জিএম কাদের : স্বাধীনতার ৫০ বছরেও দেশে সাংবাদিকতা অনিরাপদ

আগের সংবাদ

রাজশাহীতে লিটনকে টেক্কা দেয়ার মতো প্রতিদ্ব›দ্বী নেই

পরের সংবাদ

জনবল-ভবন নেই, বিক্ষিপ্তভাবে চলে কার্যক্রম : নামেই ‘উপজেলা’ মধ্যনগর

প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সুনামগঞ্জ ও মধ্যনগর প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলায় প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয় গত এক বছর আগে। তবে এ উপজেলায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য এখনো স্থায়ী ভবন নির্মাণ হয়নি। রয়েছে জনবল সংকটও। এতে ব্যাহত হচ্ছে প্রশাসনিক কার্যক্রম।
জানা গেছে, মধ্যনগর উপজেলা প্রশাসনের অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে মধ্যনগর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দ্বিতীয়তলা ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া ধর্মপাশা উপজেলা কার্যালয় থেকেও মধ্যনগর উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চারটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মধ্যনগর থানা। ২০২২ সালের ২৪ জুলাই মধ্যনগর উপজেলায় প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয়। তবে শুরু থেকেই প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ ও অবকাঠামোগত কাজের অগ্রগতি ছিল না। মধ্যনগর উপজেলায় মোট ২৩টি দপ্তরের ২১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিপরীতে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন মাত্র ৯ জন। এর মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা (এসও) ১ জন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী রয়েছেন ১ জন। বাকিরা তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী।
শুরুতে মধ্যনগরে একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিয়োগ দেয়া হলেও প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে তেমন কোনো প্রশাসনিক কাজ করতে পারেননি তিনি। গত ৩০ মে অন্যত্র বদলি হয়ে যান তিনি। এতে আরো থমকে যায় মধ্যনগর উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম।
এরপর ধর্মপাশা উপজেলায় কর্মরত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা, উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে মধ্যনগর উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়। তবে মধ্যনগর উপজেলায় স্থায়ী কোনো ভবন না থাকায় দাপ্তরিক কাজকর্ম ধর্মপাশা উপজেলা কার্যালয় থেকেই পরিচালিত হয়। এছাড়া তাহিরপুর উপজেলায় কর্মরত উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এবং প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরের শান্তিগঞ্জ উপজেলার যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে মধ্যনগর উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়। তবে কাগজে কলমে অতিরিক্ত দায়িত্ব থাকলেও মধ্যনগর উপজেলায় এসে ওই কর্মকর্তাদের দাপ্তরিক কোনো কর্মকাণ্ড চালাতে হয় না।
এ বিষয়ে মধ্যনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাজেদা আহমদ বলেন, মধ্যনগর উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু না হলে একটি মহল লাভবান হয়। এরা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য এই অচলাবস্থা তৈরি করে রাখতে চায়। মধ্যনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিতোষ সরকার বলেন, গত এক বছরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ছাড়া মধ্যনগর উপজেলায় আর কোনো প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ছিল না। সব কাজ ধর্মপাশা উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে মধ্যনগর উপজেলাবাসী আবারো আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।
মধ্যনগর সদর ইউপি চেয়ারম্যান সঞ্জীব রঞ্জন তালুকদার টিটু বলেন, মধ্যনগর উপজেলার কোনো দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থায়ী জনবল নিয়োগ না থাকায় মানুষকে বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজে ধর্মপাশা উপজেলায় যেতে হচ্ছে। এতে কাক্সিক্ষত সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মধ্যনগরবাসী। দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।
মধ্যনগরের ইউএনওর দায়িত্বে থাকা ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শীতেষ চন্দ্র সরকার বলেন, মধ্যনগর উপজেলায় প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে জনবল নেই। নেই প্রয়োজনীয় অবকাঠামো। ফলে প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মহিউদ্দিন বলেন, মধ্যনগর একটি নতুন উপজেলা। এখানে জনবল ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন একটু সময়ের ব্যাপার। তারপরেও এখানকার জনবল ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়