পাগলায় মানববন্ধন : মন্দিরের জায়গা উদ্ধারের দাবি

আগের সংবাদ

স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না যুক্তরাষ্ট্র : মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর

পরের সংবাদ

চট্টগ্রামে পুকুর উদ্ধারে সচেষ্ট জেলা প্রশাসন

প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সমরেশ বৈদ্য, চট্টগ্রাম থেকে : চট্টগ্রামে অবৈধভাবে ভরাট করে ফেলা হচ্ছে পুকুর-দীঘি-জলাশয়। এগুলো রক্ষার দায়িত্ব যথাক্রমে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ, পরিবেশ অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিসের হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রহস্যজনকভাবে নীরব ভূমিকা পালন করছে। এলাকার উপকারভোগী নাগরিকদের দায়িত্ব আরো বেশি। তবে বাস্তবে এর উল্টো চিত্রই পাওয়া যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাময়িক লাভের আশায় অনেকে এসব জলাশয় ভরাট করে ফেলছেন। এত সব নেতিবাচক কার্যকলাপের মধ্যেও কিছু সুখবর পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি একটি পুকুর ভরাটের পাঁয়তারার বিরুদ্ধে এগিয়ে এসেছে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন।
চট্টগ্রাম জেলার অপেক্ষাকৃত নবীন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান তার তারুণ্যদীপ্ত একঝাঁক কর্মকর্তা নিয়ে মাঠে নেমেছেন। চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসনের দায়িত্ব নিয়েই তিনি সাহসের সঙ্গে বেশ কিছু অভিযান পরিচালনা করে সাধারণ নগরবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন। এরই মধ্যে ভোগ্যপণ্য ও ওষুধে ভেজাল দেয়ার বিরুদ্ধে তারা কাজ করেছেন। বেদখল হয়ে যাওয়া বেশ কিছু সরকারি জায়গাও এরই মধ্যে উদ্ধার করেছেন। পণ্যের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম প্রশংসা অর্জন করেছে। নগরী ও জেলার বিভিন্ন স্থানে বেদখল হয়ে যাওয়া শত শত কোটি টাকার খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে। চট্টগ্রাম কলেজের আশপাশের এলাকায় জামায়াত-শিবির নেতাকর্মী সরকারি জমি ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জমি অবৈধভাবে দখলে নিয়ে নির্বিঘেœ কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করে আসছিল। ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ (ইসকপ) ও একটি কোচিং সেন্টারের নামে সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডও পরিচালিত হতো। জেলা প্রশাসনের সাহসী ও সঠিক সিদ্ধান্তের ফলে এসব মূল্যবান জায়গাই শুধু অবমুক্ত হয়নি, একই সঙ্গে দেশ ও সমাজবিরোধী ষড়যন্ত্রের দুটি মূল জায়গা আপাতত বন্ধ হয়েছে।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম মহানগরীর উত্তর কাট্টলী এলাকার কালীবাড়ির ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী পুকুরটি ভরাটের কাজ চলছিল। জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের নজরে বিষয়টি এলে তিনি প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেন। এরই মধ্যে কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এই অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের ৩ দিনের মধ্যে ভরাটকৃত মাটি সরাতে বলেন। গত মঙ্গলবার থেকে এই শতবর্ষী পুকুরে অবৈধভাবে ভরাট করা মাটি সরানো শুরু হয়েছে।
উমর ফারুক জানান, দিয়ারা ৭৭৪ দাগে প্রায় ৫০ শতক জমির ওপর পুকুরটিতে তুষার সেনের ছেলে প্রান্ত সেন ও পিতাম্বর সেন এবং জালাল উদ্দিনের ছেলে মো. জহিরুল ইসলাম মিজান প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ এর বিধান না মেনে সরকারের বিনা অনুমতিতে মাটি ভরাট করছিলেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় তাদের তখনই পুকুর ভরাট বন্ধ করে পরবর্তী ৩ দিনের মধ্যে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেয়া হয়। এর পর মঙ্গলবার থেকে পুকুর খননের কাজ শুরু হওয়ায় কাট্টলী সুরক্ষা পরিষদ ও এলাকাবাসী জেলা প্রশাসকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। আইন অমান্য করে পুকুর ভরাটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়াও চলছে।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, বিনা অনুমতিতে কেউ পুকুর ভরাট করে ভিটি বা অন্য কোনো শ্রেণিতে রূপান্তর করতে পারে না। কেউ এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে পরিবেশ বিনষ্টকারী হিসেবে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এভাবে নগরী ও জেলার কোথাও যদি পরিবেশ বিনষ্ট, প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে সার্বিকভাবে পরিবেশের ও জনগণের ক্ষতি করে কোনো কাজ করলে তা জেলা প্রশাসনকে দ্রুত জানানোর অনুরোধ জানান। পাশাপাশি স্থানীয় সচেতন নাগরিকদেরও এসব ব্যাপারে প্রতিবাদী-প্রতিরোধী ভূমিকা পালনেরও আহ্বান জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়