সিলেট ব্যুরো : চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কদমতলীস্থ নবনির্মিত আধুনিক বাস টার্মিনাল পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়। চালু হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই টার্মিনালের ছাদের একটি অংশে ফাটল ধরা পড়ে। তদন্ত রিপোর্টে এসেছে ডিজাইনে সমস্যা থাকায় ফাটল ধরেছে।
জানা যায়, টার্মিনালে ফাটল ধরা পড়ার পর জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ফাটল অনুসন্ধানে ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সিলেট সিটি করপোরেশন। কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন সিসিক কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হয়েছে ৩৭ দিনপর।
সিলেটে দেশের প্রথম আধুনিক বাস টার্মিনাল প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ করে বিশ্বব্যাংক। মিউনিসিপ্যাল গভর্নমেন্ট সার্ভিস প্রজেক্ট (এমজিএসপি) প্রকল্পের আওতায় এই প্রকল্পের উদ্যোক্তা সিলেট সিটি করপোরেশন। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের মেয়াদ ছিল দুই বছর। কিন্তু মেয়াদান্তে কাজ শেষ হয়নি। উপরন্তু ৬৩ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দের পর আরো ৪ কোটি টাকা বরাদ্ধ বৃদ্ধি করে ৬৭ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। তারপরও হয়নি কাজের কাজ। চলতি বছরের ১৫ ফেব্রয়ারি থেকে কোনোরকম উদ্বোধন ছাড়াই পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চলে বাস টার্মিনালের। কিন্তু কার্যক্রম চলাকালীন টার্মিনাল ভবনের ছাদে ফাটল দেখা দেয়।
এ ঘটনায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলমকে আহ্বায়ক করে ৬ সদস্যের টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করে সিলেট সিটি করপোরেশন। এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- এলজিইডি সিলেটের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জে এম আজাদ হোসেন, গণপূর্ত অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী রিপন কুমার রায়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল হাকিম, সড়ক বিভাগ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও সিসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী হুমায়ূন কবীর। তবে ১০ দিনে তদন্ত প্রতিবেদন জমাদানের কথা থাকলেও ৩৭ দিন পর প্রতিবেদন হাতে পায় সিসিক কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, শনিবার তদন্ত প্রতিবেদন হাতে এসেছে। দু’একদিনের মধ্যে মেয়র সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতিবেদন বিষয়ে কথা বলবেন। সিসিকের এই কর্মকর্তার মতে, ছাদে ফাটলের কারণে মূল ভিত্তিতে কোনো সমস্যা হবে না। ডিজাইনের সমস্যা থাকার কারণে এটি হয়েছে। বাইরের যে পার্টিশন ওয়াল দেয়া হয়েছে সেটার উচ্চতা বেশি। এর নিচের কলামে ফাউন্ডেশন শক্তিশালী না হওয়ার কারণে এমনটি হয়েছে। তবে টার্মিনালের নকশা করা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষক সুব্রত দাস বলেন, বিষয়টি মুল ভিত্তিতে আঘাত হানতে পারে।
তিনি বলেন, স্থাপনায় বেশ কয়েকটি অংশ থাকে। যার মধ্যে আর্কিটেকচারাল ডিজাইন, স্ট্রাকচারাল ডিজাইন, ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল ও প্লাম্বিং- এই পাঁচটি অংশ থাকে। টার্মিনালের ফাটল সেটি মূল যে স্ট্রাকচারাল ডিজাইন আছে তাতে নয়। এটি পার্টিশন দেয়ালের ত্রæটি। এটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এটি মূল ভিত্তিতে আঘাত আনতে পারে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।