হাসপাতালে খালেদা জিয়া

আগের সংবাদ

অপরাধের স্বর্গরাজ্য রোহিঙ্গা ক্যাম্প

পরের সংবাদ

সংসদে জ¦ালানি প্রতিমন্ত্রী : নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করাই বড় চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আগামীতে দেশে মানসম্মত ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেছেন, করোনা পরিস্থিতি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে প্রত্যেকটি দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে যেমন দ্রব্যমূল্য বেড়েছে, তেমনি জ¦ালানির মূল্যও বেড়েছে। স্বাভাবিক জীবযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে থেকে একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যেভাবে অর্থনীতিকে আমরা সচল রেখেছি, এরপরও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ রেখেছি এ জন্য সব ধন্যবাদ দেব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাবিত বজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এ সব কথা বলেন তিনি। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন।
নসরুল হামিদ বলেন, তিনটি চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি খাত এগুচ্ছে- রিলায়েবিলিটি, পসিবিলিটি এবং বাধাহীন বিদ্যুৎ উৎপাদন কীভাবে পাওয়া যেতে পারে। এজন্য অর্থসংস্থান বড় নয়, টেকনোলজি একটি বড় ভূমিকা পালন করবে।
তিনি বলেন, মাত্র ৭ দিন আগে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় আমরা কিছুটা হলেও সমস্যা দেখেছি, আমার ধারণা ছিল ১৫-২০ দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে একটা নিরবচ্ছিন্ন অবস্থায় আনতে পারব। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতায় আমরা মাত্র ৭ দিনের মাথায় তা করতে সক্ষম হয়েছি। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা কিছুটা সমস্যায় কারণে আমি দুঃখ প্রকাশ করেছিলাম সে সময়। এমপিরা তা অনুধাবন করতে পেরেছিলেন বলে তাদেরকে ধন্যবাদ। বিশেষ করে বিরোধীদলের সদস্যদের বলতে চাই, আগামী ২০৪১ সালে বাংলাদেশ যে একটি উন্নত সম্মৃদ্ধ দেশ হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে যাচ্ছে, এর কালক্ষেপণ লাগবে না। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ খাত, বিশেষ করে ডিজিটাল ক্ষেত্রে ২০২২ সালে ডিজিটাল পুরস্কার লাভ করেছে। শুধু তা-ই নয়, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ খেতাব স্বাধীনতা পুরস্কার শতভাগ বিদ্যুৎতায়নের জন্য আমরা লাভ করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যুৎ সঞ্চালনে বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ১৪টি প্রকল্পের মধ্যে মোট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১২ হাজার ৪১৩ দশমিক ১০ কোটি টাকা। এবারো গ্যাস অনুসন্ধানে বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আগামী ২০২৪ সাল নাগাদ ৪৬টি কূপ খননের মাধ্যমে আমরা দৈনিক ১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি। ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ হয়েছে ৩০ বিলিয়ন ডলার। জ¦ালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগে বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার ৩৭৩ বিলিয়ন ডলার।
নসরুল হামিদ বলেন, আমরা ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ¦ালানি করতে চাই। এরই মধ্যে আমরা নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনার একটা পরিকল্পনা নিয়েছি। চুক্তির জন্য সব প্রস্তুত, ওখান থেকে আমরা ৭০০ মেগাওয়াট হাইড্রোবিদ্যুৎ আনব। এজন্য ৫-৮ বছর সময় লাগে। হাইড্রোপাওয়ারের খরচ ২০ বছর একই থাকবে। যদি ডিজেল থেকে বিদ্যুৎ তৈরি করতে চাই তাতে দামের তারতম্য হয়। তাই নেপালের সঙ্গে আমরা আরো বেশি হাইড্রোপাওয়ায় পাওয়ার জন্য ফ্রেম ওয়ার্ক করেছি। তিন দেশ মিলে আমরা একটা ‘উইন উইন সিচুয়েশনে’ গিয়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন করব। ভুটান থেকেও আমরা বিদ্যুৎ আনার চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে সামনে রেখে বাজেট কর্মপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ-জ¦ালানি সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। এর জন্য ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের এই ক্রান্তিকালে একটি বড় বাজেট পেশ করেছেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, যাবে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আজ দেশের গ্রামে-গঞ্জে উন্নয়ন ঘটেছে, রাস্তাঘাটের প্রভূত উন্নতি হয়েছে। গ্রামাঞ্চলের মানুষ আজ শেখ হাসিনাকে আবারো ভোট দিয়ে ক্ষমতায় দেখতে চায়। তিনি এ সময় শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। চা শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম ১৭০ টাকা মজুরি নির্ধারণ করে দেয়ার জন্য শ্রমিকদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানান।
দীপংকর তালুকদার পার্বত্য চট্টগ্রামের অবকাঠামো উন্নয়নের কথা তুলে ধরে বলেন, রাঙ্গামাটিসহ সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ে রাস্তা-ঘাট ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় উন্নতি হয়েছে। আগের চেয়ে এখানে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে, যা বাড়ানো দরকার। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন উন্নয়নের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে সাধারণ আলোচনায় আরো অংশ নেন- আব্দুস সালাম মুর্শেদী, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, ওমর ফারুক চৌধুরী, নূরুন্নবী চৌধুরী, এনামুল হক, আনোয়ারুল আবেদীন খান, মো. সাহিদুজ্জামান, জাফর আলম, এইচ এম ইব্রাহীম ও গোলাম কিবরিয়া টিপু।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়