ভর্তিতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে শোকজ

আগের সংবাদ

বাজেট বাস্তবায়ন করা সম্ভব : বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী

পরের সংবাদ

বাজেটে উপেক্ষিত পুঁজিবাজার

প্রকাশিত: জুন ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দেশের পুঁজিবাজারের চলমান সুবিধা বহাল রেখেই ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। যা অনেকটা চলমান অর্থবছরের (২০২২-২০২৩) কপিও বলা যায়। তাই বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য কোনো সুসংবাদ নেই, দুঃসংবাদও নেই।
গতকাল জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। প্রস্তাবিত বাজেট পুঁজিবাজার বান্ধব হবে, এমনটাই ধারণা ছিল সংশ্লিষ্টদের। তবে তাদের সে প্রত্যাশা উপেক্ষিতই থাকল।
জানা গেছে- আসন্ন বাজেটকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষের ধারণা ছিল পুঁজিবাজারের সার্বিক উন্নয়নে বেশকিছু ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে। তাতে পুঁজিবাজার প্রাণবন্ত ও বিনিয়োগ বান্ধব হবে। একই সঙ্গে এসব সুবিধায় পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াবে পুঁজিবাজার। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে সেই ধরনের তেমন কিছু নেই বললেই চলে।
জানা গেছে- পুঁজিবাজারের উন্নয়নে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রাক-বাজেটে বেশি কিছু দাবিদাবা পেশ করেছিল ডিএসই। দাবিগুলো ছিল- বন্ড থেকে সুদের আয়ের উপর কর অব্যাহতি, লভ্যাংশ আয়ের উপর উৎসে কর সম্পূর্ণ এবং চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হিসাবে বিবেচনাকরণ, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর করপোরেট করের হার হ্রাস, স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেকহোল্ডারদের উৎসে কর হ্রাস, স্টক ডিলারদের শেয়ার লেনদেন থেকে কর অব্যাহতি।
ডিএসইর কর্তৃপক্ষ প্রাক-বাজেটে এনবিআরকে জানায়, বর্তমানে করপোরেট বন্ডের বাজারের আকার খুবই ছোট, যা পুঁজিবাজারের পাশাপাশি অর্থ বাজারেরও বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা তৈরি করে। একটি কার্যকরী বন্ডের বাজার, অর্থনীতিকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করতে পারে। যদি সব ধরনের বন্ডের সুদ অব্যাহতির আওতায় আনা হয় তবে তা একটি শক্তিশালী বন্ড বাজার সৃষ্টিতে উৎসাহিত করবে। তাই জিরো কুপন বন্ডের অনুরূপ স্টক এক্সচেঞ্জের যে কোনো বোর্ডে তালিকাভুক্ত কোনো করপোরেট বন্ড থেকে উদ্ভুত সুদ থেকে আয়ের উপর সব শ্রেণির ইস্যুকারী এবং বিনিয়োগকারীদের ৬ষ্ঠ তফসিল, পার্ট-এ এর অধীনে কর অব্যাহতি চেয়েছিল ডিএসই।
কোম্পানিগুলো কর-পরবর্তী মুনাফা থেকে লভ্যাংশ দিচ্ছে। প্রকৃত পক্ষে, লভ্যাংশের উপর কর এক ধরণের দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের করারোপ। লভ্যাংশের উপর উৎস কর চূড়ান্ত কর হিসাবে বিবেচিত হলে, এটি বিনিয়োগকারীদের অসুবিধা কমাবে। তাই লভ্যাংশ আয়ের উপর উৎস কর ধারা ৮২(সি) এর অধীনে চূড়ান্ত কর দায় হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। এছাড়া করপোরেট শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশের উপর করের হার ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার দাবি ছিল।
তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো তাদের আর্থিক তথ্য এবং করপোরেট গভর্ন্যান্স সংক্রান্ত বিশদ বিবরণ প্রকাশ করতে হয়। তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা বাড়ানো গেলে মোট রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পাবে। হ্রাসকৃত করের হার বহুজাতিক এবং ভালমানের কোম্পানিগুলোকে এক্সচেঞ্জ তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত করবে। তাই তালিকাভুক্ত এবং অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কর হারের পার্থক্য ১২ দশমিক ৫ শতাংশ করার দাবি রেখেছিল।
ডিএসইর ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির প্রধান আয় (অর্থাত টার্নওভার) হচ্ছে কমিশন। যদি বেশি হারে কর নেয়া হয়, তবে ট্রেকহোল্ডার কোম্পানির পক্ষে টিকে থাকা এবং শেয়ারবাজারে অবদান রাখা কঠিন হবে। ফলে যৌক্তিক কারণে লেনদেন মূল্যের উপর উৎসে কর হ্রাস করে দশমিক শূন্য ১৫ শতাংশ হারে আরোপ করা যেতে পারে, যা প্রাথমিকভাবে অনুশীলন করা হয়েছিল। ডিএসইতে তালিকাভুক্ত হবার জন্য ইস্যুয়ার কোম্পানিগুলোকে পর্যাপ্ত তথ্য প্রকাশ করতে হয়। এক্ষেত্রে মূল চ্যালেঞ্জ হলো- অধিক তথ্য প্রকাশের প্রয়োজনীয়তার কারণে এ ধরনের কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত হয় না। তদুপরি এ কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কর আদায় হয় না। যদি এই জাতীয় কোম্পানিগুলোকে হ্রাসকৃত হারে কর ছাড়ের অনুমতি দেয়া হয় তবে তারা তালিকাভুক্তির জন্য উৎসাহিত হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে সরকারের কর আদায় বৃদ্ধি পাবে। এ লক্ষ্যে এক্সচেঞ্জের এসএমই বোর্ডে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত হওয়ার তারিখ থেকে ৫ বছরের জন্য হ্রাসকৃত ১০ শতাংশ হারে কর আরোপ করা দাবি রাখে ।
এছাড়া স্টক ডিলাররা পুঁজিবাজারের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বাজারে স্থিতিশীলতা নিয়ে আসে। সেকেন্ডারি মার্কেটে ডিলারদের যথাযথ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য তাদেরকে এসআরও নং ১৯৬/আয়কর/২০১৫ থেকে বাদ দেয়া অনুরোধ করা হয়। মানে স্টক ডিলারদের শেয়ার লেনদেন থেকে কর অব্যাহতির দাবি ছিল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়