সংসদে বিল উত্থাপন : আমানত সুরক্ষা ট্রাস্ট তহবিল গঠন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক

আগের সংবাদ

খুলনা-বরিশালে ‘উন্নয়ন’ ম্যাজিক : খুলনার উন্নয়ন ভাবনা ও ব্যক্তি ইমেজেই খালেকের বাজিমাত

পরের সংবাদ

গোখাদ্যের দাম বাড়তি : ঘাস চাষে আগ্রহী হচ্ছে কালীগঞ্জের খামারিরা

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি : গাজীপুরের কালীগঞ্জে গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে গরুর খামারিরা। গোখাদ্য ছোলা, ভুট্টা, ভুসি, ফিড ও খড়ের দাম বেশি হওয়ায় এসব খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে কৃষকরা ঘাস চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। কৃষক ও খামারিরা গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ঘাসের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে গরু লালনপালন শুরু করেছে। এজন্য ফসল কম হয় এমন অনাবাদি জমি, বাড়ির আঙিনা, পুকুর পাড়, পতিত জায়গা ও সড়কের দুই ধারে ব্যাপকভাবে ঘাস চাষ শুরু করেছেন এলাকার অধিকাংশ কৃষক। অনেক চাষিই নিজের খামারের চাহিদা পূরণের পর অন্যের কাছে বিক্রি করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। অনেকে আবার গবাদিপশুর জন্য বাড়তি খাবার হিসেবে কাঁচা ঘাস কিনে খাওয়াচ্ছেন। এতে দুধ দেয়া গরুর দুধের পরিমাণ বেড়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জ পৌরসভাসহ উপজেলা ৭টি ইউনিয়নেই বিভিন্ন জাতের ঘাস চাষ করছেন খামারিরা। এখানে ৩১ দশমিক ৬৯ একর জমিতে উন্নত জাতের ঘাস চাষ করা হয়। আর ওই পরিমাণ জমিতে ২৯ হাজার ১৭ টন ঘাস উৎপাদন হয়। এতে খামারিরা নিজেদের খামারের ঘাসের চাষ চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত ঘাস বিক্রি করে আয়ও করছেন ভালো।
সূত্র জানায়, কালীগঞ্জে স্থায়ী ঘাস হিসেবে নেপিয়ার পারচুং-১, জাম্বু, জার্মান, পারা ও নেপিয়ার চাষ হচ্ছে। আবার মৌসুমি ঘাস হিসেবে ভুট্টা, খেসারি ও মাষকলাই ঘাস চাষ করে থাকে। ফসল ভালো হয় না এমন জমিতে অনেক কৃষক উন্নত জাতের ঘাস চাষ করে বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। স্থানীয় খামারিরা বাজারের গোখাদ্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে দিয়ে ঘাসের ওপর ঝুঁকে পড়ছে। কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর গ্রামের পঞ্চাশোর্ধ্ব মো. ফরিদ হোসেন মোড়ল বলেন, আমি সাড়ে তিন বিঘা জমির মধ্যে নেপিয়ার পারচুং-১ জাতের সবুজ চাষ করেছি। যা আমি পুকুর পাড় ও সমতল জমিতে চাষ করেছি। আমার খামারে গরুকে খাওয়ানোর পর অতিরিক্ত ঘাস বিক্রি করে বেশ ভালো আয় করছি।
একই ইউনিয়নের গোল্লারটেকের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি মূলত গরু পালন করি। আমার দুটি গরুর খামার রয়েছে। গোখাদ্যের ও খড়ের দাম বেড়ে যাওয়ায় গরু পালন করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে প্রাণিসম্পদ অফিসের পরামর্শে ও সহযোগিতায় ৩টি স্থানে ২ বিঘা জমিতে ঘাস চাষ করেছি। এতে কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হয় না বলে লাভের পরিমাণ বেশি। নিজের খামারের গোখাদ্যের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত ঘাস বিক্রি করে পোষাতে পারব বলে আশা করছি। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের অধীনস্থ প্রাণি পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের কমিউনিটি এক্সটেনশন এজেন্ট (সিইএ) আবু নাঈম বলেন, গোখাদ্যের দাম কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় কৃষকের পতিত জায়গা, অনাবাদি জমি ও বাড়ির আঙিনায় ও সড়কের ধারে, পুকুর পাড়ে উন্নত জাতের ঘাস চাষের জন্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এজন্য প্রাণিসম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে খামারিদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করছি। যে কারণে কৃষকরা ঘাস চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইউসুফ হাবীব বলেন, উপজেলার প্রায় সব খামারে দুধ দহন ও বিক্রির জন্য এসব গরু পালন করা হয়। যে পরিমাণ গোখাদ্যের দাম বেড়েছে, তাতে খামারিদের লোকসান হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিকল্প হিসেবে খামারিদের অনাবাদি জমি, পতিত জায়গায় উন্নত জাতের ঘাস চাষের পরামর্শ দিচ্ছি। কাঁচা ঘাস খেলে গরু দ্রুত বাড়ে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে। অল্প দিনে গরু সুঠাম দেহের অধিকারী হয়। উন্নত জাতের ঘাস চাষ করে কৃষক সফলতা পেলে গোখাদ্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমে যাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়