পাগলায় মানববন্ধন : মন্দিরের জায়গা উদ্ধারের দাবি

আগের সংবাদ

স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না যুক্তরাষ্ট্র : মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর

পরের সংবাদ

টেকনাফে ৫ দিন পর অপহৃত শিশু উদ্ধার, আটক ৪

প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জাবেদ ইকবাল চৌধুরী,কক্সবাজার (দক্ষিণ) থেকে : টেকনাফে ৫ দিন পর অপহৃত শিশু খায়রুল আমিনকে (১২) উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে উপজেলার হৃীলার নাইক্ষ্যংখালী মৌলভীবাজারের মো. ইউনুসের ছেলে এবং মৌলভীবাজার ইসলামিক আজিয়া ফয়জুল উলুম হিফজ খানার শিক্ষার্থী। গতকাল বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পাহাড়ের ভেতর ভিকটিমকে পাওয়া যায়।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মো. আবদুল হালিমের পাঠানো প্রেস নোটে জানানো হয়, গত শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে হ্নীলা বাজার থেকে রঙ্গিখালীতে বন্ধু ফরহাদের বাসায় যাওয়ার জন্য জনৈক আলমের টমটম গাড়িতে ওঠে খায়রুল। পানখালী যাওয়ার পথে খায়রুল আমিনের দেখা হয় বন্ধু ফরহাদের (১২) সঙ্গে। ফরহাদ তাকে তার বাসায় যেতে বলে এবং সে কিছুক্ষণ পর হ্নীলা বাজার থেকে আসবে বলে জানায়।
খায়রুল আমিনকে নিয়ে টমটমের ড্রাইভার আলম পানখালী যাওয়ার পথে কৌশলে তার এক সহযোগীকে গাড়িতে তোলে। পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক খায়রুল আমিনকে টমটম গাড়ি রঙ্গিখালী পাহাড়ের ঢালে নিয়ে যায়। সেখানে খায়রুল আমিনের হাত বেঁধে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। কিছুক্ষণ পর টমটম ড্রাইভার আলম তার গাড়ি নিয়ে সেখান থেকে চলে আসে। ওই দিন রাত ১০টার দিকে ভিকটিম খায়রুল আমিনকে পাহাড়ের উপরে তুলে অবস্থান করতে থাকে এবং রাত ১ টার দিকে তাকে নিয়ে একজন অপহরণকারীর বাড়িতে চলে আসে।
ভিকটিম খায়রুল আমিনকে অপহরণকারী তার বাড়িতে নিয়ে আসলে ধৃত আজিজা খাতুন ভিকটিম এবং তার স্বামীকে খাবার খেতে দেয় এবং তার বাড়িতে রাতে আটক রাখে। ১৭ জুন ভোরে ফজরের আজানের সময় টম টম ড্রাইভার আলমের গাড়িতে করে অপহরণকারীরা ভিকটিমকে পাহাড়ের পাদদেশে নিয়ে পুনরায় পাহাড়ের উপরে উঠে অবস্থান করতে থাকে এবং রাত ১০টার দিকে অপহরণকারীরা ভিকটিমকে সামনে রেখে তার মায়ের মোবাইলে ফোন করে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এ সময় অপহরণকারীরা গাছের ডাল দিয়ে মারধর করে ভিকটিমের কান্না তার মাকে শোনায়।
ভিকটিমের মামা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করার পর বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নেয়া হয়। অপহরণকারীদের অবস্থান জেনে স্থানীয় লোকজন ও গ্রাম পুলিশের সহায়তায় দফায় দফায় পাহাড়ের উপর বিভিন্ন ঘরবাড়ি তল্লাশি করা হয়। অপহরণকারীরা অত্যন্ত সুচতুর হওয়ায় বার বার অবস্থান পরিবর্তন করতে থাকে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলামের দিক-নির্দেশনায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) রাসেলের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে টেকনাফ থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক (অপস) সহ অফিসার ফোর্সের একটি চৌকস অভিযানিক দল সার্বক্ষনিক উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টমটম ড্রাইভার আলমকে আটক করে ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য পাহাড়ের উপর অভিযানের একপর্যায়ে গতকাল বুধবার ভোর ৫টার দিকে পাহাড়ের উপর ভিকটিমসহ অপহরণকারীদের সন্ধান পায় পুলিশ। এ সময় পুলিশ সদস্যরা তাদের তাড়া করলে অপহরণকারীরা ভিকটিম খায়রুল আমিনকে রেখে পালিয়ে যায়। পুলিশ সকাল সাড়ে ৫টার দিকে ভিকটিম খায়রুল আমিনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় জড়িত অপহরণকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং ভিকটিমকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় হ্নীলা ইউনিয়নের মরিচ্যাঘোনা বড়বিল এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে মো. আলম (২৭), মৃত ইজ্জত আলীর ছেলে আহম্মদ হোসেন (৫২), আহম্মদ হোসেনের ছেলে মো. পারভেজ (২০) ও সাইফুল ইসলামের স্ত্রী আজিজা খাতুনকে (২১) আটক করা হয়। এ ঘটনার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান ওসি মো আবদুল হালিম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়