মুনতাসীর মামুন, গলাচিপা (পটুয়াখালী) থেকে : ১৯৭১ সালের ৮ মে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চিকনিকান্দি এলাকায় গণহত্যা সংগঠিত হয়। স্বাধীনতার অর্ধশত বছর পার হলেও সেখানে বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ হয়নি আজও। শহীদ পরিবারের দাবি প্রতি বছর ২৫ মার্চ উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক বধ্যভূমিতে ফুল দেয়া হয় এবং বধ্যভূমি সংরক্ষণ এবং স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের আশ্বাস দেয়া হয়। কিন্তু গত ৫২ বছরেও কোনো আশ্বাসই বাস্তবায়ন হয়নি।
একাত্তরের ওইদিন সকালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দুটি গানবোট নিয়ে চিকনিকান্দি বন্দরে আসে। স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি সেনারা নির্বিচারে গুলি বর্ষণে হত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে।
পরবর্তীতে স্থানীয়ভাবে এক জরিপে দেখা গেছে, ওইদিনের গণহত্যায় ৩৪ জন শহীদ হন। এদের বেশির ভাগই সুতাবারিয়া গ্রামের ঠাকুরবাড়িসংলগ্ন একটি জলাভূমিতে শহীদ হন। একাধিক শহীদ পরিবার ওই জায়গাটি সংরক্ষণ করেন। পরে কর্তৃপক্ষ পর্যায় থেকে জায়গাটি সংরক্ষণ ও স্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু ৫২ বছরেও সে উদ্যোগ সফল হয়নি। এ নিয়ে স্থানীয় শহীদ পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করা হয়।
শহীদ পরিবারের সন্তান নিঠুল গাঙ্গুলী জানান, সেদিন তার বাবা-মা এবং বোন শহীদ হয়েছেন। পারিবারিক উদ্যোগে তারা জায়গাটি সংরক্ষণ করেছেন। বহুবার ওই জায়গা পরিদর্শন করা হয়েছে কিন্তু আজও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়নি।
তিনি আরো জানান, প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসে স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনীতিকরা আসেন, ফুল দেন, শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের আশ্বাস দেন, চলে যান। তারপর থেকে তাদের কোনো খোঁজ মেলে না। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মু. শাহিন জানান, আপনারা হতাশ হবেন না, আমরা অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এটা করে দেব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল জানান, আমাগী ২৬ তারিখের পরে আমার প্রথম কর্মদিবসে আমি এটা দিয়ে কাজ শুরু করব। সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডাররা জানান, চিকনিকান্দিতে গণহত্যার সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য বিভিন্ন সময়ে একাধিক দপ্তরে দৌড়াদৌড়ি করছি কিন্তু কোনো সুফল পাইনি।