কাগজ প্রতিবেদক : ঢাকার উপকন্ঠ সাভারে রানা প্লাজার ধস ও শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাকে দেয়া হাইকোর্টের জামিন বাতিলের দাবি জানিয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিক ও ট্রেড ইউনিয়নের একাধিক জোট। গতকাল রবিবার সুপ্রিম কোর্টের জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের মূল ফটকে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে এই দাবি জানানো হয়।
গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সদস্য মঞ্জুর মঈনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা জলি তালুকদার, শবনম হাফিজ, রাজু আহমেদ, শহীদুল ইসলামসহ গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলন, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের প্রতিনিধিরা। সমাবেশে ‘রানা প্লাজা হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায়’, ‘ভবন মালিকের সর্বোচ্চ শাস্তি চায়’ সংবলিত বিভিন্ন পোস্টার দেয়া যায়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, কর্মস্থলে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নেই। অনিরাপদ পরিবেশে পোশাক শ্রমিকরা কাজ করে। তেমন পরিবেশের স্বীকার রানা প্লাজায় মারা যাওয়া শ্রমিকরা। ওই ভবন ধসে সহ¯্রাধিক শ্রমিক মারা যান। ২ হাজার ৪৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ৪৩০ জন মাথায় গুরুতর আঘাত পান, ৩৬৩ জন পা হারিয়ে পঙ্গু হয়ে গেছেন, ২৯৯ জন হাত ভেঙে পঙ্গু হয়ে গেছেন, ২০৫ জনের বুকের পাঁজর ভেঙে গেছে, ১৪০ জনের মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে, ২৮৮ জন মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে গেছেন। ১৮ জন হাসপাতালে ও নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বিল্ডিং কোড না মেনে ভবন নির্মাণ করা ও ঝুঁকিপুর্ণ ভবনে শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করে মালিক সোহেল রানা। তাই তার জামিন স্থগিত ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি তোলা হয় সমাবেশে।
প্রসঙ্গত, রানা প্লাজা ধসে হতাহতের ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় ভবনমালিক সোহেল রানাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। সেই জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনটি আজ সোমবার আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়। গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরফা মিশু বলেন, সোহেল রানার জামিন শুধু স্থগিত নয়, সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল বলেন, এখনো ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকরা ক্ষতিপূরণ পাননি। এই অবস্থায় সোহেল রানাকে দেয়া হাইকোর্টের জামিনে আমরা আতঙ্কিত। এই জামিনের ফলে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হবে। শ্রমিক হত্যাকে উৎসাহিত করা হবে।