চট্টগ্রাম অফিস : তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও তার পরিবারের সদস্যদের জড়িয়ে মিথ্যা, বানোয়াট তথ্যসংবলিত একটি ভিডিও ইউটিউব ও ফেসবুকে আপলোড করার দায়ে কানাডা প্রবাসী নাজমুস সাকিব নামে কথিত এক সাংবাদিককে প্রধান আসামি করে ৮ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। যারা ওই ভিডিওতে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার করেছেন এবং ভবিষ্যতেও শেয়ার করবেন তাদেরও আসামি করা হবে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ২৫(২)/২৬(২)/২৯(১)/৩৫ ধারায় গত রবিবার রাতে চট্টগ্রামের চকবাজার থানায় মামলাটি দায়ের করেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবলীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে এই ভিডিও ইউটিউব ও ফেসবুকে আপলোড করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। তিন দিন আগে ‘নাগরিক টিভি’ নামে ফেসবুক-ইউটিউব পেজে তথ্যমন্ত্রীর কথিত দুর্নীতির ভিডিওটি আপলোড করা হয়। এ ঘটনায় নাগরিক টিভির অ্যাডমিন মার্কিন প্রবাসী ইউটিউবার নাজমুস সাকিবসহ সাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন- এইচ এম কামাল, আজাদ শাহাদাত, সানি প্রধান, সাইফুল ইসলাম তালুকদার, খোন্দকার ইসলাম এবং হাজি হারুন রশিদ।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন- আমার প্রিয় নেতা ড. হাছান মাহমুদ এমপিকে রাজনৈতিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়ভাবে, হেয়প্রতিপন্ন, মানহানি ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার কু-মানসে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনপূর্বক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ‘নাগরিক টিভি’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ থেকে প্রিয় নেতার ছবি সংবলিত নাম উল্লেখ করে ১৩ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ আপলোড করে। প্রকৃতপক্ষে, উল্লিখিত ছবি সংবলিত ভিডিওটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, ষড়যন্ত্রমূলক, মানহানিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রকৃত অর্থে এটা কোনো টিভি চ্যানেল নয়, একটি ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ মাত্র। তাদের উল্লিখিত কর্মকাণ্ডের কারণে বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত প্রকৃত নাগরিক টিভি কর্তৃপক্ষ আসামির পরিচালিত ভুয়া ও অবৈধ নামধারী নাগরিক টিভির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই মর্মে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি ইতোমধ্যে প্রচার করেছে। যারা ওই ভিডিওতে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার করেছেন এবং ভবিষ্যতেও শেয়ার করবেন তাদেরও আসামি করা হবে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। নাগরিক টিভির ফেসবুক পেজে দেখা যায়, ভিডিওটিতে ৭২ হাজার মানুষ লাইক দিয়েছেন। ভিডিওটি শেয়ার করেছেন ৩০ হাজার মানুষ, কমেন্ট করেছেন ২ হাজার ৩০০ মানুষ। এছাড়া নাগরিক টিভির ইউটিউব পেজে ভিডিওটিতে লাইক দিয়েছেন ১১ হাজার সাবস্ক্রাইবার, কমেন্ট করেছেন ৯৩৫ জন। সে হিসেবে মামলার আসামি হবেন লক্ষাধিক মানুষ।
চকবাজার থানার ওসি মঞ্জুর কাদের মজুমদার বলেন, আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে মামলার বিষয়টি দেখছি। এই ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলটির অ্যাডমিন নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বেও এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তার বিরুদ্ধে আরো মামলা রয়েছে। এছাড়া লন্ডনে বসে বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টাকারী একটি মহলের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যোগাযোগ রয়েছে। তার স্থায়ী ঠিকানা ঢাকার বাসাবোতে ও গ্রামের বাড়ি রংপুর। আমরা বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছি।