রাজধানীতে ধারণক্ষমতার ৬ গুণ যানবাহন চলাচল করে : ডিএমপি কমিশনার

আগের সংবাদ

মাছ সংরক্ষণ কর্মসূচি : জেলেদের প্রতিও নজর দিতে হবে

পরের সংবাদ

দ্বিতীয়ার্ধের চমকে বিধ্বস্ত টটেনহ্যাম

প্রকাশিত: মে ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে গতকাল টটেনহ্যামের বিপক্ষে ৩-১ গোলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়ে ব্রেন্টফোর্ড। নিজেদের মাঠে প্রথম থেকে দাপট দেখালেও দ্বিতীয়ার্ধে ভালো করতে পারেনি টটেনহ্যাম। অন্যদিকে প্রথমার্ধে ধুঁকতে থাকা ব্রেন্টফোর্ড বিরতির পর মাঠে নেমে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত তারা জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়ে।
নিজেদের মাঠের সুবিধা নিয়ে ম্যাচের প্রথম থেকে বল দখলে এগিয়ে যায় টটেনহ্যাম। দলটি শুরু থেকেই আক্রমণে গিয়ে ব্রেন্টফোর্ডকে কোণঠাসা করতে শুরু করে। তাদের এক আক্রমণের সময় টটেনহ্যাম ফরোয়ার্ডকে ফাউল করে বসেন ব্রেন্টফোর্ডের রক্ষণ ভাগের এক খেলোয়াড়। এর পরপরই রেফারি ফ্রি-কিকের বাঁশি বাজান। ফ্রি কিক থেকে হ্যারি কেইনের দিকে বল পাঠান দেজন কুলুসেভস্কি। কেইন বল পেয়েই বাম পায়ে জোরালো শট নেন। তার শটে বল ব্রেন্টফোর্ড গোলরক্ষক ডেভিড র‌্যায়াকে ফাঁকি দিয়ে পোস্টের ডান কোণা দিয়ে জালে জড়ায়। কেইনের গোলে ম্যাচের শুরুতেই ১-০ গোলের লিড পায় টটেনহ্যাম। এরপর ব্যবধান দ্বিগুণ করতে আরো মরিয়া হয়ে ওঠে স্বাগতিকরা। তাই জাল রক্ষার্থে ব্রেন্টফোর্ডের খেলা গড়ায় রক্ষণ ভাগে। এরপর আর প্রতিপক্ষের গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারেনি ক্রিশ্চিয়ান স্টিলেনির শিষ্যরা। বরং তারা একাধিক সহজ সুযোগ পেয়ে হাতছাড়া করেছে। অন্যদিকে ব্রেন্টফোর্ডের আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড়রাও ম্যাচের ১৭তম মিনিটে ফ্রি কিক থেকে ম্যাচ সমতায় ফেরানোর সুযোগ পায়। তবে বেন মি’র নেয়া শট পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে গেলে সেই সুযোগ হাতছাড়া করে ব্রেন্টফোর্ড। দুই দল একাধিক সুযোগ হাতছাড়া করায় ১-০ গোলের লিড নিয়েই তারা প্রথমার্ধ্ব শেষ করে।
বিরতির পর খেলা মাঠে গড়ানোর পর ম্যাচের মোড় পুরো উল্টোদিকে ঘুরে যায়। প্রথমার্ধ্বে কোণঠাসা হয়ে পড়া ব্রেন্টফোর্ডের আক্রমণভাগ দ্বিতীয়ার্ধ্বের শুরু থেকেই সক্রিয় হয়ে ওঠে ম্যাচ সমতায় ফেরানোর লক্ষ্য নিয়ে। তারা টটেনহ্যামের রক্ষণ ভাগে একের পর এক হানা দিতে শুরু করে। দ্বিতীয়ার্ধের মাত্র ৫ মিনিটের সময়ই কাক্সিক্ষত গোলটির দেখা পায় ব্রেন্টফোর্ড। গোলটি করেন ব্রায়ান এমবেউমো। টটেনহ্যামের ফাঁকা রক্ষণ দেখে দ্রুত বল নিয়ে এগিয়ে যান উইসা। গোলরক্ষক তার দিকে এগিয়ে আসলে তিনি বল পাঠিয়ে দেন এমবেউমোর দিকে। এমবেউমো সময় নষ্ট না করে বল জালে জড়ান। সমতায় ফিরে আরো আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে ব্রেন্টফোর্ডের খেলোয়াড়রা। মাঝমাঠ থেকে তাদের খেলা গড়ায় টটেনহ্যামের বক্সের দিকে। সুযোগ পেলেই তারা টটেনহ্যামের ডি বক্সের ভেতর ঢুকার চেষ্টা করছিলেন। ম্যাচের ৬২তম মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোলের দেখা পান এমবেউমো। হ্যারি কেনের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে তাদের পোস্টের দিকে এগিয়ে যান হিকি। ডি বক্সের ভেতর ঢুকে সুবিধা করতে পারবেন না আগেই বুঝতে পেরেছিলেন তিনি। তাই ডিফেন্ডারদের নজরের বাইরে থাকা এমবেউমোর দিকে তিনি বল পাঠান। বল পেয়ে ঠিক প্রথম গোলের মতোই সুযোগ কাজে লাগান এমবেউমো। তার এই গোলে ম্যাচ হারতে বসা ব্রেন্টফোর্ড লিড পায়। ম্যাচের লিড নিয়ে রক্ষণ ভাগে মনোযোগী হয় ব্রেন্টফোর্ডের খেলোয়াড়রা। আক্রমণের দিকে মনোযোগ কমিয়ে তারা বল দখলে রাখার দিকে বেশি মনোযোগী হয়। বল দখল করে এমবেউমো-উইসারা মাঝমাঠেই খেলা সীমাবদ্ধ রাখে। অন্যদিকে বল দখল করার লড়াইয়ে ধুঁকতে থাকে টটেনহ্যামের আক্রমণভাগ। বল দখলে থাকায় সুযোগ বুঝে আক্রমণের দিকেও এগিয়ে যাচ্ছিল সফরকারীরা। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে এসব আক্রমণের সুফল পায় ব্রেন্টফোর্ড। এবার টটেনহ্যামের ডিফেন্ডারদের পরাস্ত করেন জোড়া গোল করা ব্রায়ান এমবেউমো। তিনি ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে ক্রস দিয়ে বল পাঠান উইসার পায়ে। ম্যাচের ৮৮তম মিনিটে টটেনহ্যামের কফিনে শেষ প্যারেকটি ঠুকে দেন উইসা। তার এই গোলে ৩-১ গোলের লিড নিয়ে শেষ মুহূর্তে জয় প্রায় নিশ্চিত করে ব্রেন্টফোর্ড। এরপর যোগ করা সময়ে চেষ্টা চালিয়েও কোনো গোল দিতে পারেনি টটেনহ্যামের খেলোয়াড়রা। শেষ পর্যন্ত নিজেদের মাঠে ৩-১ ব্যবধানে পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্টিলেনির শিষ্যরা।
ম্যাচ জিততে ব্যর্থ হলেও গতকাল একটি গোল করে রেকর্ড গড়েছেন টটেনহ্যাম তারকা হ্যারি কেইন। আসরের এক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ম্যাচে গোল করার কীর্তি এখন এককভাবে তার। চলমান ২০২২-২৩ মৌসুমে ৩৭ ম্যাচে কেইনের গোলসংখ্যা ২৮। গোলগুলো এসেছে ২৫ ম্যাচে। বাকি ১২ ম্যাচে জালের দেখা পাননি কেইন। এতদিন মোহাম্মদ সালাহর সঙ্গে যৌথভাবে এক নম্বরে ছিলেন কেইন। ২০১৭-১৮ মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুলের মিসরীয় ফরোয়ার্ড ২৪টি ম্যাচে গোলের দেখা পেয়েছিলেন। সেবার ৩২ গোল নিয়ে আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার গোল্ডেন বুট জিতেছিলেন সালাহ। টটেনহ্যামের জার্সি গায়ে একের পর এক গোল করলেও আসন্ন গ্রীষ্মকালীন দলবদলের মৌসুমে কেইনের ক্লাব ছাড়ার গুঞ্জন বেশ জোরালো। বিগত কয়েক বছর ধরেই চলছে এমন জল্পনা-কল্পনা। তাকে পাওয়ার জন্য প্রিমিয়ার লিগেরই আরেক ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড আগ্রহী। তার সম্ভাব্য নতুন ঠিকানার তালিকায় আছে ফরাসি লিগ ওয়ানের শিরোপাধারী পিএসজিও। গুঞ্জন সত্যি করে কেইন বিদায় নিলে ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে গোলটি হয়ে থাকবে টটেনহ্যামের মাঠে তার শেষ গোল। এবারের মৌসুমে টটেনহ্যামের আর একটি ম্যাচই বাকি আছে। আগামী ২৮ মে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে তারা খেলতে নামবে লিডস ইউনাইটেডের মাঠে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়