প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তারা : রাখী দাশ পুরকায়স্থ ছিলেন আপাদমস্তক দেশপ্রেমিক

আগের সংবাদ

বধ্যভূমি দেখার দায়িত্ব কার : সারাদেশে ৫ হাজারের বেশি বধ্যভূমি, ২২ বছরে ২০টি বধ্যভূমি সংরক্ষণ হয়েছে

পরের সংবাদ

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন : বিদেশি নয় ব্যাংকের আমানত ৭৩ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা

প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : দেশে বেশকিছু ব্যাংকের ঋণ অনিয়ম ও জালিয়াতির তথ্য গণমাধ্যমে আসার পর সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর আমানতের প্রবৃদ্ধি ব্যাপক কমেছে। অন্যদিকে দেশে অবস্থানরত বিদেশি ব্যাংকগুলোর ২০২২-এর ডিসেম্বর প্রান্তিকে আমানত বেড়েছে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রকাশিত ত্রৈমাসিক তফসিলি ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে থাকা বিদেশি ৯টি ব্যাংকের ২০২২-এর ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। যেখানে আগের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে আমানতের পরিমাণ ছিল ৬৮ হাজার ১৪৩ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া ২০২১-এর ডিসেম্বর প্রান্তিকের সঙ্গে তুলনা করলে ২০২২-এর ডিসেম্বরে আমানতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ হাজার ১১৮ কোটি টাকা বা ১৪ শতাংশ। ২০২১-এর ডিসেম্বরে বিদেশি ব্যাংকগুলোর আমানতের পরিমাণ ছিল ৬৪ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদেশি ব্যাংকগুলোর চেয়ে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকগুলো আমানতের রেট বেশি দিচ্ছে। তারপরও দেশের ব্যাংকগুলোর তুলনায় বিদেশি ব্যাংকগুলোর আমানত যে হারে বাড়ছে তাতে বোঝা যাচ্ছে দেশের ব্যাংকগুলোতে বিনিয়োগে অনেক গ্রাহকের কিছুটা আস্থার সংকট হয়েছে। তারা বলেন, বেশকিছু রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকের ঋণ অনিয়মের তথ্য গণমাধ্যমে উঠে এসেছে, যার কারণে অধিক নিরাপত্তা ভেবে বিদেশি ব্যাংকগুলোতে আমানত রাখছে মানুষ।
গত নভেম্বরে একাধিক ইসলামিক ব্যাংকগুলোর ঋণ জালিয়াতির তথ্য গণমাধ্যমে উঠে আসার পর ওই ব্যাংকগুলোতে থাকা গ্রাহকের আমানত ব্যাপকভাবে কমেছে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, গত জুলাই মাস থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকের বাইরে গ্রাহকের হাতে টাকার পরিমাণ বেড়েছে। ত্রৈমাসিক তফসিলি ব্যাংকের পরিসংখ্যান প্রতিবেদন থেকে দেখা গেছে, ডিসেম্বর প্রান্তিকে বেসরকারি ব্যাংকগুলো (ইসলামী ব্যাংকসহ) আমানতের প্রবৃদ্ধি ব্যাপক কমেছে।
২০২২-এর জুন শেষে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর আমানতের পরিমাণ ছিল ১০ লাখ ৫৯ হাজার কোটি টাকা। ওই সময় আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে আগের মার্চ প্রান্তিকের তুলনায় ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। ২০২২-এর সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে ০.৭৪ শতাংশ। এছাড়া ২০২২-এর ডিসেম্বর প্রান্তিকে এর প্রবৃদ্ধি হয়েছে ০.২২ শতাংশ। অর্থাৎ ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর আমানত দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৬৯ হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মনিটারি সার্ভের রিপোর্ট বলছে, ২০২২-এর জুনে ব্যাংকগুলোর বাইরে মানুষের হাতে টাকার পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩-এর জানুয়ারিতে মানুষের হাতে টাকার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৬২ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ সাত মাসে মানুষ ব্যাংক থেকে টাকা তুলে হাতে রেখেছে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা আরো বলেন, সাধারণত ইকোনমি যখন স্বাভাবিক থাকে মানুষ ঝুঁঁকিপূর্ণ খাতে বিনিয়োগ করে বেশি। যখন ইকোনমি নানা কারণে অস্বাভাবিক হয়ে যায় তখন মানুষ যেখানে নিরাপত্তা বেশি সেখানে মুনাফা কম হলেও বিনিয়োগ বেশি করে।
তারা আরো বলেন, দেশের ভালো কিছু ব্যাংকের ঋণ অনিয়মের তথ্য বাজারে ছড়িয়ে পড়ায় গ্রাহকের ব্যাপক আমানত তুলে নিয়েছে। এই টাকা তো তারা বেশি দিন হাতে রাখতে পারে না, তাই ভিন্ন উপায়ে বিনিয়োগ করেছে। বিদেশি ব্যাংকগুলোর অবস্থা ভালো থাকায় এখানে নতুন করে ডিপোজিট বেশি রাখছে গ্রাহক।
ত্রৈমাসিক তফসিলি ব্যাংকের পরিসংখ্যান প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ইসলামিক ব্যাংকগুলোর আমানত ব্যাপক কমেছে। ২০২২-এর জুন প্রান্তিক শেষে ইসলামিক ব্যাংকগুলোর আমানত ছিল ৩ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা। ওই সময়ে আমানতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
যদিও গত সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে আমানত প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। একই সঙ্গে ২০২২-এর ডিসেম্বর প্রান্তিকে আমানতের প্রবৃদ্ধি নেগেটিভ মাইনাস ২ দশমিক ৯০ শতাংশ হয়েছে। ডিসেম্বর শেষে তাদের আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়