কাগজ প্রতিবেদক : স্বার্থান্বেষী মহলের অতিলোভে ‘জ্বালানি ব্যবস্থায়’ অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে। তাই পরিবেশবান্ধব নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবস্থায় সরকার ও সমাজের আগ্রহ বাড়ছে। এমন অভিমত প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) আয়োজিত ‘বাজেটে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু খাত : বরাদ্দ বিশ্লেষণ ও আগামীর পথনকশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
বাপার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং বাপা নির্বাহী কমিটির সদস্য জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম শহিদুল ইসলাম, সহসভাপতি অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক, অধ্যাপক এম. ফিরোজ আহমেদ, ড. নজরুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব প্রমুুখ। মূল প্রবন্ধে ড. আতিউর রহমান বলেন, প্রচলিত জীবাশ্ম জ্বালানিতেই সমাধান মিলবে- এ ধারণা ভুল। জ্বালানি সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য বাস্তব নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকেই আমাদের যেতে হবে।
গবেষণা খাতে বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততার কারণে কৃষি উৎপাদন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। দেশের কৃষি বিজ্ঞানীরা গবেষণার মাধ্যমে জলবায়ুসহিষ্ণু ধান, গম, ডাল ও সবজির বীজ আবিষ্কার করেছেন। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কমিউনিটি পর্যায়ে আরো গভীরতর গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত অর্থের জোগান দেয়ার প্রয়োজন আছে।
মন্ত্রিপরিষদ সভায় বালুমহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) আইনের খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, শিল্পায়ন ও উন্নয়নের চাপ থেকে কৃষি জমি রক্ষা করাও পরিবেশ সংরক্ষণের মধ্যেই পড়ে। আগের আইনে মাটি বা বালু তোলা নিষিদ্ধ এলাকার মধ্যে ফসলি জমি অন্তর্ভুক্ত ছিল না। নতুন আইনের খসড়ায় ফসলি জমিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফলে ফসলি জমি থেকেও মাটি ও বালি উত্তোলন করা যাবে না। নদী পথের নাব্য বিনষ্ট হতে পারে এমন স্থান থেকেও বালু বা মাটি তোলা যাবে না। বালু পরিবহনের কারণে কোনো রাস্তা বা স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ইজারাদারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে নতুন আইনে বলা আছে।
অধ্যাপক এম শহিদুল ইসলাম বলেন, বাইরের দেশের পরামর্শ নিয়ে আমরা উন্নয়ন কাজ করি। বিদেশের পরামর্শে ‘হোয়াইট গোল্ড’ তথা চিংড়ি চাষের নামে চট্টগ্রামের চকরিয়া সুন্দরবন ধ্বংস করা হয়। চিংড়ি তো উৎপাদন হয়নি বরং এখন সেখানে বালুর মরুভূমি। প্রকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করা হয়েছে। অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, শিক্ষা, কৃষি, পরিবেশ খাতে গত বছরের চেয়ে বাজেটের বরাদ্দ কমেছে। কিন্তু লুটপাট যেখানে হয় সেখানে বাজেটে বরাদ্দ বাড়ছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।