মশার লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপ ও ম্যাপিং কার্যক্রম শুরু আজ

আগের সংবাদ

ভূ-রাজনীতির নতুন ক্ষেত্র ‘ব্রিকস’ : যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন মাত্রা

পরের সংবাদ

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ

প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. সাজ্জাদ হোসেন শাহ্, সুনামগঞ্জ থেকে : সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম ধানুর বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্চাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। তিনি ২৫ বছর ধরে বিদ্যালয়ের আয়ের টাকা লুটপাট করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রবিবার এসব অভিযোগের প্রতিকার চেয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আমির শাহ্ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পরিচালনা কমিটির সভাপতি এর আগেও প্রধান শিক্ষকের এহেন কর্মকাণ্ডের প্রতিকার চেয়ে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এরপরও প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম নির্বিঘেœই চালিয়ে যাচ্ছেন তার দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্চাচারিতা। শুধু তাই নয়, নিজের অপকর্ম ঢাকতে পরিচালনা কমিটির সভাপিত আমির শাহ্কে সামাজিকভাবে হেয় করতে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে কয়েকটি স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশ করিয়েছেন প্রধান শিক্ষক।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়টিতে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১৮শ শিক্ষার্থী রয়েছে, যাদের কাছ থেকে প্রতি মাসে বেতন আদায় করা হয়। বাদাঘাট বাজার কলেজ রোডে বিদ্যালয়ের জমিতে ২১টি বাণিজ্যিক দোকান রয়েছে যা থেকে প্রতি মাসে প্রায় ১ লাখ টাকা ভাড়া তোলা হয়। এছাড়া বিদ্যালয়ের সামনে-পেছনে প্রায় এক একর জমি রয়েছে যা প্রতি বছরই বর্গা দেয়া হয়। এ জমি থেকেও বছরে আয় হয় ২ লক্ষাধিক টাকা।
অভিযোগে আরো বলা হয়, নিয়মানুযায়ী পরিচালনা কমিটির তিন সদস্যের কাছে বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব দেয়ার নিয়ম থাকলেও প্রধান শিক্ষক মাসের পর মাস কোনো হিসাব না দিয়ে শুধু সময় পার করে যাচ্ছেন। সবশেষ গত বছরের ২০ আগস্ট এক সভায় প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ের হিসাব জানাতে বললে তিনি এক সপ্তাহের মধ্যে হিসাব দেবেন বলে জানান সভায়। কিন্তু ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম ধানু পরিচালনা কমিটিকে কোনো ধরনের হিসেব দেননি। জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করে কোনো প্রতিকার না পেয়ে প্রধান শিক্ষকের এসব দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্চাচারিতা, বিদ্যালয়ের আয়ের টাকার হিসাব না দেয়া এবং গত পঁচিশ বছরে একবারও অভিভাবক সমাবেশ না ডাকা, সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে না এসে মাসের ৬ তারিখে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ১ তারিখের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করা, বিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সরকারি বই সরিয়ে ৩ মাস পর চুরির নাটক সাজানো, পরিক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন না করে বাজার থেকে কিনে পরিক্ষা নেয়ার বিষয়গুলো জানিয়ে এলাকাবাসীর অবগতির জন্য গত শুক্রবার রাতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আমির শাহ্ তার নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট দিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য আজিজুর রহমান বলেন, প্রতি মাসে একটি সভা করার কথা থাকলেও তিনি সভা করেন ২-৩ মাসে একবার। সভায় আমরা বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব চাইলে তিনি শুধু আজ না আগামী সভায় দেবেন বলেন।
অপর অভিভাবক সদস্য সিরাজ মিয়া বলেন, বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয় এবং দোকান ভাড়া, বর্গা দেয়া জমির টাকার হিসাব চাইলে তিনি শুধু কালক্ষেপণ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক এক সদস্য বলেন, আমরা কমিটিতে থাকাকালেও একাধিকবার বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব চেয়ে কোনোদিন পাইনি। হিসাব চাইলেই তিনি এ মাসে না আগামী মাসে দেবেন বলে শুধু সময় পার করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম ধানুর মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বার্হী অফিসারের দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশান (ভূমি) মো. আসাদুজ্জামান রনি অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ইউএনও দেশের বাইরে আছেন। তিনি এলে তদন্ত করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়