নম্বর জালিয়াতির অভিযোগ : নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে হাইকোর্টে তলব

আগের সংবাদ

ভোটের হাওয়া কোন দিকে? বরিশালে চার প্রার্থীর মধ্যে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস

পরের সংবাদ

ব্যাংকের সব টাকা সরকার নিলে শিল্পমালিকরা কী নেবে : সংসদে শামীম হায়দার পাটোয়ারী

প্রকাশিত: জুন ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেছেন, এ বাজেটকে আমার মনে হয় একটা তীব্র আমলাতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা, তীব্র একটি সংখ্যাতত্ত্বের খেলা এবং একটা অগণতান্ত্রিকতা। এ বাজেট পেশ করা উচিত জানুয়ারি মাসে। অর্থমন্ত্রী একটি ড্রাফট বাজেট উত্থাপন করবেন তখন, এরপর আমরা পর্যালোচনা-আলোচনা করব।
এখানে কোনো সংসদীয় কমিটির সভাপতিকেও ডাকা হয়নি। অথচ আগের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত সাহেব বাজেট পেশের আগে আমাদের দু-তিন দফা ডাকতেন, এরপরে মতামত নিতেন। এখানে সেই গণতান্ত্রিকতাটা নেই। এটা আপাতত কিছুটা মূক ও বধিরের বাজেট হয়ে গেছে। কেননা যে বক্তব্যগুলো দেয়া হয়েছে তার কোনো ছাপ এখানে নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেটের ওপর আলোচনায় জাপার এমপি এসব মন্তব্য করেন।
শামীম হায়দার আরো বলেন, এমপিদের জন্য যে প্রকল্পে ৫ বছরে ২০ কোটি টাকা দেয়া হতো সেখানে ৫০ কোটি টাকা দেয়া হোক, যেন রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করতে পারি। তাহলে ভোটের সময় আমরা মানুষের কাছে ভোট চাইতে পারব। তিনি বলেন, গত বছর যে বাজেট সংশোধিত হয়ে এসেছে তা ছিল ৬ লাখ ৬০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকার।
আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের যে বাজেট পেশ করা হয়েছে তা ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার। প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার বেশি বাজেট, ১৮ শতাংশ ব্যয় বেড়েছে। পরিচালন ব্যয় বলা হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৬৭ কোটি, এডিপি বলা হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি এবং ঘাটতি ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ একটা ভাসমান এডিপির মধ্যে বাজেটটি চলছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- এ বাজেটে সরকার কেমন করে ঘাটতি পূরণ করবে। গত (২০২১-২২) অর্থবছরে সরকার ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিল ৭৫ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকা।
২০২২-২৩ এ সরকার ব্যাংক থেকে নিয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রস্তাব করা হয়েছে ব্যাংক থেকে ঋণ নেবে ১ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকা, এটা বেড়ে কত হবে কেউ জানে না। এখন প্রশ্ন সব ঋণ যদি সরকার নেয় তাহলে ব্যবসায়ীরা, সাধারণ মানুষ কোথা থেকে ঋণ নেবে? ইন্ডাস্ট্রি হবে কীভাবে? জব ক্রিয়েশন হবে কোথা থেকে?
তিনি বলেন, বাজেটে যে আমরা ১ লাখ কোটি টাকা বাড়ালাম এ টাকাটা আসবে কোথা থেকে। এর কোনো সোর্স দেখি না। একটা হতে পারে সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নেবে।
কিন্তু ব্যাংক কোথা থেকে টাকা পাবে? কেননা সরকার টাকা ছাপাবে। এবার যখন সরকার টাকা ছাপাবে, এই মুহূর্তে আমাদের ইনফ্লেশন (মুদ্রাস্ফীতি) ৯ দশমিক ৫, এবার যদি আবার সরকার টাকা ছাপায় তাহলে আবার বেড়ে যাবে ইনফ্লেশন। তখন ব্যাগভর্তি টাকা নিয়ে পকেটভর্তি মালামাল আনা যাবে কিনা আমার সন্দেহ হয়।
করমুক্ত আয়সীমা আরো ৫০ হাজার বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা করার দাবি জানান শামীম হায়দার। তিনি শিক্ষা উপকরণের ওপর ট্যাক্স বা ভ্যাট কমানোর কথা বলেন। দেশে ই-সিগারেট পুরোপুরি বন্ধ করারও দাবি জানান।
তিনি বলেন, এখানে সামাজিক নিরাপত্তা তেমন নেই। এই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী, পলিসি মেকাররা ব্যাংক লুট করছে, অর্থ পাচার করছে। এগুলো বন্ধ করার কোনো কথা অর্থমন্ত্রীর বাজেটে নেই।
আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী ফারুক খান বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলা করে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ সত্ত্বেও ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার বাজেট যেমন দেয় তেমনি সেই বাজেট বাস্তবায়নও করে। দেশের উন্নয়নের জন্য বড় বাজেট প্রয়োজন। সব দেশে ঘাটতি বাজেটের চল রয়েছে।
তানভির শাকিল জয় বলেন, বাজেট নিয়ে বিএনপি ও সুশীল বাবুরা যে সমালোচনা করে, তাদের উদ্দেশে দুটি কথা বলছি। করোনাকালে অর্থনীতি যখন বিপযস্ত ছিল তখন জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়েছে। অর্থনীতি প্রবৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশের জিডিপি গত দুই বছরে বেড়েছে ৬ দশমিক ২ শতাংশ। ভারতসহ অনেক দেশও তা করতে পারেনি। মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতে একমাত্র শেখ হাসিনা সরকারই পারবেন। বর্তমানে রেশনিং সিস্টেম চালু করার দাবি করেন তিনি।
বিদ্যুৎ নিয়ে বিএনপির কথা বলা হাস্যকর ছাড়া কিছুই না মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিএনপি আমলে ঢাকা শহরে সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। চাঁপাইনবাবগঞ্জে কানসাটে বিদুৎ নিয়ে কী হয়েছিল? গুলি করে মানুষ হত্যা করা হয়েছিল।
বাজেটের ওপর আলোচনায় আরো অংশ নেন এমপি হাবিবুর রহমান, আনোয়ারুল ইসলাম এবং সৈয়দা রুবিনা আক্তার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়