মাদকবিরোধী অভিযান : রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৭০

আগের সংবাদ

রাজশাহীর জনসভায় শেখ হাসিনা : আ.লীগ কখনো পালায় না

পরের সংবাদ

সীতাকুণ্ডে চাঁদা না দেয়ায় অটোচালক খুন, গ্রেপ্তার ৪

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : সিএনজি অটোরিকশা চালাতে ‘লাইনের’ টাকা (চাঁদা) দিতে রাজি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে লাইনম্যানের নেতৃত্বে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে সীতাকুণ্ডের সিএনজি অটোচালক একরাম হোসেনকে (২০)। হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী লাইনম্যান নূর আহম্মদসহ চার সিএনজি চালককে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে এনে এসব তথ্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- লাইনম্যান নুর আহাম্মদ (৪০), মো. জাহেদ হোসেন (২০), মো. মোস্তাফিজুর রহমান সাকিব (২০) ও মো. ইসমাইল হোসেন রোনা (২৪)। তাদের বাড়ি সীতাকুণ্ড উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। তারা চারজনই সিএনজি অটোরিকশা চালানোর পাশাপাশি ‘দক্ষিণ বাইপাস সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতি’র সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
পিবিআই কর্মকর্তারা জানান, সীতাকুণ্ড দক্ষিণ বাইপাস রোড লাইনে অটোরিকশা চালাতে হলে প্রত্যেক চালককে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। এই লাইনে সিএনজি চালাতেন নিহত একরাম হোসেন। একরামকে চাঁদা দিতে চাপ দেন আসামি নুর আহাম্মদ। কিন্তু একরাম চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে একরামকে খুন করার পরিকল্পনা করেন নুর আহাম্মদ। গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড বাজারে বৈঠকে খুনের পরিকল্পনা করেন তারা। ওই রাতে একরামের সিএনজি অটোরিকশাকে অনুসরণ করতে করতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মধ্যম মহাদেবপুর এলাকায় ইপসা অফিসের সামনে পৌঁছলে গতিরোধ করেন তারা। সেখানে সবাই একরামকে উপর্যুপরি মারধর ও ছুরিকাঘাত করেন। একপর্যায়ে লোকজন বেড়ে গেলে একে একে সবাই অটোরিকশা ও বাসযোগে সটকে পড়েন। তবে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে অবস্থা বেগতিক দেখে উদ্ধারের নাটক সাজিয়ে একরামকে হাসপাতালে নিয়ে যায় গ্রেপ্তার জাহেদ নামে এক সিএনজি চালক। হাসপাতালে নেয়ার পথেই একরাম হোসেনের মৃত্যু হয়। একরামের হাতে, কাঁধের ওপরে ও পেটের ডান পাশে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। এ ঘটনায় নিহতের ভাই নুরুল হুদা বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। থানা পুলিশের পাশাপাশি মামলাটির ছায়াতদন্ত শুরু করে পিবিআই। একপর্যায়ে ২৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। পরদিন ২৬ জানুয়ারি তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে শুনানি শেষে চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ খানের আদালত আসামি নূর আহাম্মদ ও জাহেদ হোসেনের চার দিন এবং সাকিব ও রানার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে আনার পর আসামিদের ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদেই এসব তথ্য বেরিয়ে আসে।
পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসপি) নাজমুল হাসান বলেন, বেশ কয়েকজন অটোরিকশা চালকের সঙ্গে কথা বলে আসামিদের সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যায়। পরে আরও কিছু সিএনজি অটোরিকশা চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকাণ্ডের কারণ কিছুটা পরিষ্কার হয়। একপর্যায়ে দুজনকে শনাক্ত করতে সক্ষম হই আমরা। তাদের দেয়া তথ্যে বাকি দুজনকেও আমরা গ্রেপ্তার করি। এরপর রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে নেয়। গতকাল শনিবার সকালে তাদের সীতাকুণ্ডে নিয়ে গিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। রিমান্ডে থাকা চারজনের মধ্যে দুজনকে রোববার এবং বাকি দুজনকে সোমবার আদালতে পাঠানো হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়