ভারত মিয়ানমার থাইল্যান্ড : কানেক্টিভিটি প্রকল্পে যুক্ত হতে আগ্রহী বাংলাদেশ

আগের সংবাদ

শুভ জন্মদিন পিতা

পরের সংবাদ

হলান্ডের রেকর্ড বন্যায় ভাসল লাইপজিগ

প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গতকাল শেষ ষোলোর ফিরতি লেগে লাইপজিগের মুখোমুখি হয় ম্যানচেস্টার সিটি। লাইপজিগের জালে একাই ৫টি গোল করেন দলটির তারকা আর্লিং হলান্ড। চলতি মৌসুমের শুরু থেকেই হলান্ড নিজের প্রতিভা দেখিয়ে ফুটবল বিশ্বের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে জায়গা করে নিয়েছেন। এবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউটে পাঁচবার লক্ষ্যভেদ করে নাড়িয়ে দিলেন রেকর্ড বইয়ের অনেকগুলো পাতা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কয়েকটি রেকর্ডে এই ফুটবলার বিশ্বকাপজয়ী লিওনেল মেসির একমাত্র সঙ্গী হিসেবেও জায়গা করে নিয়েছেন।
লাইপজিগের বিপক্ষে খেলতে নেমে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে কমবয়সি খেলোয়াড় হিসেবে ৩০ গোলের মাইলফলক ছোঁয়ার রেকর্ড গড়েন ২২ বছর ২৩৬ দিন বয়সি আর্লিং হলান্ড। তাছাড়া এই মাইলফলক স্পর্শ করা খেলোয়াড়দের মধ্যেও তিনি সবচেয়ে দ্রুততম। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মাত্র ২৫ ম্যাচ খেলে তিনি নামের পাশে গোলসংখ্যাটা ৩৩ পর্যন্ত ঠেকালেন। একদিকে দ্রুততার রেকর্ড অন্যদিকে বয়সের। সবচেয়ে কমবয়সি খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৩০ গোলের রেকর্ডটা ছিল ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পের দখলে। ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ জয় করা এই তারকা ২২ বছর ৩৫২ দিনে এই মাইলফলক পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছিলেন। আর দ্রুদতার দিক থেকে এই নরওয়েজিয়ান তারকা ভাঙ্গরেন ম্যানইউ এবং রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক তারকা ডাচ স্ট্রাইকার রুদ ফন নিস্টলরয়ের রেকড। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৩০টি গোলের দেখা পেতে নিষ্ঠলরয় মাঠে নেমেছিলেন ৩০ টি ম্যাচে। গতকাল তার চেয়ে ৫ ম্যাচ কম খেলেই ৩০তম গোলের দেখা পেলেন হলান্ড। ২৫ ম্যাচে ৩৩টি গোল করা হলান্ড এক ম্যাচ দিয়েই পেছনে ফেলেন আর্জেন্টাই মহাতারকা লিওনেল মেসি, কিলিয়ান এমবাপ্পে, করিম বেনজেমা ও নেইমার জুনিয়রদের। ৩৩ গোল পর্যন্ত পৌঁছাতে লিওনেল মেসির লাগে ৫২ ম্যাচ, রবার্ট লেভানডফস্কি ও কিলিয়ান এমবাপ্পের লাগে ৫৩ ম্যাচ, করিম বেনজেমার ৫৪ ম্যাচ ও নেইমারের লাগে ৫৫ ম্যাচ।
হলান্ড শুধুই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রেকর্ড বুকই ছিন্নভিন্ন করেননি, নিজের ক্লাবের ৯৪ বছর আগের এক রেকর্ডেও পরিবর্তন এনেছেন তিনি। ১৯২৮-২৯ মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটির জার্সি গায়ে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ ৩৮ গোল করার রেকর্ড গড়েছিলেন টমি জনস্টোন। দীর্ঘ ৯৪ বছর যাবৎ তার এই রেকর্ডে কেই হাত দিতে পারেননি। অবশেষে হলান্ড গতকাল নিজের শেষ গোলটি করে পেছনে ফেললেন জনস্টনকে।
প্রথমার্ধে হ্যাটট্রিক করার পর দ্বিতীয়ার্ধে আরো ২টি গোল করার রেকর্ড বুকে আগে শুধু মেসি এবং লইজ আদ্রিয়ানোর নাম ছিল। এবার তাদের সঙ্গে নাম লিখালেন হলান্ডও। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এর আগে মেসি ২০১২ সালে বেয়ার লেভার কুসেনের বিপক্ষে ৫ গোলেল দেখা পেয়েছিলেন। ম্যাচটাইমের ভিত্তিতে এক ম্যাচে দ্রুততম ৫ গোলের রেকর্ডও দখল করে নেন হলান্ড। তিনি মাত্র ৫৭ মিনিটের মধ্যেই রেকর্ড পরিমাণ গোল করেন। এই রেকর্ডের তালিকায় বর্তমানে দ্রুততার দিক থেকে প্রথমে আছেন তিনি। ৮২ মিনিটের মধ্যে ৫ গোল করে দুইয়ে আছেন আদ্রিয়ানো এবং ৮৪ মিনিটে ৫ গোল করে তিনে অবস্থান করছেন মেসি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউটেও এই রেকর্ড বিরল। এর আগে কেবল মেসি ২০১০ সালে এই রেকর্ড গড়েছিলেন। এবার নকআউটে দলের স্কোরবোর্ডে ৫ গোল যোগ করে মেসির পাশে নাম বসালেন হলান্ড।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউটে হলান্ডের পাঁচ গোলসহ ৭-০ গোলের বড় ব্যবধানে জয় পেয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটি। ঘরের মাঠে লাইপজিগকে পেয়ে ম্যাচের শুরু থেকেই দখলদারিত্ব দেখায় পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা। বল দখল রাখার সঙ্গে একের পর এক আক্রমণ চালাতে থাকে হলান্ডরা। সিটির আক্রমণের মুখে খেই হারিয়ে ডি বক্সের ভেতর বলে হাত লাগিয়ে স্বাগতিকদের পেনাল্টি উপহার দেন হেনরিখস। স্পট কিক থেকে হলান্ড ম্যাচের এবং নিজের প্রথম গোলের দেখা পান ম্যাচের ২২তম মিনিটে। এগিয়ে যাওয়ার পর সাধারণত রক্ষণাত্মক খেলার দিকে ফিরে যান ফুটবলাররা। তবে গতকাল রাতের ম্যাচে দেখা যায় অন্য দৃশ্য। প্রথম গোলের দুই মিনিট পরই আরেকটি আক্রমণ থেকে সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেন আর্লিং হলান্ড। লাইপজিগ এক গোল শোধ করার চেষ্টার আগেই দ্বিতীয় গোল হজম করে পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় মাত্র ২৪ মিনিটেই। এরপর তারা শুরু করে সমতা ফেরানোর লড়াই। আরেকদিকে সিটির ফরোয়ার্ডরাও আক্রমণ চালিয়ে যান জয় নিশ্চিত করার জন্য আরেকটি গোলের আশায়। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আক্রমণের সুফল পায় ম্যানসিটি। এবারো গোলটি আসে হলান্ডের পা থেকেই। এর মধ্য দিয়ে প্রথমার্ধেই হ্যাটট্রিক পূরণ হয় তার।
বিরতির পর মাঠে নেমে ফের লাইপজিগ কোণঠাসা হয়ে পড়ে ম্যানসিটির আক্রমণে। দ্বিতীয়ার্ধের চতুর্থ মিনিটে তারা হজম করে ম্যাচের চতুর্থ গোল। জয় নিশ্চিত করার এই গোলটি জ্যাক গ্রিলিশের সহায়তায় করেন ইকেই গুন্দোয়ান। এর চার মিনিট পর এক হালি পূর্ণ করেন হলান্ড। তার কয়েকটি রেকর্ড ভাঙা পঞ্চম গোলটি আসে ম্যাচের ৫৭ মিনিটে। ৬৩ মিনিটের সময় জুলিয়ান আলভারেজকে নামিয়ে গোলমেশিন হলান্ডকে তুলে নেন গার্দিওলা। পুরো ম্যাচ খেলতে পারলে হয়তো আরো কয়েকটি রেকর্ড গড়তে বা ভাঙতে পারতেন এই তারকা ফুটবলার। লাইপজিগের কফিনে যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে শেষ পেরেকটা ঠুকেন ডি ব্রুইন। এর মধ্য দিয়ে ৭-০ গোলের লজ্জাজনক হার নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নেয় লাইপজিগ।

আর্লিং হলান্ডের যত রেকর্ড
হ সবচেয়ে কম বয়সে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৩০ গোল
হ এক মৌসুমে ম্যানসিটির জার্সি গায়ে সর্বোচ্চ ৩৯ গোল
হ ইউরোপের সেরা পাঁচ লিগে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ অ্যাসিস্ট
হ তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এক ম্যাচে
৫ গোল
হ দ্রুততম সময়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৩০ গোল
হ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে দ্বিতীয় ফুটবলার হিসেবে প্রথমার্ধে একাধিক হ্যাটট্রিক
হ দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দুই ক্লাবের হয়ে ন্যূনতম ১০ গোলের
কীর্তি

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়