প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তারা : রাখী দাশ পুরকায়স্থ ছিলেন আপাদমস্তক দেশপ্রেমিক

আগের সংবাদ

বধ্যভূমি দেখার দায়িত্ব কার : সারাদেশে ৫ হাজারের বেশি বধ্যভূমি, ২২ বছরে ২০টি বধ্যভূমি সংরক্ষণ হয়েছে

পরের সংবাদ

শামসুল আরেফীনের ‘চট্টগ্রাম জেলার সাহিত্য ও সংস্কৃতি’

প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

তৃতীয় চোখ থেকে এবার অমর একুশের (২০২৩) বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে শামসুল আরেফীনের ‘চট্টগ্রাম জেলার সাহিত্য ও সংস্কৃতি’। ইতোমধ্যেই ঢাকা ও চট্টগ্রামের বইমেলায় তৃতীয় চোখ-এর স্টলে বইটি ইতিহাস ও সাহিত্যমোদীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। ‘চট্টগ্রাম জেলার সাহিত্য ও সংস্কৃতি’ তার ২১ সংখ্যক গ্রন্থ। এই গ্রন্থে ‘বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগে চট্টগ্রামের অবদান, চট্টগ্রামের লোকসাহিত্য-বিশেষ করে চট্টগ্রামের লোকসংগীত ও গীতিকা সম্পর্কে বর্ণনা, চট্টগ্রামের লোকসংগীতের শাখা চাটগাঁইয়া গান, মাইজভাণ্ডারি গান, কবিগান ও লোকনাট্য সম্পর্কে আলোচনা, চট্টগ্রামের আধুনিককালের সংগীত, ব্যান্ড সংগীত, নাট্য, কবিতা ও নৃত্যচর্চার ইতিহাস সংক্ষেপে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
এই গ্রন্থে তিনি পণ্ডিত বিহার ও চর্যাপদে চট্টগ্রামের সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চার আদি ইতিহাস বিদ্যমান থাকতে পারে উল্লেখ করেছেন। পণ্ডিত বিহার সম্পর্কে তিনি লিখেছেন : ‘খ্রিস্টীয় অষ্টম শতকে হরিকেল রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল পণ্ডিত বিহার নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঐতিহাসিক তারানাথ পণ্ডিত বিহার চট্টগ্রামে অর্থাৎ হরিকেলে অবস্থিত ছিল বলে বর্ণনা করেছেন। নালন্দা বিহারের মতো এই পণ্ডিত বিহারও ছিল তান্ত্রিক বৌদ্ধধর্মের শিক্ষা ও মতবাদ প্রচারের কেন্দ্র। মধ্য চট্টগ্রামে পটিয়া উপজেলার চক্রশালা ও আনোয়ারা উপজেলার দেয়াঙ পণ্ডিত বিহারের দাবিদার।
সীতাকুণ্ড উপজেলার চন্দ্রনাথ, চট্টগ্রাম মহানগরের জেনারেল হাসপাতাল সংলগ্ন পাহাড়ও পণ্ডিত বিহারের দাবিদার বটে। তবে ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে দেয়াঙ পাহাড়ের দক্ষিণাংশে অবস্থিত ঝিওরি ও হাজিগাঁও গ্রামের সীমান্ত থেকে পিতলের একটি বুদ্ধমূর্তিভাণ্ডার, যেখানে ৬৬টি বুদ্ধমূর্তি ছিল, পাওয়া যাওয়ার ফলে আমাদের মনে হয়, সেখানেই পণ্ডিত বিহার অবস্থিত ছিল’।
শামসুল আরেফীন মাঠপর্যায়ে লোকসাহিত্য ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষণা করছেন কয়েক বছর ধরে।
ইতোমধ্যে তার অনেক গবেষণাগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে হাওলাদার, বলাকা, তৃতীয় চোখ ও আপন আলো প্রকাশনী থেকে। তার কতিপয় উল্লেখযোগ্য গবেষণাগ্রন্থ হলো ‘আহমদ ছফার অন্দরমহল’, ‘আস্কর আলী পণ্ডিত : একটি বিলুপ্ত অধ্যায়’, ‘বাংলাদেশের লোককবি ও লোকসাহিত্য ১ম খণ্ড’, ‘বাংলাদেশের লোককবি ও লোকসাহিত্য ২য়-৪র্থ খণ্ড’, ‘আস্কর আলী পণ্ডিতের দুর্লভ পুঁথি জ্ঞান চৌতিসা ও পঞ্চসতী প্যারজান’; ‘বাংলাদেশের বিস্মৃতপ্রায় লোকসংগীত ১ম খণ্ড’, ‘আস্কর আলী পণ্ডিত : ৮৬ বছর পর’, ‘আঠারো শতকের কবি আলী রজা ওরফে কানুফকির’, ‘কবিয়ার মনিন্দ্র দাস ও তাঁর দুষ্প্রাপ্য রচনা’, ‘চট্টগ্রামের লোকগান : বিবিধ প্রবন্ধ’, ‘চট্টগ্রামের লোকসাহিত্য’ প্রভৃতি।
তার ‘চট্টগ্রাম জেলার সাহিত্য ও সংস্কৃতি’ বইতে তিনি উনিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে বর্তমান পর্যন্ত আধুনিক ধারার সাহিত্য রচনায় চট্টগ্রামে যেসব লেখক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন, রাখছেন তাদের মধ্য থেকে ১৮৬ জনের কর্মপরিচিতি, এছাড়া আরো অনেকের নাম এই গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চট্টগ্রামের বাইরে জন্ম, কিন্তু কর্মসূত্রে বা অন্য কোনো কারণে চট্টগ্রামে অবস্থান বা বসবাস করে সাহিত্যচর্র্চায় নিবেদিত হয়েছেন, এমন অনেকের কর্মপরিচিতি বা নামও এদের অন্তর্ভুক্ত’।
শামসুল আরেফীন বলেছেন- ‘অগোচরে, অনিচ্ছায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ লেখককে এই গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি’। গ্রন্থটির পরবর্তী সংস্করণে তিনি এদের নাম বা পরিচিতি অন্তর্ভুক্ত করবেন বলেও জানিয়েছেন। আমাদের বিশ্বাস, শামসুল আরেফীনের ‘চট্টগ্রাম জেলার সাহিত্য ও সংস্কৃতি’ গ্রন্থ বাংলা সাহিত্য ও ইতিহাস পাঠক সমাজে সমাদৃত হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়