প্রণয় ভার্মাকে সংবর্ধনা : ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কূটচালে নষ্ট হওয়ার নয়’

আগের সংবাদ

গ্যাস সংকট কাটছে না সহসা : দৈনিক চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট > সরবরাহ ২৬৬ কোটি ঘনফুট > দুর্ভোগে রাজধানীর বাসিন্দারা

পরের সংবাদ

রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সংসদে আলোচনা : ‘আমাদের কোনো বিদেশি প্রভু নেই, আমাদের প্রভু জনগণ’

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের পেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, আমাদের রাজনীতি, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কিছু কিছু কূটনীতিক কারো কারো বাড়ি বাড়ি গিয়ে হাজির হচ্ছেন, এ কি আশ্চর্য! তিনি বলেন, আমাদের রাজনীতিতে কোনো বিদেশি কূটনীতিকের হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। এটা নির্ধারণ করবে আমাদের জনগণ। আমাদের কোনো বিদেশি প্রভু নেই, আমাদের প্রভু হলো জনগণ। আমরা শুনেছি আমেরিকান নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ, কিন্তু আমেরিকার ইলেকশন নিয়ে কি আমরা কথা বলেছি, মালয়েশিয়ার ভোট নিয়ে আমরা কি কোনো কথা বলেছি। যদিও এসব দেশে ভোট কারচুপি হয়েছে বলে খবরে প্রকাশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবে আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
শেখ সেলিম বলেন, তাদের প্রেসক্রিপশন কেয়ারটেকার সরকার, সর্বদলীয় সরকার ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে, এসব সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন করতে হবে। এসবের কোনো বিধান আমাদের সংবিধানে নেই। আদালত স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে, কোনো অসাংবিধানিক সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারবে না। নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হলে জনগণই দেখবে, অন্য কারো দেখার দরকার নেই।
তিনি বলেন, ১৯৭১-এ তো অনেকে আমাদের স্বাধীনতার বিপক্ষে গিয়েছিলেন, অস্ত্র, টাকা দিয়ে সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতা রুখতে পারেননি। এবারেও পারবেন না। আমাদের নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে, কে এলো, কে এলো না তা আমাদের দেখার বিষয় না। বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, এবারে যদি তারা নির্বাচনে না আসে তাহলে তাদের অস্তিত্ব থাকবে না।
তিনি বলেন, এই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়া ছিল খুনি। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে ছিল মোশতাক-জিয়ার হাত। জেল হত্যার পেছনে জিয়ার হাত ছিল। সে ক্ষমতা গ্রহণ করে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছিল। এই জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের জেল থেকে মুক্ত করে, নিজেকে রক্ষার জন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে। খুনিদের বিচার বন্ধ করে দেয়, পুরষ্কৃত করে। সেই বিএনপির মুখে গণতন্ত্র বা মানবাধিকারের কথা মানায় না।
শেখ সেলিম বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পরে বঙ্গবন্ধু হত্যা, জেলহত্যা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছেন। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা পরিচালিত করছেন। বিশ্বের কোথাও জঙ্গি-সন্ত্রাসী টিকে থাকতে পারে না। ইতিহাস তা বলে গেছে। আমাদের বাংলাদেশেও বঙ্গবন্ধু যখন দেশ গড়তে যাবেন তখন উগ্র সাম্পদায়িক শক্তি, সন্ত্রাসী গ্রুপ কিনা করেছে? বাংলা ভাই আব্দুর রহমানসহ জঙ্গি নেতাদের বিএনপি মদত দিয়েছিল। এদের জনগণ কখনো মেনে নিতে পারে না। এদের পরিণতি হবে মুসলিম লীগের মতো।
বিএনপির ১০ দফা অস্বাভাবিক সরকার আনার ষড়যন্ত্র : ইনু
বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রস্তাব দেশকে সংবিধানের বাইরে ঠেলে দেয়ার প্রস্তাব ও জঙ্গি সরকার কায়েমের চক্রান্ত বলে মন্তব্য করেছেন জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, বিএনপির ১০ দফা অস্বাভাবিক সরকার আনার ষড়যন্ত্র।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে ইনু এসব কথা বলেন। এ সময় ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
হাসানুল হক ?ইনু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দেশকে এগিয়ে নিয়ে রাতদিন কাজ করছেন তখন বিএনপি-জামায়াতসহ দেশের কিছু রাজনৈতিক দল দেশকে এগিয়ে নেয়ার পথে কাঁটা ছড়াচ্ছে। বিএনপি যে ১০ দফা, ২৭ দফা দিয়েছে সেই দফার মধ্যে লুকিয়ে আছে গভীর ষড়যন্ত্র। বিএনপির ১০ ও ২৭ দফা হচ্ছে অস্বাভাবিক সরকার আনা, যথা সময়ে নির্বাচন বন্ধ করার, ৭১ ও ৭৫ এর খুনি, রাজাকার, জঙ্গি, জামায়াতের পক্ষই অবলম্বন। সাজাপ্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ, যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গি, খুনিদের, সন্ত্রাসীদের মুক্ত করার। দেশে কোনো আলেম বা ধর্ম প্রচারক ধর্মপ্রচারের জন্য কারাগারে নেই। যারা আছে তারা কেউ আলেম নন, সবাই হত্যা, খুন,নারী ধর্ষণকারী, সন্ত্রাসে দোষী, অপরাধী। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রস্তাব হচ্ছে দেশকে সংবিধানের বাইরে ঠেলে দেয়ার প্রস্তাব, জঙ্গি সরকার কায়েমের চক্রান্ত।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলার প্রসঙ্গ টেনে ইনু বলেন, অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলার জন্য বাজেটের ভেতর থেকেই স্বল্প সময়ের জন্য কিছু অদল-বদল করে অন্তত ৬ মাসের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক প্যাকেজ করা দরকার। নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে দৃশ্যমান শাস্তি দিয়ে সিন্ডিকেট ধ্বংস করতে হবে। বিদ্যুৎ ও গ্যাস, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি আপাতত বাতিল করেন। আর্থিক ও ব্যাংকিং খাতের লুটপাট এবং বাজার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য ধ্বংস করতে হবে।
ইনু আরো বলেন, উন্নয়নের ট্রেনে অনেক ঘর কাটা ইদুর ঢুকেছে। প্রশাসনের ভেতর নব্য রাজাকাররা মাকড়সার জাল বুনছে। সরকারের ভেতর দুই একটা খন্দকার মোশতাকের ভূত ঢোকার চেষ্টা করছে। প্রধানমন্ত্রী সাবধান, কাণ্ডারি হুঁশিয়ার। ’৭১-এর মীমাংসিত মৌলিক বিষয়ে বিতর্ক রেখে শুধু একটি নির্বাচন সংঘাতের সমাধান দেবে না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সবার ঘনিষ্ঠ ঐক্য দরকার।
সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, সা¤্রাজ্যবাদী ও অন্যান্য শক্তিগুলো আমাদের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা নিয়ে খেলছে। ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বিশ্বের কোনো শক্তি আমাদের স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে নিতে পারবে না। তিনি বলেন, অবিলম্বে কমিশন গঠন করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের মরণোত্তোর বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিএনপি দেশের স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করে না, ফখরুল সাহেব বলেছেন, এর চেয়ে পাকিস্তানে আমরা ভালো ছিলাম। গয়েশ্বর বলেছেন, বাই চান্স দেশের স্বাধীনতা এসেছে। বিএনপি দুর্নীতিতে ৫ বার চ্যাম্পিয়ান হয়েছিল, তারা আবার দুর্নীতির কথা বলে। যারা জয় বাংলা বলে না, জাতির পিতাকে স্বীকার করে না তারা দেশের স্বাধীনতা মানে না।
এছাড়া রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আরো বক্তব্য রাখেন এমপি মাহবুব আরা গিনি, বজলুল হক হারুন, সুলতানা নাদিরা প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়