কাগজ প্রতিবেদক : তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন, বর্তমান সরকারই আগামী নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব সমুদ্র দিবস উপলক্ষে সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগ আয়োজিত সেমিনারে অংশ নেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তথ্যমন্ত্রী।
স¤প্রচারমন্ত্রী বলেন, বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আন্তর্জাতিকভাবে কারো সমর্থন পায়নি। তাই এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাদ দিয়ে ‘নিরপেক্ষ’ সরকারের কথা বলছে তারা। তারা যে সব দেশের হাতে-পায়ে ধরে, সে সব দেশে যেভাবে চলতি সরকার নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে, আমাদের দেশেও ঠিক তাই হবে।
বিদ্যুৎ সরবরাহে সময়ে সময়ে ছেদ নিয়ে বিএনপির সমালোচনার জবাবে ড. হাছান বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেবরা বড় গলায় কথা বলেন, অথচ তারা মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে পারে নাই, বিদ্যুৎ কেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছে। মানুষকে বিদ্যুৎ দেবে বলে ছেলে-ভোলানো চকলেট আর মোয়ার মতো শুধু বিদ্যুতের খাম্বা লাগিয়েছে। আমরা মানুষকে বিদ্যুৎ দিয়েছি, মানুষের অভ্যাস পরিবর্তন হয়েছে, দেশ পরিবর্তন হয়েছে, শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। বিদ্যুতের ব্যবহার এখন বহুমাত্রিক।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি আমলে মাত্র ৩ হাজার ৬ শত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। এখন যে কোনো সময় ১৮ থেকে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের সক্ষমতা সরকারের আছে। তাদের আমলে দেশে ৪০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় ছিলো। এখন শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে।
বিদ্যুৎ সুবিধা দিয়ে মানুষের অভ্যাসের পরিবর্তন হয়েছে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষ এখন গ্রামেও এসি চালায়, মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডায় এসি চলে, প্রতিদিন হাজার হাজার ইজি বাইক ও ১৭ কোটি মানুষের দেশে সাড়ে ১৫ কোটি মোবাইল চার্জ করতে বিদ্যুৎ লাগে, এমন কি গ্রামেও রাইস কুকারে ভাত রান্না করে। অর্থাৎ বিদ্যুতের বহুমাত্রিক ব্যবহারে গত ১৪ বছরে মানুষের অভ্যাস পরিবর্তন হয়ে গেছে। মানুষকে এতো বিদ্যুৎ সুবিধা দিয়ে নিশ্চয়ই ভুল করা হয়নি, সবার খানিক ধৈর্য্যের প্রয়োজন। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, এখন বিশ্বমন্দা ও যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই অসুবিধাটা সাময়িক, ১৫-২০ দিনের মধ্যে দূর হবে।
এর আগে ব্লæ ইকোনমি’র সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন শীর্ষক সেমিনারে তথ্যমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ভারত ও মায়ানমারের সঙ্গে সমঝোতাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে প্রায় দেশের সমআয়তনের সমুদ্রসীমা অধিকার করেছি। এই সমুদ্রসম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করতে পারলে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হার আরো ২ থেকে ৩ শতাংশ বাড়বে। সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. কাউসার আহাম্মদ, সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. কে এম আজম চৌধুরী, জার্মান সহযোগিতা সংস্থা জিআইজেড’র প্রিন্সিপাল এডভাইজার ড. স্টেফান আলফ্রেড গ্রোয়েনেওল্ড এবং ঢাবি’র আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. রকিবুল আমিন সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যপক জোবায়ের আলম।