শাহজালাল বিমানবন্দর : যাত্রীদের সঙ্গে অভিনব প্রতারণা গ্রেপ্তার ১

আগের সংবাদ

রক্তস্বল্পতা এক নীরব সমস্যা : অপুষ্টিজনিত এ রোগ থেকে হতে পারে জটিল রোগ > নারী ও শিশুরাই ভুগছে বেশি

পরের সংবাদ

শঙ্খ ঘোষের কবিতা : বিষয় ভাবনা ও শিল্পসৌকর্য

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রবীন্দ্রনাথ থেকে জীবনানন্দ পরবর্তী পঞ্চপাণ্ডবদের মধ্যে অন্যতম প্রধান কবি ছিলেন শঙ্খ ঘোষ (জন্ম ৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩২; মৃত্যু ২১ এপ্রিল, ২০২১ খ্রি.)। তার জন্ম চাঁদপুরে হলেও শৈশব কেটেছে পাবনার ঈশ্বরদীতে। দেশভাগের পর ভারতের কলকাতায় চলে যান এবং সেখানে অবস্থান করেন। সারাটা জীবন তিনি সাহিত্যে বিলিয়ে দিয়েছেন। তার আসল নাম চিত্তপ্রিয় ঘোষ। ১৯৭৭ সালে ‘বাবরের প্রার্থনা’ কাব্যের জন্য তিনি সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। অতঃপর ২০১১ সালে তিনি ভারত সরকারের দেয়া পদ্মভূষণ পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি একাধারে কবি, প্রাবন্ধিক ও রবীন্দ্র গবেষক। তিনি নিভৃতে স্বতন্ত্র ভাষাভঙ্গির খোঁজে নিরলস কাব্যচর্চা করেছেন।
পঞ্চাশ দশকের কবিদের মধ্যে শঙ্খ ঘোষ ছিলেন অন্যতম। আঙ্গিক দিক থেকে তার কবিতার অবস্থান স্বতন্ত্র ও বৈচিত্র্যপূর্ণ। তিনি ‘দিনগুলি রাতগুলি’ কবিতায় ইভাকে নিবেদন করেছেন, তার বিষণ্ন মনের অভিব্যক্তি। যখন সমস্ত পৃথিবী বিষণ্নতায় পোড়ে, কঠিন কান্নায় মানুষের শিরা-উপশিরা কাঁপে তখনো জলের ডালায় হৃদয় প্রসারিত করে শুধু কবিতা-সুন্দরী কবির অন্তরে জেগে ওঠে। আবার ‘আকাক্সক্ষার ঝড়’ কবিতায় কবি পাঠকদের কাছে তুলে ধরেছেন : প্রেমের তীব্র বাসনা। কবি বলেছেন, বিদীর্ণ বুকের মাঝখানে যেখানে মিলনের প্রবল বাসনা থাকে, যেখানে নিঃসঙ্গ হাওয়ায় স্বরের ব্যঞ্জনা উড়ে বেড়ায়, সেখানেই এলোমেলো ভাঙা পৃথিবীর আবর্জনা সরিয়ে মমতাময়ী সকাল উঠে আসে প্রেম-প্রজাপতি হয়ে।
তার কবিতায় আমরা স্বদেশ চেতনার অভিব্যক্তি খুঁজে পাই। তিনি ‘স্বদেশ স্বদেশ করিস কারে’ কবিতায় ব্যক্ত করেছেন, স্বদেশ তুমিতো মাটি, তুমি আমারই স্মৃতির ধূপে ধূপে পোড়া মৃদু গন্ধ, অতীতের বাল্য সহচর, তুমি স্বর্গ, তুমি দেশ এবং তুমিই আমার স্মৃতিসুখের মানচিত্ররেখা। ‘বলো তারে শান্তি শান্তি’ কবিতায় মায়ের প্রতি যে গভীর টান বা অনুরাগ তা স্পষ্ট হয়ে ফুটে ওঠে কবির মনোজগতে। অন্যদিকে ‘এই প্রকৃতি’ কবিতায় তার যে প্রকৃতির প্রতি মমত্ববোধ তা স্পষ্ট হয়। ‘পথ’ কবিতায় কবি শঙ্খ ঘোষ মানুষের জীবনকেই একটা পথ হিসেবে দেখতে চেয়েছেন। জন্ম থেকে মুত্যু পর্যন্ত সর্বত্র চলার পথে প্রেমের অবিরল ধারায় সাঁতার কাটতে হবে কবির এমন আকুতি কবিতার ছত্রে ছত্রে সন্ধান মেলে। তার ‘বৈরাগীতলা’ কবিতায় বৈষ্ণব তত্ত্বের সন্ধান মেলে।
কবি শঙ্খ ঘোষ সাহিত্যের ভুবনডাঙায় দু’হাত দিয়ে ভরে দিয়েছেন। তার ‘বিচ্ছেদ’ কবিতা পাঠ করলে আমরা দুঃখকাতরতার গন্ধ পাই। তিনি কবিতার পঙ্ক্তিতে সাজিয়েছেন সেইসব দিনরাত চলে গেছে নেমে, সুখেরও ওপারে। কুয়াশায় ঢেকে গেছে পথ বিচ্ছেদের গায়ে। তিনি ‘ফেরা’ কবিতায় নিজ দেশে অর্থাৎ বাংলাদেশের চাঁদপুরের মাটিতে ফিরতে চেয়েছেন। দেশের প্রতি যে আবেগ, যে টান, যে ভালোবাসা ফেরা কবিতায় তারই আভাস মেলে। তার ‘বাবা’ কবিতা থেকে জানতে পারি বাবার শেষ যাত্রার কথা। এখানে মানুষের দুঃখ-যন্ত্রণার কথা, বিয়োগ ব্যথার যে যন্ত্রণা তার স্পষ্টতার আভাস মেলে। ঝাপসা চোখের নিচে অন্ধকারে বাবা শেষ বিদায়ে ঢলে পড়েছে। এ এক দুঃসহ স্মৃতি। মাতৃভাষার প্রতি প্রবল অনুরাগ তার ‘ভাষা’ কবিতা থেকে জানতে পারি। কবি শঙ্খ ঘোষ সমাজের নানা অসঙ্গতির কথা ‘ছন্দ’ কবিতায় ব্যক্ত করেছেন। এমনকি ‘দাবি’ কবিতায় ক্ষমতাসীনদের কাছে মানুষের অধিকার বোধের জায়গা পাকাপোক্ত করার জন্য আর্জি রেখেছেন এমন ধারণা পাওয়া যায়।
কবি শঙ্খ ঘোষের কবিতা সব মানুষের জন্য এমনটা বলা যেতেই পারে। কেননা ‘খুলে যাচ্ছে তোরণ’ কবিতা পাঠ করলে এমন আভাস ভেসে আসে। তিনি কবিতার পঙ্ক্তিতে পঙ্ক্তিতে সাজিয়েছেন কথামালা। তিনি সবার কাতারে অর্থাৎ সবার সাথে এক হয়ে সবার অধিকার আদায়ের সাথে শামিল হয়েছেন। কখনো তিনি সবার মুখের কথা ব্যক্ত করেছেন কবিতার পঙ্ক্তিতে পঙ্ক্তিতে। ‘বেঁচে থাকতে চাই’ কবিতায় এমন সুরের প্রতিধ্বনি শুনতে পাই। ‘নেমে আসুন পথে’ কবিতায়ও আমরা এমন স্বরায়নের ইঙ্গিত পাই। সবার বাঁচার জন্য বা অধিকার আদায়ের জন্য শাসকদের বিরুদ্ধে পথে নেমে আসতে সবাইকে আহ্বান করেছেন। কখনো কবি গর্জে ওঠে কবিতায়। ‘আকণ্ঠ ভিক্ষুক’ কবিতা পাঠ করে আমরা এমনটা ধরে নিতে পারি। কবিতায় কবি বলে ওঠেন : আকণ্ঠ ভিক্ষুক, তুমি কথা বলো গৃহস্থের কানে/ ভাঙো তার সব স্থবিরতা/ ঝরাও প্রপাত তার সাবেক কার্নিশগুলি থেকে/ তারপর দেখো আরো কতটুকু অশরীরী/ মূর্খতা শরীরের লেগে থাকে।
‘ভালোবাসা খড়কুটো’ কবিতায় কবি শঙ্খ ঘোষ তার প্রেমিকাকে বরাভয় হাসির সাথে তুলনা করেছেন। আবার কখনো ল²ী কখনো সর্বনাশের সাথী বলে ব্যক্ত করেছেন কবিতায়। কখনো ভালোবাসার দেবীকে ঈশ্বরী ভেবেছেন। তিনি ‘ঈশ্বরী’ কবিতায় তুলে ধরেন : মনে কি পড়ে না এই বিন্দু ভেঙ্গে তোমার হৃদয়/ শূন্য আলিঙ্গন করে নিজেই ঈশ্বরী হতে পার? যেখানে ক্ষমা নেই সেখানে কোনো প্রেম নেই। কবি মনে করেন। ক্ষমার মাঝেই প্রেমের প্রকাশ। তাই তিন ক্ষমা কবিতায় বলে ওঠেন : সেইসব ধ্বনি শুধু চলে যায় শূন্যতার থেকে শূন্যতায়/ সেই শূন্য থেকে ওঠে ঝড়/ সেই শূন্য থেকে দেখি ঝরে পড়ে জল/ … / কী হবে-বা সে-হৃদয়ে যেখানে কোথাও নেই এতটুকু টলটলে ক্ষমা।
প্রকৃতপক্ষে কবি শঙ্খ ঘোষের কবিতায় সৃষ্টিতত্ত্ব, দলিত সম্প্রদায়ের আর্তি, সাধারণ মানুষের হৃদয়ের অভিব্যক্তি, দর্শনতত্ত্ব, শ্রেণি বৈষম্যের স্বর, স্বদেশচেতনা, দেশভাগের ব্যথা, বাউলচেতনা, একেশ্বরবাদ, প্রকৃতিবাদ, রোমান্টিকতা, দ্রোহ, দুঃখ-যাতনা কবিতায় ধরা পড়ে। এছাড়া তার কবিতায় সমাজ, সামাজিক বৈষম্য, আধুনিক জীবনের নানাবিধ সমস্যা, মানবমনের অন্তর্দহন ও ভাবনাচিন্তা, ক্ষমতায়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, মধ্যবিত্ত মানুষের টানাপড়েন ও প্রকৃতিচেতনা স্বতন্ত্রধারায় উঠে আসে। মানুষের চিন্তার জায়গায় তার কাব্যিক ধ্যান-ধারণা ছিল প্রখর দৃষ্টিসম্পন্ন।
কবি শঙ্খ ঘোষের প্রতিদিনকার কথাবার্তার যে ধরন, শ্লেষাত্মক ভঙ্গি তার কবিতায় অতি সাবলীলভাবে কাব্যশিল্পভাষায় ধরা পড়ে। তার কবিতার শব্দবুনন, শব্দের সাথে শব্দের দ্যোতনা, প্রতীক, উপমা, শব্দচয়ন, ছন্দ-অলঙ্কার-মিথ ও চিত্রকল্পের ব্যবহার এককথায় বৈচিত্র্যধর্মী। কবির কল্পনাশক্তি যদি প্রখর বা দূরদৃষ্টিসম্পন্ন না হয় তাহলে কবিতা, শিল্পে অনুত্তীর্ণ থেকে যায়। সেক্ষেত্রে শঙ্খ ঘোষের কবিতা শিল্পমান ও অলঙ্কারশৈলীতে উত্তীর্ণ। তার কবিতার ভাষা শৃঙ্খলাশাসিত, প্রাঞ্জল ও ব্যঞ্জনাধর্মী।
কবি শঙ্খ ঘোষের কল্পনা, চিত্রকল্প, উপমা, উৎপ্রেক্ষা, মননশক্তি, সৃজনীক্ষমতা, বোধের বহিপ্রকাশ প্রতিটি কবিতার পঙ্ক্তিতে ছাপ রেখে যায়। কবিতার শব্দ নির্বাচনের ব্যাপারে তিনি ছিলেন অতি সংবেদনশীল বা অত্যন্ত তীক্ষèবুদ্ধিসম্পন্ন। তিনি সমাসোক্তি, অনুপ্রাস, রূপক অত্যন্ত দক্ষতার সাথে কবিতার শরীরে গেঁথে দিয়েছেন, যা কবিতাকে সৌন্দর্যের প্রতীক ও শিল্পগুণে উত্তীর্ণ করে তুলেছে। কবিতা তো কবিতাই। এ-ধারণা কবি শঙ্খ ঘোষের কবিতায় স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়। তিনি নির্মেদ কবিতা সৃষ্টি করেছেন। বোধের ক্ষেত্রে অগ্রজ কবিদের থেকে অনেকটা আলাদা, যা তার কবিতার চিত্রকল্পগুলো পর্যবেক্ষণ করলে পাঠকদের সামনে বিধৃত হয়। কবিতায় তিনি পৌরাণিক মিথ, সাধারণ মানুষের প্রচলিত শব্দ, প্রতিতুলনা, প্রতীক ব্যবহার করেছেন যা কবিতাকে ব্যঞ্জনাধর্মী করে তুলেছে। ছন্দের ক্ষেত্রে তিনি কবিতায় কলাবৃত্ত ছন্দ, লৌকিক ছন্দ, মিশ্র ছন্দ বেশি ব্যবহার করেছেন যা কবিতাকে সুখপাঠ্য ও সহজবোধ্য করে তোলে। তবে কবি শঙ্খ ঘোষের কবিতায় বাকস্পন্দই অধিক গুরুত্ব পায়। যেমন তার ‘জলছবি’ কবিতা লক্ষ করলে আমরা বুঝতে পারি :

রাতের বেড়ালগুলি বড়ো বেশি দ্রুত
লাল সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেল।
আমিও কুয়াশামাখা চোখে
ধরতে গিয়েছি একে ওকে-
ফিরে দেখি সেও নেই, রোমে ভরে আছে শুধু
একদিন যেখানে সে শুত। পৃষ্ঠা নং ১২৪ (শঙ্খ ঘোষের কবিতা সংগ্রহ ২)

কবি শঙ্খ ঘোষের কবিতার প্রধান বাহন ছিল কথ্যভাষারীতি। শব্দ সাথে শব্দের সুর ও স্বরের ব্যঞ্জনা ছিল, ভার ছিল, শব্দ-ছবির আলাদা রং ছিল। কবিতার নির্মাণ শৈলীর আলাদা ঢং ছিল। কবিতার উপস্থাপন কৌশল ও অনুভূতির বলয় কবিসত্তার কাছে এক নতুন শিল্পসৌকর্য। এ-ক্ষেত্রে কবি শঙ্খ ঘোষের কবিতাগুলোকে পাঠকদের কাছে উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে দাঁড় করানো যায়। প্রতিদিনের ব্যবহারের যে শব্দাবলি, কবিতার জীবন, কবিতার শরীর, কবিতার ছাদ, ছন্দের দোল আর কবিতার অন্তর-বাহির সবকিছুই নতুন ধাঁচের ও স্বাদের কবি শঙ্খ ঘোষের কবিতা। ভাবের কারসাজি, ভাষার প্রয়োগ কৌশল, শব্দের সাজুস্য, প্রতীকী চিত্রকল্প কবিকল্পনায় বিশেষ চেতনা বা বোধ প্রকাশে এক অভিনবত্ব প্রকাশ পায়। কবির বৈদগ্ধ্যপূর্ণ ভাবনার সন্ধান পাওয়া যায় কবি শঙ্খ ঘোষের কবিতা পাঠ করলে। তার কবিতায় ভাষার পরিমিতিবোধ লক্ষ করা যায়। এ প্রসঙ্গে ‘অপভাষ’ কবিতাটি পড়লে বুঝতে পারা যায় :

স্ট্যান্ড রোড ধরে হেঁটে যায় এক বেগানা
থেকে থেকে ওঠে গেয়ে সে-
যদিও জানে না কী সুর দিয়ে যে কী বোনে
শুধু জানে এই পথে-পড়ে-থাকা জীবনে
প্রাপ্যেরও চেয়ে অনেক বেশি সে পেয়েছে। পৃষ্ঠা নং ২০৬ (শঙ্খ ঘোষের কবিতা সংগ্রহ ৩)

কবি শঙ্খ ঘোষ কবিতায় নতুন শব্দ তৈরি করেন আর প্রচলিত শব্দ কবিতায় বেশি বেশি ব্যবহার করেন, যা কবিতাকে নতুন বোধের জগতে পাঠকদেরকে পৌঁছে দেয়। তার কবিতা অসাধারণ শিল্পগুণসম্পন্ন হয়ে ওঠে। প্রকৃতকথা কবিতার শরীরে যথাযথ অলঙ্কার-উপমা ব্যবহার করেন, যার জন্য কবিতা পাঠকদের হৃদয়কে নাড়া দিতে সক্ষম হয়। কোনো কোনো কবি কবিতায় এত বেশি অলঙ্কার দিয়ে ফেলেন, যা কবিতার বোধ উদ্ধার করতেই পাঠকদেরকে হিমশিম খেতে হয়। কবি শঙ্খ ঘোষ এ-ক্ষেত্রে আলাদা। যে কবিতায় যতটুকু উপমা-অলঙ্কার ব্যবহার করা দরকার সে কবিতায় ততটুকুই অতি যতœ সহকারে ব্যবহার করেছেন। এ-ক্ষেত্রে কবি শঙ্খ ঘোষ সফল। তার কবিতায় রিপিটেশন চোখে পড়ে না। তিনি ‘দেশান্তর’ কবিতায় ব্যক্ত করেছেন :

তার পর সমস্ত পথ একটাও কোনো কথা না বলে
আমরা হাঁটতে থাকি, হেঁটে যেতে থাকি
এক দেশ থেকে অন্য দেশে
এক ধর্ষণের থেকে আরো এক ধর্ষণের দিকে।

পৃথিবী তো এ-রকমই।
এরই মধ্যে বেঁচে থাকতে হবে, ভাবি।
পৃষ্ঠা নং ২৬ (শঙ্খ ঘোষের কবিতা সংগ্রহ ৩)
মানুষ চলে যায় কিন্তু তার স্মৃতি রেখে যায়। কবি শঙ্খ ঘোষও শারীরিকভাবে আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিয়েছেন কিন্তু তার কর্ম তাকে চিরজীবিত করে রেখেছেন বাংলা সাহিত্যাঙ্গনে। তিনি কবিতায় সময়কে ধারণ করেছেন। তার কবিতার সংসার সুভাসিত আলোর পথে দিব্য সময়ের গতিতে ধাবমান, যা প্রতিনিয়ত রোদের হাসির মতো চিরোজ্জ্বল, অমøান। কবিতার নিমগ্নতায় তিনি নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন বিচক্ষণ ডুবুরির মতো আপন শিল্প নির্মাণে। তিনি কবিতার তন্ময়ে বিভোর হয়ে মনোময় সত্তায় বোধের উদ্যানে চিত্রপট, কাব্যরস, ছন্দ, অলঙ্কার ও উপমার দ্বারা নতুন নতুন শিল্পপ্রতিমা সৃষ্টি করেছেন, যা কালের প্রবাহে পাঠকদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে। বাংলা সাহিত্যে অন্য দুয়েকজন কবির পাশাপাশি বটবৃক্ষের মতো ছায়া হয়ে কবিতা শিল্প নির্মাণে কবি শঙ্খ ঘোষ একটি মর্যাদার স্থানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়