জামায়াতে ইসলামী : রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞার আবেদন শুনানি ৩১ জুলাই

আগের সংবাদ

ভোটের আমেজে তৃণমূলে ঈদ : শেখ হাসিনার বার্তা নিয়ে এলাকায় আ.লীগ নেতারা

পরের সংবাদ

বৃষ্টির দোহাই কৃষি বিভাগের : মেহেরপুরে বিএডিসির বীজে কপাল পুড়ল পাটচাষিদের

প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৮, ২০২৩ , ১২:০২ পূর্বাহ্ণ

মর্তুজা ফারুক রুপক, মেহেরপুর থেকে : মেহেরপুর বিএডিসির দেয়া পাট বীজ বপন করে বিপাকে পড়েছেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার পাঁচ শতাধিক কৃষক। মাত্র দেড় মাসেই ফুল ও ফল ধরে গাছের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন চাষিরা। বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৫৬০ জন কৃষককে বিএডিসির পাট বীজ সরবরাহ করা হয়। সেই বীজ বপন করে ভালো ফলন না পেয়ে সময় ও অর্থনৈতিক লোকসানে কৃষকরা।
গাংনী উপজেলার হিজলবাড়িয়া গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা যায় বিঘার পর বিঘা জমিতে বিএডিসির দেয়া পাট বীজ বপন করেছেন কৃষকরা। পাশাপাশি একই সময়ে অন্য জায়গা থেকে নেয়া বীজও বপন করেন কৃষকরা। বিএডিসির বীজ যেসব জমিতে বপন করা আছে সেসব জমির পাট মাত্র দুই থেকে তিন ফুট উঁচু হয়েছে। আর বেশির ভাগ গাছেই সময়ের আগেই ফুল ও ফল দেখা গেছে।
হিজলবাড়িয়া গ্রামের কৃষক হায়দার আলী বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কী বীজ যে দিয়েছে বুঝতে পারছি না। দেড় মাস হলো পাটের বয়স, এখনই ফুল ধরে গেছে, পাট আর বাড়ছে না। দুই বিঘা জমিতে বপন করেছি। অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। পাশের আইলের পাট অনেক বড় হয়েছে আর আগাম পাট বাড়ছে না। লাভ তো দূরের কথা দুই বিঘায় প্রায় ৩০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়ে গেল।
হাদার আলীর মতো ক্ষতির মুখে পড়েছেন ইউনুস আলী, শরীফ আশরাফুল ও সামাদসহ অনেকেই। কৃষক ইউনুস আলী বলেন, সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দুই বিঘা জমির জন্য পাটবীজ দেয়। ওই বীজ সময় মতো বপন করা হয়। প্রথম দিকে বীজ থেকে চারা গজালেও এখনই ফুল। আর বাড়ছেও না। জমি চাষ ও পরিচর্যা করে আর লিজ খরচ মিলে প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আবার এখন অন্য কোনো ফসলও সেই জমিতে চাষ করার সুযোগ নেই।
কৃষক সামাদ বলেন, কৃষি অফিস কোনো খোঁজখবর নেয় না বা পরামর্শও দেয় না। অভিযোগ করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। সার ও কীটনাশক দিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।
সাহারবাটি ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে বিএডিসির দেয়া বীজ সাহারবাটি ইউনিয়নের ৫৬০ জন চাষির মধ্যে বিতরণ করা হয়। সবাই অভিযোগ করছেন তাদের পাটক্ষেতে ফুল ও ফল ধরেছে, গাছ বাড়ছে না। এতে মোটা অঙ্কের টাকা ক্ষতি হচ্ছে তাদের। এ নিয়ে উপজেলা সমন্বয় সভায় আলোচনা করা হয়েছে। বৃষ্টি হলে ফুল ঝরে যাবে বলে দাবি করা হয়েছে। চাষি যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে আগামীতে কেউ বিএডিসির পাটবীজ নেবে না।
এমন ঘটনার কারণ জানতে বিএডিসির উপপরিচালক শামীম হায়দারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, এটা আমাদের সেক্টর না। আপনি কুষ্টিয়ায় যোগাযোগ করতে পারেন। বিএডিসি (বীজ) কুষ্ঠিয়ার আঞ্চলিক অফিসে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও সবকটি নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে কৃষি অফিসের দাবি, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলে এ সমস্যা থাকবে না।
এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এমনটি হয়েছে। বেশি বৃষ্টিপাত হলে সমস্যার সমাধান হবে। কোনো সার বা কীটনাশকে এর সমাধান নেই বলেও জানান তিনি। কৃষি অফিস কোনো পরামর্শ দিচ্ছে না এমন অভিযোগের ব্যাপারে কোনো বক্তব্য দেননি ওই কর্মকর্তা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়