নম্বর জালিয়াতির অভিযোগ : নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে হাইকোর্টে তলব

আগের সংবাদ

ভোটের হাওয়া কোন দিকে? বরিশালে চার প্রার্থীর মধ্যে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস

পরের সংবাদ

হাইকোর্টের রায় : অর্পিত সম্পত্তির মামলা চলবে ট্রাইব্যুনালে অন্য আদালতে নয়

প্রকাশিত: জুন ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : অর্পিত সম্পত্তি নিয়ে করা সব মামলা এখন থেকে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে নিষ্পত্তি হবে। অর্পিত সম্পত্তি আইনের ধারা ৯, ১৩ এবং ১৪ এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদন খারিজ করে এ রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি নাইমা হায়দারের নেতৃৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বৃহত্তর হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
রায়ে আদালত বলেন, অর্পিত সম্পত্তি আইনের ৯, ১৩ এবং ১৪ ধারা মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি নয়। অর্পিত সম্পত্তি জেলা প্রশাসকের অধীনে থাকবে এবং জেলা প্রশাসক প্রয়োজনে লিজ দিতে পারবেন। এ সময় আদালতে রিট আবেদনের শুনানি করেন সিনিয়র এডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকি এবং এডভোকেট মো. ওমর ফারুক। ভূমি সচিবের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরসেদ, তাকে সহায়তা করেন এডভোকেট রিপন বাড়ৈ এবং সঞ্জয় মন্ডল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
খুলনার শ্যামল কুমার সিংহ রায় অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন-২০০১ এর ধারা ১৩ এবং ১৪ এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১২ সালে রিট পিটিশন দায়ের করেন। অন্যদিকে চট্টগ্রামের মো. মশিউর রহমান বেগও একই সালে পৃথক রিট আবেদন করেন। রিট আবেদনে ধারা ৯, ১৩ এবং ১৪ চ্যালেঞ্জ করেন। তারা উভয়ই তাদের দাবি করা অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন-২০০১ এর তফসিল (ক) ভুক্ত হওয়া অবৈধ বলে তা বাতিলের আবেদন করেন। রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে রুল জারি করেন আদালত। পরবর্তী সময়ে রুলের শুনানির জন্য বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করা হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রুল খারিজ করে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ ভোরের কাগজকে বলেন, আদালত রায়ে বলেছেন, আইনের ধারাগুলো সংবিধানের মৌলিক অধিকার পরিপন্থি নয়। অন্য আদালতে চলমান মামলাগুলো ‘অ্যাবেইট’ (বাতিল) হলেও বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচার হবে, তাই বাদীর অধিকার ক্ষুণ্নœ হবে না।

১৪ ধারা অনুসারে অর্পিত সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণ ডিসিদের মাধ্যমে না হলে জনগণের সম্পত্তি বেহাত হবে এবং সরকার রাজস্ব হারাবে। তাই এ ব্যবস্থা যথাযথ হয়েছে।
শুনানিতে রিট আবেদনকারীর আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকি বলেন, সম্পত্তির অধিকার একটি মৌলিক অধিকার এবং তা সংবিধান কর্তৃক সুরক্ষিত। সুতরাং রাষ্ট্র বা সরকারের কোনো কর্মকর্তা বা কোনো কর্তৃপক্ষ তা অস্বীকার করতে পারবেন না। এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্ট সব সময়ই মৌলিক অধিকারের অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে। অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন-২০০১ এর ৯, ১৩ এবং ১৪ ধারা অনুযায়ী আবেদনকারীদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। সুতরাং আইনের ওই ৩টি ধারা বাতিলযোগ্য।
এ বিষয়ে ভোরের কাগজকে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, দুটি রিট আবেদনেরই আইনগত কোনো ভিত্তি নেই।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত বলেন, রিটকরা সম্পত্তি দুটি অর্পিত সম্পত্তি। সুতরাং ‘ক’ তফসিলভুক্ত হওয়া আইনত হয়েছে। অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন-২০০১ অনুযায়ী তাদের প্রতিকার ট্রাইবুনাল দিতে পারেন। সুতরাং রিট আবেদন দুটি খারিজযোগ্য। ধারা ১৩ অনুসারে দেওয়ানি মামলা অ্যাবেইটমেন্ট হলে তাদের কোনো ক্ষতির কারণ নেই। কারণ সব প্রতিকার ট্রাইব্যুনালই দিতে পারে।
প্রকৃত মালিকদের জমি ফেরত দিতে ২০০১ সালে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন প্রণয়ন করে সরকার। অবশ্য এর আগেই অর্পিত সম্পত্তি নিয়ে লাখ লাখ মামলা দায়ের করা হয়।
১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় যারা এ দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে চলে যান তাদের সম্পত্তিকে শত্রæ সম্পতি হিসেবে ঘোষণা করে তৎকালীন সরকার। পরে ১৯৭৪ সালে সেই সব সম্পত্তিকেই অর্পিত সম্পত্তি ঘোষণা করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়