বিশ্বে দূষিত শহরের তালিকায় চতুর্থ ঢাকা

আগের সংবাদ

দায়িত্ব নিলেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন

পরের সংবাদ

১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ : টেকনাফে সাবেক মেম্বারের ছেলে ৫ দিন পর মুক্ত

প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজার (দক্ষিণ) প্রতিনিধি : মাথায় ও বুকে বন্দুক তাক করা, বুকে পা, গলায় লম্বা কিরিচ ধরে আছে। চোখে গামছা বাঁধা। মাটিতে শুয়ে রেখেছে। যেন এখনই গলায় কিরিচ চালিয়ে এবং বন্দুকের ট্রিগার চেপে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেবে- এমন ছবি বা ভিডিও ফুটেজ মা-বাবা, আত্মীয়স্বজনের কাছে পাঠিয়ে আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছে। এতে দ্রুত কাক্সিক্ষত মুক্তিপণও আদায় হচ্ছে। এভাবে প্রায়ই অপহরণ করে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে মুক্তিপণ আদায় করে চলেছে দুর্বৃত্তরা।
গল্পের ডায়লগ নয়, বাস্তবে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ফুলের ডেইল গ্রামের আলোচিত সাবেক মেম্বার সামশুল আলম বাবুলের ছেলে আল ফায়সালকে অপহরণ করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করেছে দুর্বৃত্তরা। সে কক্সবাজার সিটি কলেজের শিক্ষার্থী। পাঁচদিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ফিরিয়ে দিয়েছে অপহরণকারীরা। এ সময় তাকে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে জানায় ফায়সাল।
জানা যায়, গত ১৫ এপ্রিল ভোরে সেহেরি খেয়ে ফজরের নামাজ আদায় করতে প্রতিদিনের মতো মসজিদে যায় ফায়সাল। সে যে গেল আর ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন আত্মীয়স্বজনসহ সম্ভাব্য সব স্থানে খুঁজতে থাকে। কোথাও না পেয়ে একপর্যায়ে বাড়ির সিসি ক্যামরার ফুটেজ চেক করে দেখতে পায় একটি সিএনজির আনাগোনা হয়েছে। ফলে অপহৃত হওয়ার সন্দেহ হয়। কারণ স¤প্রতি টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায় সিএনজি অটোরিকশা ও টমটম গাড়ি করে অপহরণের ঘটনা অহরহ ঘটছে।
অবশেষে একদিন পর মুঠোফোনে কল আসে ফায়সালকে অপহরণ করা হয়েছে। জীবিত ফেরত পেতে চাইলে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। পুলিশ কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। এমনকি অপহরণকারীরা হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে কল দিয়ে যোগাযোগ করত।
অবশেষে গতকাল ভোরে লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্রিক ফিল্ডের কাছে ফায়সালকে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে ফিরিয়ে দেয়।
অপহৃত ফায়সালের বাবা ২ নং হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার সামশুল আলম বাবুল জানান, কিছু স্থানীয় দুষ্কৃতিকারী মিলে অপহরণের এ ঘটনা ঘটিয়েছে। জমি বিক্রি করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছেলে ফায়সালকে অপহরণকারীদের কবল থেকে ফিরিয়ে এনেছি। ছেলেকে অমানসিক নির্যাতন করেছে।
এ ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানায় মামলা রুজু করার প্রস্তুতি চলছে। আজ ২১ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাবেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে স্থানীয় একটি সূত্রে জানা যায়, শামসুল আলম বাবুল মেম্বার আলোচিত মাদক কারবারি। হয়তো ইয়াবাসহ মাদকের দেনাপাওনাসংশ্লিষ্ট বিষয় থেকে অপহরণের ঘটনাটি সংঘটিত হতে পারে। অপহরণ বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করছেন তারা।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) নাছির উদ্দীন জানান, এখনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, স¤প্রতি পুরো টেকনাফে অপহরণ আতঙ্ক বিরাজ করছে। সন্ধ্যা নামলেই গ্রামগঞ্জে ভূতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করে। এমনকি অনেকে মসজিদে নামাজ আদায় করতে যাচ্ছে না। প্রশাসন নীরব ভূমিকায় রয়েছে। দৃশ্যত কোনো অভিযান নেই। ফলে একপ্রকার ফুঁসে উঠছে টেকনাফবাসী। এই দুর্বৃত্তদের দমন করতে পাহাড়ে ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাঁড়াশি অভিযান চালনো জরুরি বলে মনে করেন সচেতন লোকজন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়