তুরাগ : মাদক কারবারির হাতে ছুরিকাহত এসআই

আগের সংবাদ

বাজারে ক্রেতার নাভিশ্বাস

পরের সংবাদ

ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্ব : অধিনায়ক এমবাপ্পের জোড়া গোলে বড় জয় ফ্রান্সের

প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : কাতার বিশ্বকাপের পরবর্তী সময়ে গতকাল প্রথমবারের মতো ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামে ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পের দল ফ্রান্স। বিশ্বকাপের পরপরই ফুটবল থেকে বিদায় নেন দলটির অধিনায়ক উগো লরিস। বছরের প্রথম ম্যাচে গতকাল রাতেই অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হয় তারকা এমবাপ্পের।
অধিনায়ক হিসেবে নিজের প্রথম ম্যাচেই দলকে দুটি গোল উপহার দেন এই পিএসজি তারকা। তার দুই গোলে এবং এক অ্যাসিস্টে ৪-০ গোলে ডাচদের পরাজিত করে ফরাসিরা।
ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বের ম্যাচটি ছিল দুই দলের জন্য নতুন শুরু। একদিকে ফ্রান্সে ছিল নতুন অধিনায়ক, অন্যদিকে কাতার বিশ্বকাপের পর ডাচদের কোচের দায়িত্বে আসেন রোনাল্ড কোমান। দুই দলের নতুন শুরুর দিনে প্রথম জয় পেল এমবাপ্পেরাই। কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে হ্যাটট্রিক গোল করা এমবাপ্পে অধিনায়কের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে বিশ্বকাপ পরবর্তী প্রথম ম্যাচে নামেন নতুন উদ্যমে।
ম্যাচের শুরু থেকেই নেদারল্যান্ডের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের চাপের মধ্যে রাখেন ফ্রান্সের আক্রমণভাগের খেলোয়াড়রা। এর সুবাদে মাত্র ২ মিনিটেই এমবাপ্পের সহায়তায় ম্যাচের প্রথম গোল করেন আতোয়ান গ্রিজমান। এই ফরাসি স্ট্রাইকারের গোলে প্রথম দিকেই লিড পায় ফ্রান্স। এর মাত্র ৬ মিনিট পরই ফ্রান্সের স্কোরবোর্ডে আরেকটি গোল যোগ করেন গায়ত উপমেকানো। তার গোলে ম্যাচের অষ্টম মিনিটেই ২-০ গোলে এগিয়ে যায় অধিনায়ক কিলিয়ান এমবাপ্পের দল। অধিনায়ক হিসেবে ফ্রান্সের জার্সি গায়ে ক্যারিয়ারের প্রথম গোল করতে এমবাপ্পেকেও বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ম্যাচের ২১তম মিনিটে অরেলিয়া চুয়ামেনির পাস থেকে বল পান এমবাপ্পে। এক মুহূর্তের জন্যও অপেক্ষা না করে শট নেন তিনি। তার দুর্দান্ত শটে বল জালে জড়ায়। প্রথমার্ধ শেষ করার আগেই ৩-০ গোলের লিডে বসে ফরাসিরা। প্রথমার্ধে তিনটি গোলের দেখা পেলেও বল বেশিক্ষণ পায়ে রাখতে পারেননি তারা। অন্যদিকে বল বেশিক্ষণ পায়ে রাখতে পারলেও নেদারল্যান্ডের আক্রমণ ফরাসিদের রক্ষণভাগ ভেদ করার জন্য যথেষ্ট ছিল না।
বিরতির পর ফের আক্রমণ শুরু করেন এমবাপ্পে-গ্রিজমানরা। দ্বিতীয়ার্ধও শুরু হয় ফ্রান্সের আক্রমণ দিয়েই। ৩ গোল হজম করে ডাচদের কোণঠাসা হয়ে পড়ার কথা থাকলেও তারা ম্যাচে ফেরার চেষ্টাটা ভালোভাবেই চালিয়ে যান। ম্যাচের ৫৮ মিনিটের সময় মেম্ফিস ডিপাই গোলরক্ষক বরাবর ফ্রি কিক নেন। এখান থেকে নেদারল্যান্ড কর্ণার পেলেও তা কাজে লাগেনি। উল্টো ডাচদের নেওয়া সেই কর্ণার থেকে বল কেড়ে নিয়ে পাল্টা আক্রমণে যায় ফরাসিরা। তবে সেই আক্রমণ থেকে কোনো গোল পায়নি এমবাপ্পের দল। ম্যাচের ৭৭তম মিনিটে গ্রিজমানকে তুলে নেন কোচ দিদিয়ের দেশম। এর পরের মিনিটেই সহজ একটি সুযোগ হাতছাড়া করেন অধিনায়ক। এমবাপ্পের শট দারুণ দক্ষতায় রুখে দেন ডাচ গোলরক্ষক। তবে বেশিক্ষণ আটকে রাকা যায়নি সদ্য দায়িত্বে আসা ফরাসি অধিনায়ককে। ম্যাচের ৮৮তম মিনিটে দুর্দান্ত এক গোল করেন তিনি। এই গোল হজম করার পর ম্যাচের শেষ মুহুর্তে একটি পেনাল্টি পেলেও কাজ লাগাতে পারেননি ডিপাই। শেষ পর্যন্ত ৪-০ গোলের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কাতার বিশ্বকাপের রানার্স আপ ফ্রান্স।
এ ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোল করে ফ্রান্সের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের তালিকায় ৫ম স্থান দখল করলেন এমবাপ্পে। সঙ্গে তিনি পেছনে ফেলেলেন করিম বেনজেমাকে। নিজেকে তিনি যেই গতিতে এগিয়ে নিচ্ছেন তাতে সামনে থাকা ৪ ফুটবলারকে পিছিয়ে শীর্ষে ওঠাটা এমবাপ্পের জন্য এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এ ম্যাচে মাঠে নামার আগ পর্যন্ত এমবাপ্পের গোল ছিল ৬৬ ম্যাচে ৩৬টি। অন্য দিকে বেনজেমার গোল ছিল ৯৭ ম্যাচে ৩৭টি। চুয়ামেনির থ্রæ পাস থেকে দারুণ ফিনিশিংয়ে নিজের প্রথম গোল করে করিম বেনজেমাকে ছোঁয়ে ফেলেন তিনি। এর পর থেকেই অপেক্ষা ছিল আরেকটি গোল করে গত বছরের ব্যালন ডি’অর বিজয়ীকে পেছনে ফেলার। শেষ পর্যন্ত তিনি পেয়েও যান তার কাক্সিক্ষত গোলটি।
ফ্রান্সের জার্সি গায়ে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় এমবাপ্পের সামনে এখন আছেন ৪ জন। ১২০ ম্যাচে ৫৩ গোল নিয়ে সবার ওপর আছেন অলিভিয়ের জিরু। দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন কিংবদন্তি থিয়েরি অঁরি। ১২৩ ম্যাচে সাবেক আর্সেনাল তারকা ফ্রান্সের হয়ে গোল করেছিলেন ৫১টি। পরের স্থানটি এমবাপ্পের সতীর্থ গ্রিজমানের যিনি ১১৮ ম্যাচে করেছেন ৪৩ গোল। চতুর্থ স্থানে থাকা মিশেল প্লাতিনির গোল ৭২ ম্যাচে ৪১টি। তবে মাত্র ২৪ পেরোনো এমবাপ্পে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন, তাতে বাকিদের পেছনে ফেলতে খুব বেশি হয়তো লাগবে না তার। শীর্ষ পাঁচে থাকা বাকিরা এমবাপ্পের বয়সে তার ধারেকাছেও ছিলেন না। এ বয়সে শীর্ষে থাকা জিরু গোলের খাতা খোলেননি। আর অঁরির গোল ছিল ১১টি, গ্রিজমানের ৫টি এবং প্লাতিনি ১১টি। আর এমবাপ্পের এখনই ৩৮টি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়