
মূলত: ষোড়শ শতাব্দীতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা এই পোশাকটি ভিক্টোরিয়ান যুগে দারুণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তবে যুগে যুগে বহু ফ্যাশন বিভিন্ন সময় বিতর্কের আকার ধারণ করেছে। তবুও ক্যাটরিনা কাইফ, দীপিকা পাড়ুকোন, আলিয়া ভাট, ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন, প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার মত বলিউডের প্রথম সারির নায়িকারাও মেতেছে কর্সেটের মত ট্রেন্ডি পোশাকে।

নাজমুল হক ইমন
এখন ট্রেন্ডের সাথে ব্যক্তিগত রুচি, পছন্দ আর স্বাচ্ছন্দ্যের পোশাকও পরছেন ফ্যাশনপ্রেমীরা। নিজস্ব ফ্যাশন দিয়ে অন্য সবার থেকে আলাদা
করে চেনানোর জন্য ঝুঁকিও নিচ্ছেন তারা। কফি ডেটে বা অনলাইন থেকে অফলাইনের প্রথম দেখায় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে হাজির হচ্ছেন ক্যাজুয়ালে। ‘নিউ নরমালে’ সব ভুলে নিজের প্রিয় পোশাকে সাজার এই প্রবণতাকে ডাকা হচ্ছে ‘রিভেঞ্জ ড্রেসিং’ নামে। এ ধরনের টেকসই ফ্যাশনে জায়গা করে নিয়েছে কাঁচুলি ঘরনার পোশাক ট্রেন্ড কর্সেট।
জেনে অবাক হবেন কর্সেট ফ্যাশন কোনও আধুনিক ফ্যাশনের অন্তর্গত নয়। বরং আগে কর্সেট মহিলাদের অন্তর্বাস হিসেবে পরা হত। কিন্তু ২০২০ সাল থেকে সেই পোশাকই ফ্যাশন দুনিয়ায় প্রথম সারির ট্রেন্ডি পোশাকে পরিণত হয়েছে। কর্সেট টপগুলি পুরোপুরি ট্রেন্ডের বাইরে ছিল না কিন্তু বডি-হাগিং সিলুয়েটটি ২০২১ সালের শেষ দিকে এসে অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তবে এখন প্যাটার্ন বদলে কর্সেট নিয়ে ডিজাইনারদের নিরীক্ষাধর্মী কাজ চলছে।

লেহেঙ্গার সঙ্গে কর্সেট
সম্পূর্ণ বিদেশি হলেও কর্সেট দেশি পোশাকের সঙ্গেও দারুণ মানায়। লেহেঙ্গার সঙ্গে কর্সেট ব্লাউজ পরে দেখুন। অপূর্ব সুন্দর লাগবে। কর্সেট ব্লাউজ এবং লেহেঙ্গার রং একই হলে ভালো। সঙ্গে একটি ওড়না, গলায় ভারি নেকলেস আর মুখে লাইট মেকআপ। চুল খোলা রাখুন বা বাঁধা আপনার মর্জি।

শাড়ির সঙ্গে কর্সেট
শাড়ির সঙ্গে কর্সেটের ম্যাচিং প্রায় ভাবাই যেত না। প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের অসাধারণ মেলবন্ধন এই শাড়ি এবং কর্সেটের কাটের কম্বিনেশন।

ডেনিমের সঙ্গী কর্সেট
ডেনিম বা জিন্সের সঙ্গে কর্সেট টপ এক কথায় অসাধারণ লাগে। তবে অবশ্যই টপ ইন করে পরতে হবে। সাথে খোলা চুল। ডার্ক লিপস্টিক। আর চোখে খুব হালকা মেক আপ। স্লিম অ্যান্ড ট্রিম লুকে আপনি হয়ে উঠবেন বোল্ড।

ফরমাল লুকের অনুসঙ্গ কর্সেট
ফরমাল ট্রাউজার এবং ম্যাচিং স্যুটের সঙ্গে কর্সেট ট টপ দারুণ অভিজাত ব্যাপার। অফিস পার্টি, বিজনেস মিটিং-এ এমন সাজ দারুণ মানায়। সঙ্গে খোলা বা আঁটো করে বাঁধা চুল। মুখে হালকা মেক আপ, ন্যুড লিপস্টিক, গাঢ় কাজল। গলায় অবশ্যই স্টাইলিশ অথচ হালকা নেকলেস।

শর্ট স্কার্টের সঙ্গে কর্সেট
ক্যারি করতে পারলে শর্ট স্কার্টের সঙ্গে কর্সেট কম্বিনেশন এক কথায় অসাধারণ হয়ে ওঠে। কর্সেট পোশাকের সঙ্গে নয়ের দশকের সাজ খুব মানায়। ঝাঁকড়া চুলে সিঙ্গল টপ নট কিংবা একেবারে খোলা চুল, সঙ্গে হালকা মেক আপ আর মুক্তার দুল। রাতের পার্টিকে উষ্ণ করে তুলবে।

লং স্কার্টের সঙ্গে কর্সেট
শর্ট স্কার্টের মতো লং স্কার্টের সঙ্গেও অসাধারণ লাগে কর্সেট টপ। লং স্কার্টের সঙ্গে কর্সেট টপ পরলে ডিজনির রাজকন্যাদের কথা মনে পড়ে যায়। লং স্কার্টের সঙ্গে কর্সেট টপ পরে পার্টি কিংবা ছোটো খাটো অনুষ্ঠানে দিব্যি যাওয়া যায়। সঙ্গে দরকার মানানসই মেক আপ। খোলা চুল কিংবা কেয়ারলেস খোঁপার সঙ্গে এই পোশাক খুব সুন্দর লাগে।

ছবি সূত্র : ভোগ, এলে, বিউটি বাজ

রোগের কারণও যখন কর্সেট পোশাক

পৃথিবীতে যুগে যুগে এমন সব ফ্যাশন অনুষঙ্গের চল এসেছে, যা মানুষের জন্য খুবই বিপজ্জনক। জানেন কি, পোশাক, হিল এমনকি কর্সেট পরার কারণেও অতীতে অনেক নারীর মৃত্যু ঘটেছে! এজন্যই এগুলোকে ইতিহাসের সবচেয়ে বিপজ্জনক ফ্যাশন ট্রেন্ড বলে অভিহিত করা হয়েছে।
সব নারীই নিজেকে স্লিম দেখাতে চান। বিশেষ করে কোমরের দিক দিয়ে পাতলা হওয়ার চেষ্টা অতীত থেকে আজও চলমান। তবে পেট ও কোমরের অংশেই সবচেয়ে বেশি মেদ জমে। তাই মেদ কমিয়ে আকর্ষণীয় ফিগার পাওয়া বেশ পরিশ্রম আর দীর্ঘদিনের বিষয়।
এ কারণে ষোড়শ শতাব্দীতে উদ্ভাবিত হয় কর্সেট কাটের পোশাকের ট্রেন্ড। যা পরে চিকন কোমর দেখানো প্রবণতা চালু হয়। তবে অনেক বিপজ্জনক এক ফ্যাশন ট্রেন্ড হিসাবে জায়গা করে নেয় এটি। কারণ কর্সেট শরীরের সাথে অনেক ফিটিংস হয়ে থাকে। এটি পরলে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকে না। অনেক নারীই করসেট দীর্ঘক্ষণ পরে থাকার কারণে অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কর্সেট পরলে শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এর ফলে অনেকেরই অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হতে পারে। সেইসঙ্গে ভাঙা পাঁজর, হজমের সমস্যা, হিস্টিরিয়া, বিষন্নতা এবং কোষ্ঠকাঠিন্যসহ মোট ১০০টি রোগ হতে পারে কর্সেট পরলে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়