প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকদের আন্দোলন দুদিন স্থগিত : প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার আশ্বাস বিএসএমএমইউ উপাচার্যের

আগের সংবাদ

আনন্দে পাঠ উৎসবে মূল্যায়ন : ষষ্ঠ ও সপ্তমে চলছে ‘ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন উৎসব’, ঈদুল আজহার পর মূল্যায়নের বিশ্লেষণ

পরের সংবাদ

প্রশাসনের অবহেলা : রৌমারীতে ৬ বছরেও শেষ হয়নি রাস্তার কাজ, চরম দুর্ভোগ

প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : ঠিকাদারের গাফিলতি ও প্রশাসনের অবহেলার কারণে রৌমারী উপজলায় তিন কিলোমিটার রাস্তা ছয় বছরেও মেরামত হয়নি। আর কতো বছর লাগবে মেরামতের কাজ শেষ হতে এর কোনো নিশ্চয়তাও নেই। ফলে ছয় গ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ নিয়ে উপজেলা সমন্বয় সভায় রাস্তার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হাসান উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশনা দিলেও তা মানা হয়নি। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন মহল। রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের শেষের দিকে উপজেলার চর নতুন বন্দর স্থলবন্দর তুরা রাস্তা হতে সীমান্ত এলাকা দিয়ে খাটিয়ামারী কাদেরের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা মাটি ভরাট ও পাকাকরণের জন্য ২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি পায় কুড়িগ্রামের মেসার্স ছাকিব ট্রেডার্স। মেসার্স ছাকিব ট্রেডার্সের মালিক প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার প্রো. মো. আহসানুল লিটন ওই রাস্তার পাশে জিঞ্জিরাম নদীর কিনারে প্রায় ১শ গজ দৈর্ঘ্য গাইডওয়ালও নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে তিনি রাস্তার কাজ না করেই পালিয়ে যান।
২০১৯ সালে ওই রাস্তাটি মেরামতের জন্য কুড়িগ্রামের মোক্তার হোসেন নামে এক ভায়া ঠিকাদারকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি সামান্য মাটির কাজ শুরু করেই বরাদ্দকৃত বিল উত্তোলনের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেন। বিষয়টি তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) দ্বীপঙ্কর রায়কে জানান এলাকাবাসী। তখন বিল উত্তোলন বন্ধ করে দেন ইউএনও। এরপর কাজ না করে চলে যান ঠিকাদার। ২০২০ সালে স্থানীয় সাইদুর রহমান নামে এক ব্যক্তি ভায়া ঠিকাদার হিসেবে মূল ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে ওই রাস্তাটির কাজ আবারো শুরু করেন। রাস্তাটির তিন স্থানে গাইডওয়াল দেয়ার কথা থাকলেও ড্রামশিড ও বাঁশের খুঁটি দিয়ে গাইডওয়াল দেয়া হয়- যা যে কোনো সময় ভেঙে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া তিনি গাইডওয়াল ছাড়াই ৩ কিলোমিটার রাস্তা ধরেই নি¤œমানের ইটের খোয়া ফেলেন এবং খাটিয়ামারী কাদেরের বাড়ি হতে ঈদগা মাঠ পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণের কাজ শেষ করেন। তবে রাস্তার বাকি কাজ প্রায় ৪ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে।
অথচ সীমান্ত এলাকার গুরুত্বপূর্ণ ওই রাস্তাটির মেরামত কাজ শেষ না হওয়ায় টহল দিতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন বাংলাবাজার ও মোল্লার চর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা। অপরদিকে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন চান্দারচর, নওদাপাড়া, ব্যাপারীপাড়া, বোল্লাপাড়া ও খাটিয়ামারীসহ ৬টি গ্রামের প্রায় ৫ হাজার মানুষ।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের নওদাপাড়া গ্রামের মাওলানা নুরল ইসলাম জানান, রাস্তাটির কাজ অসমাপ্ত রাখায় যানবাহন ও পথচারীদের যাতায়াতে খুব কষ্ট হচ্ছে। অতিরিক্ত গাড়ি ভাড়া দিয়ে কৃষকের কষ্টার্জিত ফসল হাটে নিয়ে যেতে হচ্ছে। খাটিয়ামারী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হাকিম বলেন, রাস্তাটি মেরামতের জন্য একের পর এক ভায়া ঠিকাদারকে দায়িত্ব দিলেও কাজটি হচ্ছে না। রাস্তাটির কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি। চান্দারচর গ্রামের গোলাম রব্বানী বলেন, সরকার বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে কাজটি হচ্ছে না।
এ বিষয়ে রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী মামনুর রশিদ বলেন, ‘আমি কয়েকদিন হলো এখানে যোগদান করেছি। এ বিষয়ে কিছু জানি না। তবে এ বিষয়ে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম সারোয়ার রাব্বি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে জেনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়