রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় দুজনের অস্বাভাবিক মৃত্যু

আগের সংবাদ

সিসিক মেয়রের প্রতি প্রধানমন্ত্রী : মেয়র নয়, সেবক হিসেবে কাজ কর

পরের সংবাদ

ঢাকা চেম্বার সভাপতি সামীর সাত্তার : অর্থনীতির ঝুঁকি মোকাবিলায় কার্যকর ব্যবস্থাপনা জরুরি

প্রকাশিত: জুন ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : শিল্প খাত আমাদের অর্থনীতির প্রাণ, তাই অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে শিল্পের পাশাপাশি জনজীবনে যে কেনো দুর্যোগ মোকাবিলায় কার্যকর সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ ও এর বাস্তবায়ন একান্ত অপরিহার্য বলে জানিয়েছেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার।
জিডিপিতে শিল্প খাতের অবদান প্রায় ৩৬ শতাংশ উল্লেখ করে তিনি বলেন- সামগ্রিক অর্থনীতিকে সব ধরনের দূর্যোগের ঝুঁঁকি মোকাবিলায় কার্যকর উদ্যোগ নেয়া জরুরি। তথ্য-প্রযুক্তির বর্তমান সময়ে যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতকরণের কোন বিকল্প নেই। এ ধরনের প্রযুক্তি ও অবকাঠামো নির্মানে বেসরকারি খাতকে উৎসাহিতকরণে আর্থিক ও নীতিসহায়তা একান্ত অপরিহার্য।
গতকাল শনিবার রাজধানীর রেডিসন হোটেলের বলরুমে আয়োজিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ’ শীর্ষক জাতীয় সিম্পোজিয়ামে সামির সাত্তার এসব কথা বলেন। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এবং সুপার প্রজক্টে কনসোরটিয়াম যৌথভাবে এ সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম সিম্পোজিয়ামে বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগদান করেন। এছাড়াও এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ, ইউনাইটেড পারপাস এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন যৌথভাবে ‘সুপার প্রজক্টে কনসোরটিয়াম’ বাস্তবায়ন করছে, যার সহায়তায় রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সিভিল প্রটেকশন এন্ড হিউম্যানিটারিয়ান এইড। অনুষ্ঠানে প্রাইভেট সেক্টর ইমারজেন্সি অপরাশেন সেন্টারের (পিইওসি) ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করা হয়, যেখানে দুর্যোগ মোকাবিলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের তথ্যাদি এবং অগ্নি নির্বাপনে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির ব্যবহার ও প্রাপ্তির বিভিন্ন তথ্য সমন্বিত করা হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে প্রায় ৪০০ স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে, যারা যে কোনো অনাকাক্সিক্ষত দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করবে। এছাড়া সিটি করপোরেশনের পক্ষ হতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ ও ড্রিলের উপর অধিকহারে মনোনিবেশ করা হচ্ছে। তিনি জানান, সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমেই দুর্যোগ মোকাবিলা করা সম্ভব। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘প্রাইভেট সেক্টর ইমারজেন্সি অপরাশেন সেন্টার (পিইওসি)’র ওয়েবসাইটি দুর্যোগ বিষয়ক তথ্য প্রদানের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, জনজীবন ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে শিল্প-কারখানা, অফিস-আদালত ও বসত বাড়ি প্রভৃতি ক্ষেত্রে ফায়ার ড্রিল বাস্তবায়ন এবং বিশেষ করে ঢাকা শহরে অনাকাক্সিক্ষত দুর্যোগ প্রতিরোধ বিদ্যুৎ, পানিসহ অন্যান্য সেবা সংযোগের ম্যাপিং খুবই জরুরি। তিনি বলেন, তৈরি পোশাক খাতের ফ্যাক্টরিসমূহে কমপ্লায়েন্সের বিষয়টিকে প্রাধান্য প্রদান করা হয়েছে, ফলে আন্তর্জাতিক মানের কারখানা বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে এবং অন্যান্য শিল্পখাতেও এ ধরনের উদাহরন অনুসরণ করা প্রয়োজন। এছাড়াও বেসরকারিখাতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা গ্রহণকে উৎসাহিতকরণের লক্ষে এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্বল্পসুদে ঋণ প্রদানসহ প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া নিরাপদ ভবন নির্মাণ নিশ্চিতকল্পে বিল্ডিং কোড অনুসরণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জীবনের সঙ্গে ঝুঁকি ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। তাই যে কোনো ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার ও বেসরকারি খাতের সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে একটি সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়নের কোনো বিকল্প নেই। তিনি আরো বলেন- যে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় তথ্য-প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ক্রমশই ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। সম্ভাবনাময় অর্থনীতির বৃহত্তর স্বার্থে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। তাই শুধুমাত্র ঢাকা নয় বরং সমগ্র বাংলাদেশের ঝুঁঁকি মোকাবিলায় একটি সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা জরুরি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের তৈরি পোশাক খাতে বিশ্বমানের কমপ্লায়েন্স অনুসরণ করা হচ্ছে এবং শিল্পের অন্যান্য খাতেও এ ধরনের কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা জরুরী। সরকার গৃহীত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে বিভিন্ন বাণিজ্য সংগঠন ও এসোসিয়েশন সমূহকে সম্পৃক্তকরণের পাশাপাশি জনগন ও শিল্প মালিকদের সচেতনতা বৃদ্ধির উপরও জোরারোপ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার দক্ষতা ও সক্ষমতা আনায়নের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের উপর জোর দেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়