জামায়াতে ইসলামী : রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞার আবেদন শুনানি ৩১ জুলাই

আগের সংবাদ

ভোটের আমেজে তৃণমূলে ঈদ : শেখ হাসিনার বার্তা নিয়ে এলাকায় আ.লীগ নেতারা

পরের সংবাদ

মানিকগঞ্জে ফলন বিপর্যয় : চাষিরাই কাঁচামরিচ কিনে খাচ্ছেন

প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জে সবচেয়ে বেশি মরিচ চাষ হয় হরিরামপুর, শিবালয় ও ঘিওর উপজেলায়। আগে এ অঞ্চলের মরিচ স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যেত। রপ্তানিও হতো। কিন্তু এ বছর মরিচের ফলন বিপর্যয়ে রপ্তানি তো দূরের কথা, খোদ মরিচ চাষিদেরই তা কিনে খেতে হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মানিকগঞ্জে ৩ হাজার ৫৫১ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় তা সাড়ে ৩শ হেক্টর বেশি।
গত বছর মানিকগঞ্জ থেকে প্রায় শত কোটি টাকার মরিচ বিদেশে রপ্তানি করা হয়। কিন্তু এ বছর পাতা কুকড়ানো রোগ, প্রচণ্ড তাপদাহ ও যথাসময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় ফলন কমেছে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ। এ অবস্থায়, মরিচ ক্ষেতে সেচের কোনো বিকল্প নেই।
হরিরামপুর উপজেলার গালা এলাকার কৃষক ফরিদ মিয়া জানান, গত বছর ৩ বিঘা জমিতে তিনি মরিচের আবাদ করেছিলেন। দাম ও ফলন ভালো পাওয়ায় বেশি লাভের আশায় এ বছর ৫ বিঘা জমিতে আবাদ করেছেন।
মরিচের চারা, সার, কীটনাশক ও সেচসহ খরচ হয়েছে প্রায় লাখ টাকা। ভরা মৌসুমে প্রতিদিন তার জমি থেকে ৫ থেকে ৭ মণ মরিচ তোলার কথা ছিল। কিন্তু ফলন বিপর্যয়ের কারণে কোনো মরিচই তোলা যাচ্ছে না। গাছের পাতা মুড়িয়ে যাচ্ছে, ফুলও আসছে না। পর্যাপ্ত সার, কীটনাশক ও সেচ দিয়েও কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
শিবালয় ও ঘিওর উপজেলার কলাগাড়িয়া, বনগ্রাম, বরংগাইল, সাহিলী, ধূলন্ডী, চৌবাড়িয়া, বাস্টিয়া ও পুখুরিয়া এলাকার কৃষকরা জানান, গত বছর মরিচের ভালো দাম ও বাম্পার ফলন হওয়ায় এ বছর তারা গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাক ও সিডা থেকে টাকা ঋণ নিয়ে মরিচের আবাদ করেছেন। কিন্তু পাতা কুঁকড়ানো রোগে ক্ষেতে কোনো ফলন নেই। এই ঋণের টাকা কীভাবে পরিশোধ করবেন সেই চিন্তায় রাতে ঘুম হয় না।
জেলার প্রসিদ্ধ দুটি মরিচের আড়ত হরিরামপুরের ঝিটকা হাট এবং শিবালয়ের বরংগাইল হাট। গত বছর এ দুটি আড়তে গড়ে ২৫ থেকে ৩০ ট্রাক মরিচ আসত। কিন্তু এ বছর সেই সংখ্যা ৬ থেকে ৭টি।
বরংগাইল কাঁচাবাজারের আড়তদার নাহিদ রানা জানান, এ বছর তাদের আড়তে মরিচের আমদানি গত বছরের তুলনায় চারভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে। মরিচের এই ফলন বিপর্যয়ে কৃষকের মাথায় হাত। কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন সাধারণ ক্রেতাও।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু মো. এনায়েত উল্লাহ জানান, সঠিক সময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় এই ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। মরিচের আবাদ জুলাই পর্যন্ত থাকবে। এখনো আবহাওয়া অনুকূলে এলে মরিচ গাছের সমস্যা দূর হয়ে পর্যাপ্ত ফল আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি মরিচ ক্ষেতে পর্যাপ্ত সার ও প্রয়োজনীয় সেচের পরামর্শ দিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়