মশার লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপ ও ম্যাপিং কার্যক্রম শুরু আজ

আগের সংবাদ

ভূ-রাজনীতির নতুন ক্ষেত্র ‘ব্রিকস’ : যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন মাত্রা

পরের সংবাদ

নোয়াখালীতে আশ্রয়ণ : উদ্বোধনের পরও ঘর বুঝে পাননি উপকারভোগীরা

প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মোহাম্মদ সোহেল, নোয়াখালী থেকে : নোয়াখালী সদর উপজেলায় ভূমিহীন-গৃহহীনদের জন্য নির্মিত চতুর্থ ধাপের ৪৩৫টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করলেও এখনো দেড় শতাধিক পরিবার তাদের ঘর বুঝে পায়নি। এতে আগের মতোই বঞ্চনার শিকার হয়ে ঝড়-বৃষ্টিতে মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২২ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে সারাদেশে একযোগে ভূমিহীন-গৃহহীনদের জন্য নির্মিত চতুর্থ ধাপের ৩৯ হাজার ৩৬৫টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে নোয়াখালীতে ১১৭০টি পরিবারের মাঝেও জমির দলিল হস্তান্তর করা হয়। সদর উপজেলায় এই ধাপে ঘর পাওয়া উপকারভোগীর সংখ্যা ৪৩৫ পরিবার। এর মধ্যে দেড় শতাধিক ঘরের কাজ এখনো চলমান রয়েছে।
সরজমিন সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের চরদরবেশ গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে ভূমিহীন-গৃহহীনদের জন্য নির্মিত ৮০টি ঘর। ঘরগুলোর কাজ এখনো শেষ হয়নি। ঘরগুলো কবে, কখন বুঝে পাবেন সেজন্য আশ্রয়ণে ঘুরে ঘুরে ঘরগুলো দেখছেন নুরজাহান বেগম ও পাখি আক্তার নামের দুই উপকারভোগী। নুরজাহান বেগম জেলার সদর উপজেলার পূর্ব শুল্লুকিয়া গ্রামের বাসিন্দা। স্বামী পরিত্যক্তা নুরজাহান বেগম তিন মেয়ে, এক ছেলে নিয়ে থাকেন অন্যের বাড়িতে। সেখানে বর্ষা মৌসুমে ঝড়-বৃষ্টিতে অনেক কষ্টে বসবাস করছেন তিনি। সরকারের দেয়া আশ্রয়ণের জমির দলিল পেয়ে আনন্দে আত্মহারা নুর জাহান এখনো বুঝে পাননি ঘর। ফলে এখনো লাঘব হয়নি তার কষ্ট। তাই সময় পেলেই ছুটে যান আশ্রয়ণ প্রকল্পে। সেখানে জানতে চান কবে, কখন ওঠবেন স্বপ্নের ঘরে।
শুধু নুরজাহান বেগম নন, প্রতিনিয়তই ঘর বুঝে পাওয়ার আশায় আশ্রয়ণে ভিড় জমান পাখি আক্তার, আবদুল গনি, ইয়াসমিন আক্তারের মতো উপকারভোগীরা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘরগুলো উদ্বোধন করলেও এখনো ঘরের কাজ শেষ হয়নি। যার কারণে প্রতিনিয়িত ঘর পাওয়া উপকারভোগীরা এখানে এসে হতাশ হয়ে ফিরে যান। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তার স্বজনদের দিয়ে ঘরের কাজ করানোর কারণে কাজ করা হচ্ছে অনেকটা ধীরগতিতে। এজন্য কোনো চাপ প্রয়োগও করা হচ্ছে না। কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা।
এদিকে সহযোগী ঠিকাদারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঘরগুলোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে, এখন রঙের কাজ চলছে। কয়েক দিনের মধ্যে ঘরগুলো বুঝিয়ে দেয়া যাবে। এ বিষয়ে মিডিয়ায় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজাম উদ্দিন আহম্মেদ। তবে দেড় শতাধিক পরিবার এখনো ঘর বুঝে পাননি বলে স্বীকার করেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম। জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, কিছু ঘরের সামান্য কিছু কাজ বাকি ছিল, সেগুলো চলমান রয়েছে। দ্রুত কাজ শেষ করে উপকারভোগীদের ঘরগুলো বুঝিয়ে দেয়া হবে। অন্যের বাড়িতে কিংবা রাস্তার পাশে ঝুপড়ি ঘরে থাকা ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের সদস্যরা নিজ নামে জমির দলিল হাতে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠেন। কিন্তু উদ্বোধনের ২ মাস ২২ দিন পেরিয়ে গেলেও সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের চর দরবেশ গ্রামে ৮০টি পরিবারসহ দেড় শতাধিক উপকারভোগী পরিবার এখনো ঘর বুঝে না পেয়ে চরম হতাশা প্রকাশ করছেন। প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করে ঘরের চাবি বুঝিয়ে দিয়ে কষ্ট আর বঞ্চনার অবসান ঘটানো হবে এমনটাই প্রত্যাশা উপকারভোগীদের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়