টঙ্গীতে বিআরটি প্রকল্পের ক্রেন উল্টে আহত ৫

আগের সংবাদ

তীব্র গরমে বাড়ছে রোগবালাই : স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত, কৃষিকাজে ক্ষতির আশঙ্কা, ৩ বিভাগে বৃষ্টির আভাস

পরের সংবাদ

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে হাইকমিশনের বক্তব্য

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন এক জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। গত শনিবার ফেসবুক পেজে শেয়ার করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় এবং কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশনের নিবিড় কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এরপরই মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশ থেকে নতুন কর্মী নিয়োগের উপর চার বছর আগে জারি করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। গত বছরের ২ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠিত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের সভায় কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হবার পর দুই দেশের সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোতে প্রয়োজনীয় নেটওয়ার্কিং হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার স্থাপনের পর আগস্টে মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশি নতুন কর্মী নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়। সর্বশেষ তথ্য মোতাবেক, মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত লেবার ডিপার্টমেন্ট ৮,৭২৭টি নিয়োগের ডিমান্ডের বিপরীতে ৩,৫৮,৮৯২ জন বাংলাদেশি নতুন কর্মী নিয়োগের অনুমোদন প্রদান করেছে এবং ইতোমধ্যে ১,৩৪,৫৯৫ জন নতুন কর্মী মালয়েশিয়ায় এসে পৌঁছেছে। বাকি প্রায় ২,২৫,০০০ বাংলাদেশি কর্মীর আগমন প্রক্রিয়াধীন আছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে মালয়েশিয়ায় আনুমানিক মোট পাঁচ লাখ নতুন বাংলাদেশি কর্মীর কর্মসংস্থান হবে বলে বাংলাদেশ হাইকমিশন আশা করছে।
এদিকে, মালয়েশিয়ায় আসার পর কিছু বিদেশি কর্মী সঠিক কাজ পাচ্ছে না বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম, সোশ্যাল মিডিয়া ও ব্যক্তিগত সোর্স থেকে জানা গেছে। তার মধ্যে কিছু বাংলাদেশি কর্মীও সমস্যায় পড়েছে বলে বাংলাদেশ হাইকমিশন অবহিত হয়েছে। এ বিষয়ে হাইকমিশন নিজস্ব উদ্যোগে এবং মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষের সহায়তায় তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করে সমস্যা সমাধানের পদক্ষেপ নিয়েছে এবং কিছু সংখ্যক কর্মীকে কাজ প্রদানে নিয়োগকর্তাকে বাধ্য করতে সমর্থ হয়েছে।

বাকি কর্মীদের নতুন নিয়োগকর্তার অধীনে নিয়োগের চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে।
মালয়েশিয়ার আইন অনুযায়ী দেশি-বিদেশি সব কর্মীর আইনগত সব অধিকার নিশ্চিতের দায়িত্ব লেবার ডিপার্টমেন্টের ওপর এবং সে লক্ষ্যে ওই প্রতিষ্ঠানকে সাংগঠনিক ও আইনগত ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। কোন দেশের দূতাবাসের পক্ষেই শতভাগ যাচাই-বাছাই করে কর্মী নিয়োগের ডিমান্ড সত্যায়ন করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে, দূতাবাসকে আবশ্যিকভাবে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের উপর নির্ভর করতে হবে। এটা বাংলাদেশসহ সব সোর্সিং কান্ট্রির দূতাবাসের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। বাংলাদেশ দূতাবাস আনুমানিক ৯৫ ভাগ ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সঠিক আছে কিনা সে সংক্রান্ত কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ডিমান্ড সত্যায়ন করে থাকে। বাকি আনুমানিক ৫ ভাগ ডিমান্ডের বিপরীতে দূতাবাস নিয়োগকর্তার অফিস/প্রজেক্ট সাইট ইত্যাদি ভিজিট করে সত্যায়ন করে থাকে।
শতভাগ প্রজেক্ট/ফ্যাক্টরি তথা হাজার হাজার নিয়োগ প্রতিষ্ঠান সরজমিনে ভিজিট করা দূতাবাসের পক্ষে বাস্তবিকভাবেই অসম্ভব। মালয়েশিয়ার লেবার ডিপার্টমেন্টের পক্ষেই একমাত্র সম্ভব। তাই, মালয়েশিয়ার লেবার ডিপার্টমেন্টের ছাড়পত্রের উপর আস্থা রেখে শ্রমিক প্রেরণ করাটাই যুক্তিসঙ্গত এবং অন্যান্য সব শ্রমিক প্রেরণকারী দেশ এটাই করছে। তাছাড়া শতভাগ প্রজেক্ট দূতাবাস কর্তৃক ভিজিট করে ডিমান্ড সত্যায়ন করতে হলে কর্মী আগমনের গতি এতই ধীর হবে যে, যেটা কারো কাছেই গ্রহণযোগ্য হবে না। অপরদিকে প্রতিযোগী দেশগুলো সেই সুযোগ গ্রহণের কারণে বাংলাদেশ তার যথাযথ সুফল থেকে বঞ্চিত হবে। এক্ষেত্রে ডিমান্ড সংগ্রহকারী বাংলাদেশি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো তাদের মালয়েশিয়ার সহযোগী এজেন্সির মাধ্যমে নিয়োগকর্তার সঠিকতা এবং বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের সক্ষমতা যথাযথভাবে যাচাই করার পর শ্রমিক প্রেরণের কার্যক্রম গ্রহণ করলে শ্রমিকদের কর্মহীনতার ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস পাবে।
মালয়েশিয়ায় আসার পর কাজ না পাওয়া কর্মীর সংখ্যা মোট আগত কর্মীর তুলনায় খুবই কম এবং এটি এখন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণযোগ্য সীমার মধ্যে রয়েছে। শুধু বাংলাদেশি কর্মীদের ক্ষেত্রেই হচ্ছে না- নেপাল, মিয়ানমারসহ অন্যান্য অনেক দেশের শ্রমিকও এই পরিস্থিতির শিকার হয়েছে। বাংলাদেশি কর্মীদের নতুন নিয়োগকর্তার অধীনে নিয়োগ প্রদানের জন্য বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে এবং ভবিষ্যতে যাতে এই পরিস্থিতির অবনতি না হয় সে বিষয়ে মালয়েশিয়ার সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়