পররাষ্ট্রমন্ত্রী : সোমবার ২৮৫ বিজিপি সদস্যকে ফিরিয়ে নেবে মিয়ানমার

আগের সংবাদ

সাপ্তাহিক পুঁজিবাজার পর্যালোচনা : পতনের মধ্যেও মূলধনে উল্লম্ফন

প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ঈদের পর গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসেই দেশের পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে। সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। এরপরও সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন সাড়ে ২১ হাজার কোটি টাকার বেশি বেড়েছে।
এর আগে ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগে দুই মাসের বেশি সময় ধরে পতনের মধ্যে থাকে পুঁজিবাজারে। এতে ডিএসইর বাজার মূলধন এক লাখ কোটি টাকার ওপরে কমে যায়। তবে ঈদের আগে শেষ চার কার্যদিবস কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকে বাজার। অবশ্য তাতে খুব একটা উপকার হয়নি বিনিয়োগকারীদের। ঈদে বড় ধরনের ক্ষতির মধ্যে থেকেই যান বিনিয়োগকারীরা। আর ঈদের পর আবার পুঁজিবাজারে টানা দরপতন দেখা যাচ্ছে।
পতন প্রবণতা শুরু হয় চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারির পর থেকে। দীর্ঘদিন ফ্লোর প্রাইস দিয়ে শেয়ার দাম এক জায়গা আটকে রাখার পর গত ১৮ জানুয়ারি ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এরপর বড় ধাক্কা লাগে। পরিস্থিতি সামলে যখন পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল, ঠিক সেই সময়ে জেড গ্রুপ নিয়ে বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, যা পতন ত্বরাণিত করে।
ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগে পতন থেকে বেরিয়ে আসার আভাস দেয় পুঁজিবাজার। তবে ঈদের ছুটি শেষে পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার আগেই ইসরায়েলের ওপর নজিরবিহীন রকেট হামলা করে ইরান। এতে অস্থিরতা সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি হয়। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে পুঁজিবাজারেও। ফলে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসেই পতন দেখতে হয় বিনিয়োগকারীদের। গত ১৭ জানুয়ারি ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা। ধারাবাহিকভাবে কমে ঈদের আগে শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে সেই বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ অব্যাহত পতনের মধ্যে পড়ে ডিএসইর বাজার মূলধন হারায় ১ লাখ ৩ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা।
আর ঈদের পর বড় দরপতন হলেও গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২১ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা। গত সপ্তাহের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা। অবশ্য এরপরও ১৭ জানুয়ারির সঙ্গে তুলনা করলে ডিএসইর বাজার মূলধন এখনো ৮২ হাজার ১২৪ কোটি টাকার ওপরে কম রয়েছে।
গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসেই অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৮৯টি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৮৫টির। আর ২১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৭৭ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ৪৭ দশমিক ৮১ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আর ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ৩৫ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
সবকটি মূল্যসূচক কমলেও লেনদেনের গতি কিছুটা বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৭৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৩৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৪৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বা ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের শেয়ার। দৈনিক গড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৯১ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার দৈনিক গড়ে লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৭ লাখ টাকা। ১৬ কোটি ৮ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ।
৩৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেবে ডাচ-বাংলা ব্যাংক : দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান ডাচ-বাংলা ব্যাংক তাদের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৩৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে সাড়ে ১৭ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ও সাড়ে ১৭ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ আকারে দেবে। গত ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হওয়া সর্বশেষ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারধারীদের এ লভ্যাংশ দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। সম্প্রতি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ডিএসই জানায়, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে মোট ৩৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়ার বিষয়ে সুপারিশ করেছে। সর্বশেষ হিসাব বছরে ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১০ টাকা ৭২ পয়সা; যা ২০২২ সালে ছিল ৭ টাকা ৫৭ পয়সা।
সমাপ্ত হিসাব বছরে ব্যাংকটির পুনর্মূল্যায়নকৃত শেয়ারপ্রতি প্রকৃত সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ৬৪ টাকা ৪১ পয়সা। এটি ২০২২ সালে ছিল ৫৫ টাকা ৬৭ পয়সা। এছাড়া গত বছর ডাচ-বাংলা ব্যাংকের নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো পার শেয়ার বা শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থের প্রবাহ হয়েছে ১৩ টাকা ২ পয়সা; যা এর আগের বছর ছিল ২৮ টাকা ৩৭ পয়সা। ঘোষিত লভ্যাংশ অনুমোদনের জন্য আগামী ৯ জুন ব্যাংকটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৯ মে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়