বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের : গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা বিএনপির কারণেই বারবার হোঁচট খায়

আগের সংবাদ

আত্রাই উপজেলা মিলনায়তনের পাশে জলাবদ্ধতা

পরের সংবাদ

র‌্যাব হেফাজতে নারীর মৃত্যু নিয়ে হাইকোর্টের যত প্রশ্ন

প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : র‌্যাব হেফাজতে নওগাঁর চণ্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের অফিস সহকারী সুলতানা জেসমিনের (৪৫) মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা এক রিট শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের কাছে কয়েকটি বিষয় জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। এগুলো হলো- মামলা ছাড়া কারো অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারে কিনা? ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কাউকে গ্রেপ্তারের এখতিয়ার র‌্যাবের আছে কিনা? আটকের পর থেকে সুলতানা জেসমিনকে থানা বা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল কিনা এবং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত র‌্যাব আইনগত পদ্ধতিতে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কিনা। পরে আদালত আদেশ দেন, সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর কারণ সংক্রান্ত ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে হবে। আগামী ৫ এপ্রিলের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে এ সংক্রান্ত আইন, নথি ও সুলতানা জেসমিনের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। ওইদিন এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে।
র‌্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটনে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে গতকাল রিট করা হয়। সেই সঙ্গে ওই ঘটনায় মামলা না হওয়ার বিষয়টি আদালতে তুলে ধরেন রিটকারী আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। এই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের দ্বৈত বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার আদেশ পরবর্তী এ দিন ধার্য করেন। এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ (এস কে) মোরসেদ, ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম। রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক।
নওগাঁ শহর থেকে আটকের পর র‌্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর অভিযোগে গত সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। এরপর আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে খোঁজ নিয়ে জানাতে বলেন যে, এই মৃত্যুর ঘটনায় কোনো মামলা হয়েছে কিনা? ১৫ মিনিট পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতকে জানান যে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনারের সঙ্গে কথা বলে জেনেছেন তখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। এ সময় সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ আদালতকে বলেন, তারা (ভুক্তভোগীর পরিবার) কোনো মামলা করেননি। তখন হাইকোর্ট বলেন, কেন তারা মামলা করবেন? রাষ্ট্রের কি দায়িত্ব নেই? দেশজুড়ে এই ইস্যুটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। একপর্যায়ে আদালত ভুক্তভোগী নারীর সুরতহাল রিপোর্ট ও পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এবং ওই নারীকে গ্রেপ্তার ও হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদে কোন কোন কর্মকর্তা ছিলেন তাদের নাম-পরিচয় আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেন। এরপর আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য গতকাল মঙ্গলবার দিন ধার্য ছিল। সেইসঙ্গে আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিককে রিট আবেদন করার আদেশ দেন। সেই ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টে গতকাল ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। প্রতিবেদনে অস্বাভাবিক উচ্চ রক্তচাপকে মৃত্যুর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, দাপ্তরিক কাজে গত বুধবার রাজশাহী থেকে নওগাঁয় যাচ্ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক এনামুল হক। পথে দেখা পান র‌্যাবের একটি টহল দলের। তিনি নিজের একটি সমস্যার কথা টহল দলের ইনচার্জকে বলেন। সঙ্গে সঙ্গে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে সুলতানা জেসমিনকে আটক করে। র‌্যাবের হাতে আটকের পর অসুস্থ হয়ে পড়লে সুলতানা জেসমিনকে প্রথমে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার বিকালে রাজশাহী নগরের রাজপাড়া থানায় তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন এনামুল হক। সুলতানা জেসমিন তখন অচেতন অবস্থায় হাসপাতালের আইসিইউতে। পরদিন শুক্রবার তিনি মারা যান। জেসমিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনিসহ কয়েকজন এনামুল হকের পরিচয় ও পদবি ব্যবহার করে ভুয়া ফেসবুক আইডি খোলেন। এরপর চাকরি দেয়ার নামে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়